হলদিয়া শহরের একটি দোকান। নিজস্ব চিত্র
প্যাকেটে দাম লেখা রয়েছে। কিন্তু বাজার-দোকানে তার থেকেও বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় নানা জিনিসের। এমনই অভিযোগ উঠেছে মাখনবাবুর বাজার, মোহনা মার্কেট-সহ হলদিয়ার বিভিন্ন এলাকায়। বেশি দাম নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে বা প্রতিবাদ করতে গেলেই দোকানিদের গালিগালাজ শুনতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ। এমনকি মহিলাদের সঙ্গেও নাকি দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে।
ক’দিন আগে মোহনা মার্কেটে দুধ ও দই কিনতে গিয়ে এমনই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষিকা। ওই শিক্ষিকার অভিযোগ, দুধ ও দইয়ের প্যাকেটে যা দাম লেখা রয়েছে তার থেকে ২ টাকা করে বেশি নেওয়া হচ্ছিল। তিনি প্রতিবাদ করায় তাঁর হাত থেকে দুধ আর দইয়ের প্যাকেট কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। দোকানদারও নাকি বলেন, ‘হলদিয়া টাউনশিপে এটাই দস্তুর।’’
অভিযোগ, দুধ, দই, পাউরুটির মতো নিত্য প্রয়োজনীয় নানা জিনিসে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে হলদিয়া শহরের বাসিন্দাদের। খাসির মাংস, মুরগি মাংসের দামও বাজারদরের থেকে ৫০ টাকা বেশি নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কোনও রেট চার্টের বালাই নেই স্থানীয় বাজার কমিটিও সব জেনে উদাসীন বলে অভিযোগ।
বাড়তি দাম নেওয়ার অভিযোগ জমা পড়েছে হলদিয়া মহকুমাশাসকের দফতরেও। হলদিয়ার মহকুমাশাসক কুহুক ভূষণ জানান , ‘‘আমি অভিযোগ পেয়েছি। হলদিয়া থানাকে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেব। কোনও বিক্রেতা এমআরপি-র থেকে বেশি দাম নিতে পারেন না।’’ হলদিয়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুধাংশু মণ্ডলেরও বক্তব্য, ‘‘পুরসভাও অভিযান চালাবে। অভিযোগ সত্যি হলে দোকানের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।’’ বেশি দাম নেওয়ার ব্যাখ্যা অবশ্য দিচ্ছেন দোকানদাররা। হলদিয়ার এক দুধ বিক্রেতার যুক্তি , ‘‘দুধের প্যাকেট ফ্রিজে রাখতে হয়। সেই খরচ ধরে দাম ২ টাকা বেশি নেওয়া হয়। এতে অন্যায়ের কী আছে।’’
শুধু দাম বেশি নেওয়া নয়, হলদি নদীর তীরে মাছের বাজারে ওজনে কারচুপি করা হয় বলেও অভিযোগ। ওজন পরিমাপের ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্র এখানে ব্যবহার করা হয় না। তাতে কারচুপি করা সহজ হয় বলে এলাকাবাসীর দাবি। স্থানীয় বাসিন্দা ইমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘‘একাধিকবার ঠকেছি। এ সব দেখার দায়িত্ব পুরসভার। কিন্তু পুরসভায় একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েও কাজ হয়নি।’’ হলদিয়া পুরসভার পুর-পারিষদ (স্বাস্থ্য) আজিজুল রহমানের অবশ্য দাবি, টাস্ক ফোর্স গড়া হয়েছে। অভিযানও হবে।
কত দিনে সেই অভিযান হয়, আর কবেই বা বাড়তি দাম নেওয়ার এই রীতিতে দাঁড়ি পড়ে, সে দিকেই তাকিয়া হলদিয়াবাসী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy