Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Pregnant woman

সন্তানের সামনে স্ত্রীকে খুন

গোপীবল্লভপুর থানার সারিয়া অঞ্চলের শুকা-আমড়াশোল গ্রামের ঘটনাটি বুধবার গভীর রাতে।

ধৃত দেবব্রত দে। নিজস্ব চিত্র

ধৃত দেবব্রত দে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৪৩
Share: Save:

জঙ্গলমহলের দুই প্রান্তে দুই পৃথক ঘটনা। দু’টিতেই নাবালক সন্তানের সামনে মহিলাকে কুপিয়ে খুনে র অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থল ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর ও পাটাশিমূল।

গোপীবল্লভপুর থানার সারিয়া অঞ্চলের শুকা-আমড়াশোল গ্রামের ঘটনাটি বুধবার গভীর রাতে। সেখানে নাবালক ছেলের সামনে কাটারি দিয়ে কুপিয়ে স্ত্রী পিয়ালী দে (২৯)-কে খুনের অভিযোগ ওঠে বছর ছৌত্রিশের দেবব্রত দে-র বিরুদ্ধে। মহিলাকে বাঁচাতে গিয়ে কাটারির কোপে জখম হন দেবব্রতর মা-ও। বৃহস্পতিবার দেবব্রতকে ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হলে ১০ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়। আর মঙ্গলবার সকালে ঝাড়গ্রাম থানার পাটাশিমূল গ্রামে নমিতা মাহাতোকে (৩৬) কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর স্বামী বলরাম মাহাতো।

বারো বছর আগে ঝাড়খণ্ডের বড়শোল থানার মানসমুড়িয়া-শালধোয়া গ্রামের পিয়ালির সঙ্গে দেবব্রতের সম্বন্ধ করে বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের সময় দেবব্রত মুদির দোকান চালাতেন। বছর আটেক আগে অর্থলগ্নি সংস্থায় বহু টাকা রেখে সর্বস্বান্ত হন দেবব্রত। ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। দেবব্রতের বাবা কেন্দ্রীয় বাহিনী সিআইএসএফের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ছিলেন। মায়ের পারিবারিক পেনশনের টাকায় সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতেন পিয়ালি। কিন্তু দেবব্রত কাজকর্ম করতেন না। পিয়ালির বাবা বিনয় ভোল বলেন, ‘‘প্রায়ই রাগের মাথায় মেয়েকে মারধর করত জামাই। নিজের মায়ের গায়েও হাত তুলত।’’ দেবব্রতের জেঠতুতো দাদা হৃষিকেশ দে-ও বলেন, ‘‘দেবব্রত স্ত্রী ও মায়ের উপরে অত্যাচার করত। ওই পিয়ালিকে খুন করেছে।’’

দেবব্রত ও পিয়ালির ১০ ও ৬ বছরের দুই ছেলে রয়েছে। গত ২৮ জানুয়ারি দুই ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়ি গিয়েছিলেন পিয়ালি। ফেরেন গত শনিবার। পড়শিরা জানাচ্ছেন, পিয়ালি ফেরার পরে অশান্তি শুরু হয়।

বুধবার গভীর রাতে দেবব্রতর মা তুলাবালার চিৎকারে ছুটে পড়শিরা দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে পিয়ালির দেহ। জখম তুলাবালা কাতরাচ্ছেন। ১০ বছরের দেবদীপ ও ৬ বছরের দীপ মায়ের সামনে বসে কাঁদছে। পুলিশ রাতেই দেহ ময়না তদন্তে পাঠায়। ঘটনার পরেই দেবব্রত কাটারি সমেত চম্পট দেন। তুলাবালাকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। কাটারির কোপে তাঁর দুই হাত জখম হয়েছে। পিয়ালির বাবা গোপীবল্লভপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার ভোরে দেবব্রতকে ধরে পুলিশ। পুলিশ জানায়, দেবব্রতকে জেরা করে কাটারি উদ্ধারের চেষ্টা হচ্ছে। কী কারণে এই খুন, তা-ও জানার চেষ্টা চলছে।

অন্য দিকে, প্রায় সতেরো বছরের দাম্পত্য বলরাম ও নমিতার। এ দিন সকালে ঘুমন্ত নমিতাকে কুড়ুল দিয়ে কোপান বলরাম। ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শী নমিতার মেয়ে বছর পনেরোর ধৃতিকণা মাহাতোর অভিযোগের ভিত্তিতেই বুধবার বলরামকে ধরে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম আদালতে বলরামকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে পাঠায়। স্থানীয় সূত্রের খবর, অসুস্থ বলরাম স্ত্রীকে সন্দেহ করতেন। পুলিশের অনুমান, অবসাদগ্রস্ত হয়েই ঘুমন্ত স্ত্রীকে খুন করেন বলরাম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pregnant woman Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE