Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
পর পর ধর্ষণ, খুন। প্রশ্নে নারী নিরাপত্তা।

নির্যাতিতার মনের যত্নে কাউন্সেলর

মনোবিদরা জানাচ্ছেন, ধর্ষণ, নির্যাতন বা খুনের চেষ্টার মতো হিংসার ঘটনায় আক্রান্ত মহিলারা মন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:১০
Share: Save:

প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শিল্প শহর— গত এক মাসে বেশ কয়েকটি ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা সামনে এসেছে পূর্ব মেদিনীপুরে। একের পর এক ঘটনা নারী নিরাপত্তার বিষয়টিকে যেমন নাড়া দিয়েছে, তেমনই প্রশ্ন উঠেছে নির্যাতিতাদের মনের যত্নে, আইনি সহায়তায় কতটা প্রস্তুত এই জেলা।

মনোবিদরা জানাচ্ছেন, ধর্ষণ, নির্যাতন বা খুনের চেষ্টার মতো হিংসার ঘটনায় আক্রান্ত মহিলারা মন ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। তাঁদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে তখন খুবই জরুরি কাউন্সেলিং। সঙ্গে নিরাপদ আবহ। জেলা সমাজ কল্যাণ দফতর এবং স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, নির্যাতিতাদের নিরাপদ জায়গায় রেখে কাউন্সেলিংয়ের বিষয়টি প্রশাসনের নজরে রয়েছে। নির্যাতিতা নাবালিকাদের সুরক্ষা এবং যত্নের জন্য একটি আবাসিক হোম রয়েছে কাঁথিতে। আর মহিলাদের জন্য তমলুক, হলদিয়া ও কাঁথিতে রয়েছে তিনটি ‘স্বাধার গৃহ’। ওই হোমগুলিতে নির্যাতিত শিশু-নাবালিক ও মহিলাদের নিয়মিত কাউন্সেলিং করা হয়। সে জন্য প্রতি হোমে কাউন্সেলরও রয়েছেন।

জেলা শিশু সুরক্ষা ইউনিট, জেলা সদর হাসপাতাল এবং মহকুমার হাসপাতালগুলিতেও কাউন্সলের রয়েছেন। তমলুকের জেলা হাসপাতাল সূত্রের খবর, সেখানে কোনও ‘সাইকিয়াট্রিক ওয়ার্ড’ নেই। তবে ‘মানসিক রোগ’ বিভাগে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। হাসপাতাল সুপার গোপাল দাস বলেন, ‘‘হাসপাতালের বহির্বিভাগে দু’জন মানসিক রোগের বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। সেখানে নির্যাতিত শিশু-মহিলাদের চিকিৎসা এবং কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।’’

ধর্ষণ বা নারী নির্যাতনের ঘটনায় নির্যাতিতাদের আইনি পরিষেবা দেওয়ার কী ব্যবস্থা রয়েছে জেলায়?

সমাজ কল্যাণ দফতর এবং জেলা মহিলা সুরক্ষা দফতর সূত্রের খবর, কোনও নির্যাতিতা থানায়, নারী ও শিশু সুরক্ষা দফতরে অভিযোগ জানানোর পরে বিষয়টি আদালতে আসে। আদালত সেটি পুলিশকে বা জেলা মহিলা সুরক্ষা বিভাগকে তদন্ত করতে দেন। আবার কোনও ক্ষেত্রে নির্যাতিতা আর্থিক ভাবে দুর্বল হলে জেলা মহিলা সুরক্ষা বিভাগের তরফে ‘ডিসট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটি’র সঙ্গেও তাঁদের যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়। আইনি শিবিরও বসে বলে জানা গিয়েছে।

জেলায় একাধিক ধর্ষণের ঘটনা যেমন সামনে এসেছে, তেমনই অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি চেয়ে হয়েছে প্রতিবাদ মিছিল। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে নির্যাতিতার ছবি বা নাম প্রকাশ্যে এনেই ওই মিছিল হয়েছে। অথচ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো ওই ধরনের ঘটনায় কোনও নির্যাতিতার পরিচয় সামনে আনা যাবে না। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় এবং আইনজীবীদের একাংশ জানাচ্ছেন, ওই রায় প্রসঙ্গে আমজনতার সচেতনতার অভাবের ফলেই এমনটা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে এ বিষয়ে সচেতন করতে কি আদৌ উদ্যোগী জেলা প্রশাসন? পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক তথা জেলা মহিলা সুরক্ষা সমিতির চেয়ারম্যান পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘শিশু এবং মহিলাদের উপর নির্যাতন রোধে এবং অন্য সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। সচেতনতা বাড়াতে হোম কর্তৃপক্ষগুলিকে নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rape Counselling
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE