পঠন-পাঠন: দাসপুরের স্কুলে। নিজস্ব চিত্র
সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল আগেই। এ বার সেই মতো পুজোর ছুটির মধ্যেই খুলে গেল ঘাটাল ও দাসপুরের একাধিক স্কুল।
বন্যার জেরে স্কুলগুলি বন্ধ ছিল প্রায় দিন কুড়ি। ছাত্রছাত্রীদের সেই ক্ষতি পুষিয়ে দিতে পুজোর ছুটির মধ্যেই খুলে গেল স্কুল। ছুটির আগেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষগুলি।
শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, গত বন্যায় মহকুমার ১৯৬টি স্কুলের মধ্যে ৭৬টি স্কুলই চলে গিয়েছিল জলের তলায়। জলবন্দি ছিল পড়ুয়ারাও। স্কুল বন্ধ থাকায় শেষ হয়নি সিলেবাস। ফলে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক-সহ অন্যান্য ক্লাসের পড়ুয়াদের কথা চিন্তা করেই গত সোমবার থেকে ঘাটাল ও দাসপুরের একাধিক স্কুলে চালু হয়ে গিয়েছে পঠনপাঠন।
এ দিকে নিম্নচাপের জেরে সোমবার থেকে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কিন্তু তার মধ্যেও ক্লাসে উপস্থিতির হার চোখে পড়ার মতো। সোমবারই বৃষ্টির মধ্যেই অধিকাংশ স্কুলে প্রায় ৪০ শতাংশ পড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন। মঙ্গলবারের প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঠিক সময়ে হাজির হন সকলে।
সূত্রের খবর, কালীপুজোর আগের দিন পর্যন্ত স্কুল খোলা থাকবে। ঘাটাল ও দাসপুর মিলিয়ে প্রায় ৩০টির মতো স্কুলে পুজোর ছুটির মধ্যেই ক্লাস চালু হওয়ায়, শিক্ষকদের সিদ্ধান্তকে কুর্নিশ জানান সাধারণ বাসিন্দা থেকে অভিভাবকেরা। ঘাটালের এক অভিভাবকের কথায়, “শিক্ষকদের এই উদ্যোগে পড়ুয়ারাও খুব উৎসাহ পেয়েছে। প্রতি বছর লক্ষ্মীপুজোর সময়ে ছেলে মামাবাড়িতে যায়। এ বার স্কুল খোলা থাকবে বলে তা-ও যায়নি।” দ্বন্দ্বিপুর হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র অতনু চোংদারের কথায়, “পুজোর ছুটির মধ্যে স্কুলে এসে ভাল লাগছে।” ঘাটাল ও দাসপুরের বিধায়ক যথাক্রমে শঙ্কর দোলই ও মমতা ভুঁইয়া জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মেনে, পড়ুয়াদের কথা ভেবে শিক্ষকেরা যে ভাবে এগিয়ে এসেছেন, তা প্রশংসনীয়। গোপালপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বিমলেন্দু পাল, খেপুত বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অমৃতা সেনগুপ্তদের বক্তব্য, ছুটির মধ্যেই পড়ুয়াদের উপস্থিতি দেখে উৎসাহ পাচ্ছেন তাঁরাও। স্কুলে আসছেন শিক্ষকেরাও। খেপুত হাইস্কুলের শিক্ষক চন্দন ভট্টাচার্যের কথায়, “বহু শিক্ষক এ বার পুজোয় বেড়াতে যাননি। ছাত্রছাত্রীদের মুখের দিকে তাকিয়ে এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন সকলেই।”
বরুণা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ও তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি আহ্বায়ক সুজিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা কয়েক জন মিলিয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তবে ছাত্রদের স্বার্থে ছুটির সময়েও স্কুলে আসায় সকল শিক্ষকদের অভিনন্দন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy