পড়াশুনোর জন্য বাবা–মা বকাবকি করত। তাই, বাড়ি ছেড়ে কাজ করতে পালিয়ে গিয়েছিল সে। এমনকি বাবা-মায়ের উপর রাগের কারণে সে য়াদের কাছে ছিল তাদের জানিয়েছিল যে তার বাবা-মা বেঁচে নেই। রামনগরের অরকবনিয়া থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করার পর পুলিশকে এমন কথাই জানিয়েছে হলদিয়ার নিখোঁজ ছাত্র শুভজিৎ মান্না।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তেরোর শুভজিৎ হলদিয়ার রঘুনাথচকের বাসিন্দা। স্থানীয় একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। পরিবার সূত্রে খবর, গত ১২ এপ্রিল সকালে শিক্ষকের কাছে পড়তে যাবে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল শুভজিৎ। তার পর আর বাড়ি ফেরেনি সে। তার বাবার দাবি, দু’দিন ধরে আত্মীয়স্বজন থেকে নানা জায়গায় খোঁজ করেন তাঁরা। তার মধ্যে ছেলে বাড়ি না ফেরায় দুর্গাচক থানায় নিখোঁজ অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অভিযোগ পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে পুলিশ। আশপাশের বিভিন্ন থানায় তার ছবি পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে দুর্গাচক থানা সূত্রে জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার দুর্গাচক থানায় বসে শুভজিৎ জানায়, বাড়ি থেকে পালিয়ে সে মন্দারমণিতে চলে যায়। সেখানে বাদল গড়াই নামে একজনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তাকে সে জানায়, তার বাবা-মা মারা গিয়েছে। বাড়িতে কাকা-কাকীমার অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে সে বাড়ি থেকে চলে এসেছে। এর পর বাদলবাবু তাকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আশ্রয় দেন।
বাদলবাবু পুলিশকে জানিয়েছেন তাঁর বাড়িতে সপ্তাহখানেক থাকার পর শুভজিৎ মাঝেমধ্যে কাকা-কাকীমার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে চাইত। তিনি তাকে ফোন করতেও দিতেন। কিন্তু ফোনে শুভজিৎ গালিগালাজ করত। এ সব দেখে তাঁর সন্দেহ হয়। যে নম্বরে শুভজিৎ ফোন করত সেই নম্বরে তিনি যোগাযোগ করেন। তখনই জানতে পারেন কাকী-কাকীমা বলে যাঁদের ফোন করত শুভজিৎ তাঁরা আসলে তার বাবা-মা। এরপর তিনি ফোনে শুভজিতের বাবাকে সব জানান। শুভজিতের বাবা গত ২৪ এপ্রিল দুর্গাচক থানায় গিয়ে সমস্ত বিষয়টি জানান। সব শুনে দুর্গাচক থানার পুলিশ মন্দারমণি থানায় যোগাযোগ করে। তারপর রামনগর -২ ব্লকের অরকবনিয়া গ্রাম থেকে শুভজিৎকে উদ্ধার করে আনা হয়।
মন্দারমণি থানার পুলিশ জানিয়েছে, সেখানে থাকার সময় প্রচুর বন্ধু জুটিয়ে ফেলে শুভজিৎ। বৃহস্পতিবার তাকে হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হয়। বিচারক তার গোপন জবানবন্দি নেন।
ছেলেকে ফিরে পেয়ে পেশায় হলদিয়ার এক বেসরকারি সংস্থার অস্থায়ী কর্মী শঙ্কর মান্না বলেন, ‘‘বাড়িতে ও দুষ্টুমি করত। পড়ার কথা বললে রেগে যেত। এই নিয়ে ওর মা বকাবকি করলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার হুমকি দিত। তবে সত্যিই যে এমন কাণ্ড করবে ভাবিনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy