Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

আরও তিন সপ্তাহ স্বস্তি প্রেমচাঁদের

বুধবার মামলার শুনানিতে সরকারি আইনজীবী শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায় জানান, ৮ নভেম্বর ওই মামলার তদন্তভার সিআইডির হাতে দেওয়া হয়েছে।

প্রেমচাদ ঝাঁ। নিজস্ব চিত্র

প্রেমচাদ ঝাঁ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর ও কলকাতা: শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:০০
Share: Save:

আদালত গ্রেফতার না করার মেয়াদ তিন সপ্তাহ বাড়লেও ‘অস্বস্তি’ কাটছে না খড়্গপুর বিধানসভা উপ-নির্বাচনের বিজেপি প্রার্থী প্রেমচাঁদ ঝায়ের।

জমি সংক্রান্ত প্রতারণা মামলায় অভিযুক্ত প্রেমচাঁদ কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেছিলেন। গত ৪ নভেম্বর তাঁর আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি মনোজিৎ মণ্ডলের ডিভিশন রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিল, ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত গ্রেফতার করা যাবে না প্রেমচাঁদকে। বুধবার মামলার শুনানিতে সরকারি আইনজীবী শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায় জানান, ৮ নভেম্বর ওই মামলার তদন্তভার সিআইডির হাতে দেওয়া হয়েছে। তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট পেতে কিছুটা সময় লাগবে। তা জেনে ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, গ্রেফতার না করার মেয়াদ আরও তিন সপ্তাহ বাড়ানো হল। আদালত জানিয়েছে, এই আগাম জামিন মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২০ নভেম্বর।

জেরে নির্বাচন পর্যন্ত প্রেমচাঁদকে নির্বাচন পর্যন্ত গ্রেফতার করা যাবে না প্রেমচাঁদকে। গ্রেফতার না করার মেয়াদ বাড়লেও ‘অস্বস্তি’ কাটছে না বিজেপির প্রার্থীর। গেরুয়া শিবিরের অন্দরের জল্পনা চলছে, ওই মামলায় সিআইডির জেরার মুখে পড়তে হতে পারে প্রেমচাঁদকে। জল্পনার কারণ, সিআইডির তৎপরতা। মঙ্গলবার বিকেলেই খড়্গপুর শহরে এসে ঘুরে গিয়েছে সিআইডির একটি দল। সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মামলার তদন্তকারী অফিসার সুজিত সামন্তের নেতৃত্বে দু’জন সিআইডি অফিসার আসেন শহরে। প্রথমে তাঁরা যান খড়্গপুর টাউন থানায়। তলঝুলি মৌজায় যে জমি ঘিরে অভিযোগ সেটিও দেখতে যান তাঁরা। সেখানে স্থানীয় কয়েকজন সাক্ষীর সঙ্গে কথাও বলেন। কথা হয় মামলাকারী সুকান্ত বেরার সঙ্গে। সুকান্ত বলেন, “আমি এই মামলার সিআইডি তদন্তের দাবি করেছিলাম। সিআইডির দু’জন অফিসার এসেছিলেন। আমার কাছে যা জানতে চেয়েছেন তা জানিয়েছি। দেখা যাক কী হয়!” যদিও বিষয়টি নিয়ে সিআইডি-র কর্তাদের কেউ মুখ খুলতে চাননি। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজি সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “প্রেমচাঁদ ঝা-র বিরুদ্ধে ওই মামলার তদন্তভার সিআইডি হাতে নিয়েছে বলে জেনেছি। এর বাইরে কিছু জানি না।”

গত সেপ্টেম্বরে জমি হস্তান্তর সংক্রান্ত জামিন অযোগ্য প্রতারণা মামলায় জড়িয়ে যান প্রেমচাঁদ। ২নভেম্বর বিজেপি তাঁকেই প্রার্থী হিসাবে ঘোষণার পরে ওই মামলায় গ্রেফতারের আশঙ্কায় প্রেমচাঁদ আত্মগোপন করেন। প্রচারে পিছিয়ে যান বিজেপি প্রার্থী। এর পরে অন্তর্বর্তী জামিন পেলেও সিআইডি-র তদন্তে অস্বস্তি বাড়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। রাজনৈতিক মহলের অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন ভারতী ঘোষের কথা। লোকসভা ভোটে ঘাটাল কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন ভারতী। সে সময় বারবার জেরার মুখে পড়ে ভারতী অভিযোগ করেছিলেন, ইচ্ছেকৃত ভাবে তাঁর প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে। প্রেমচাঁদ এ দিন বলেন, “সিআইডি আমার সঙ্গে দেখা করেনি। এসব তৃণমূলের চক্রান্ত। মিথ্যা মামলা করে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে তৃণমূলের প্রার্থী। আসলে ২০১৫সালে তৃণমূল প্রার্থী কীভাবে মাফিয়ারাজ কায়েম করে পুরপ্রধান হয়েছিলেন সেটা মানুষ জানে। তাই মানুষ সব বুঝে আমাদের ভোট দেবেন। তাতে ভয় পেয়ে এই মিথ্যা মামলা। আমরা ভয় পাচ্ছি না।” যদিও এই বিষয়ে তৃণমূল প্রার্থী তথা পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “বিজেপি প্রার্থীর কথার জবাব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছি না। উনি কী সেটা খড়্গপুরের মানুষ জানে। মানুষ যোগ্য জবাব দেবে।” আর মামলাকারী সুকান্তের কথায়, “তৃণমূলের সঙ্গে আমার কোনও যোগাযোগ নেই। প্রেমচাঁদের লোকেরা নিয়মিত মীমাংসার জন্য চাপসৃষ্টি করছে। কিন্তু আমি এই লড়াই চালিয়ে যাব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Premchand Jha BJP Kolkata High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE