Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
নেই পর্যাপ্ত স্প্রে-কর্মী

ডেঙ্গি দমন অভিযানে প্রশ্ন তমলুকে

গত বছরে অগস্ট মাসে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল এক যুবকের। রাজ্যে নানা দিকে তখন ডেঙ্গি নিয়ে আতঙ্ক। ওই মৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসে তমলুক পুরসভা। ডেঙ্গি রুখতে শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে মশা নিধন অভিযানে নেমেছিল তারা।

তমলুক পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে মশা মারতে স্প্রে করা হচ্ছে। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস

তমলুক পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে মশা মারতে স্প্রে করা হচ্ছে। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৮ ০২:১৬
Share: Save:

গত বছরে অগস্ট মাসে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল এক যুবকের। রাজ্যে নানা দিকে তখন ডেঙ্গি নিয়ে আতঙ্ক। ওই মৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসে তমলুক পুরসভা। ডেঙ্গি রুখতে শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে মশা নিধন অভিযানে নেমেছিল তারা। চলতি বছরেও বর্ষার আগেভাগেই পুরসভা ডেঙ্গি দমনে নামলেও কর্মীর অভাবে সেই অভিযান কতটা কাজে আসবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

পুরসভা সূত্রেই জানা গিয়েছে, একজন যুবকের মৃত্যু ছাড়াও গত বছর পুর এলাকায় ৬ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ডেঙ্গির মোকাবিলায় গত বছরই মে-জুন মাসে রাজ্য সরকারের বরাদ্দ টাকায় শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে মশা দমনে বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছিল। তমলুক পুরসভা এলাকাতেও অভিযান চলে। কিন্তু তারপরেও মশাবাহিত জ্বরে একজনের মৃত্যু ও কয়েক জনের জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় ডেঙ্গি দমনে পুরসভা কতটা সক্রিয় তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পরিস্থিতির চাপে পুরসভা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মশা দমন অভিযানে নামে। তড়িঘড়ি কেনা হয় ২০টি মশা মারার তেল স্প্রে করার যন্ত্র, দু’টি মশা মারার কামান।

চলতি বছরেও ডেঙ্গি মোকাবিলায় কোনও খামতি রাখতে নারাজ পুরসভা। সে জন্য বর্ষার আগেভাগেই মশা দমন অভিযানে নেমেছে তারা। পুরসভা সূত্রে খবর, প্রত্যেক ওয়ার্ডে বাড়ি বাড়ি বাসিন্দাদের কেউ জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে কিনা, বাড়ির কাছাকাছি জলাধার আছে কিনা এবং এলাকায় মশার লার্ভার কোনও উৎস আছে কিনা তা নিয়ে সমীক্ষা করা হচ্ছে। সমীক্ষার পাশাপাশি প্রতি ওয়ার্ডে মশা দমনের জন্য নিয়মিত জঙ্গল সাফাই, ব্লিচিং পাঊডার ও মশা মারার তেল স্প্রে করা হচ্ছে। সমীক্ষার জন্য ৩০০টি পরিবার পিছু একটি সমীক্ষক দল গড়া হয়েছে। এরকম ৫০টি সমীক্ষার দল রয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি ওয়ার্ডে ২ জন করে স্প্রে ওয়ার্কার, ২ জন ব্লিচিং পাউডার ছড়ানোর কর্মী ও দু’জন সাফাই কর্মী নিয়ে মোট ৬ জনের দল গড়ার ব্যবস্থা হয়েছে। যদিও যথেষ্ট সংখ্যক প্রশিক্ষিত স্প্রে ওয়ার্কার না মেলায় প্রতি ওয়ার্ডের জন্য এই দল গড়া যায়নি বলে স্বীকার করেছেন পুর কর্তৃপক্ষ।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, স্প্রে করার জন্য প্রতি ওয়ার্ড থেকে অন্তত একজন করে মোট ২০ জনকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হয়। যদিও এখনও পর্যন্ত ১২ জন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ফলে প্রশিক্ষিত স্প্রে-কর্মীর অভাব রয়েছে। পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেন বলেন, ‘‘প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে স্প্রে-কর্মী রাখার পরিকল্পনা হয়েছে। কিন্তু প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী না মেলায় সমস্যা হচ্ছে। এবছর আরও ২০টি স্প্রে মেশিন কেনা হবে। পরবর্তী সময়ে প্রশিক্ষিত কর্মী পেলে তা কাজে লাগানো হবে।’’

স্প্রে-কর্মীদের একাংশ জানিয়েছেন, মশা মারার তেল স্প্রে করার জন্য দৈনিক ভিত্তিতে পারিশ্রমিক দেওয়া হচ্ছে। একে স্বাস্থ্যের দিক থেকে ঝুঁকিপূর্ণ, তার উপর প্রতি মাসে হাতে গোনা কয়েকদিন কাজে আয়ও তেমন হয় না। তাই এ কাজে অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Awareness Program Tamluk Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE