Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

আনা যাচ্ছে না বোল্ডার, থমকে নদী ভাঙন রোধ

তিন মাস বন্ধ পড়ে থাকা কাজ অবিলম্বে শুরুর দাবিতে শুক্রবার লালগড়ে আমকলা সেতুর কাছে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান  তিনটি গ্রামের বাসিন্দারা। আমকলা, গোয়াবাগান ও কানাইপাল গ্রামে নদী ভাঙন ঠেকাতে কার্যকরী পদক্ষেপের দাবি জানান তাঁরা।

চলছে রাস্তা অবরোধ। নিজস্ব চিত্র

চলছে রাস্তা অবরোধ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
লালগড় শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৯ ০২:২২
Share: Save:

ভূমি দফতরের ধরপাকড়ের জেরে নাকি বোল্ডার আনা যাচ্ছে না। আর সে জন্যই থমকে রয়েছে কংসাবতীর ভাঙন রোধের কাজ, অন্তত এমনই দাবি ঠিকাদারের। আর তার জেরে ক্ষোভ ছড়াচ্ছে লালগড়ে।

তিন মাস বন্ধ পড়ে থাকা কাজ অবিলম্বে শুরুর দাবিতে শুক্রবার লালগড়ে আমকলা সেতুর কাছে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান তিনটি গ্রামের বাসিন্দারা। আমকলা, গোয়াবাগান ও কানাইপাল গ্রামে নদী ভাঙন ঠেকাতে কার্যকরী পদক্ষেপের দাবি জানান তাঁরা। কংসাবতীর ভাঙন রোধে টাকা বরাদ্দ হয়েছে। টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। কাজও শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তিন মাস ধরে কাজ থমকে। এ দিকে, একটু একটু করে পাড় ভেঙে এগিয়ে আসছে কংসাবতী। গিলছে বাস্তু আর চাষজমি।

কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সৌরভ রায় বলেন, ‘‘ভূমি দফতরের ধরপাকড়ের জেরে পাড় বাঁধানোর জন্য প্রয়োজনীয় বোল্ডার আনা যাচ্ছে না। পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে রয়্যালটি দিয়ে বৈধ ভাবে বোল্ডার নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু ঝাড়গ্রাম জেলা ভূমি দফতর সরকারি কাজের জন্য আনা বোল্ডারের গাড়িকেও জরিমানা করছে। তাই কাজ বন্ধ রেখেছি।’’ ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েশা রানির অবশ্য বক্তব্য, ‘‘বৈধ নথিপত্র থাকলে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। যদি তা হয়ে থাকে তবে জেলা প্রশাসনে নথিপত্র-সহ আবেদন করলেই সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ করা হবে।’’

২০১৬ সালে চালু হয় লালগড়-ঝাড়গ্রাম সংযোগকারী আমকলা সেতু। সেই সময় সেতু সংলগ্ন নদীর পাড় কিছুটা বাঁধানো হলেও নদী তীরের ওই তিনটি গ্রামের ভাঙন রোধের কাজ হয়নি। গ্রামবাসীর বহু আবেদন নিবেদনের ফলে শেষমেশ বোল্ডার দিয়ে নদীর পাড় বাঁধানোর জন্য ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। ওই তিনটি গ্রামের নদীর পাড় বরাবর ১৫৮০ মিটার অংশ বোল্ডার দিয়ে বাঁধানোর জন্য তিন মাস আগে টেন্ডার হয়ে যায়। কিন্তু কয়েকদিন কাজ হয়েই বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি বেশ কয়েকবার প্রশাসনের নজরে এনেছেন গ্রামবাসী। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি বলে অভিযোগ।

শেষ পর্যন্ত তিন গ্রামের বাসিন্দারা এ দিন সকাল সাতটা থেকে আমকলা সেতুর সংযোগকারী রাস্তায় প্ল্যাকার্ড হাতে অবরোধ-বিক্ষোভ শুরু করেন। পুলিশ গিয়েও বিক্ষোভ তুলতে পারেনি। পরে লালগড়ের বিডিও মহম্মদ ফৈজান আশরফ আনসারি অবরোধস্থলে এসে আশ্বাস দিলে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ অবরোধ ওঠে। আমকলা, গোয়াবাগান ও কানাইপাল গ্রামে মোট পাঁচশো পরিবারের বাস। বেশিরভাগ কৃষিজীবী। স্থানীয় বাসিন্দা গোলোক বিহারী কর, হরেকৃষ্ণ কর, মালতি কর, শ্যমাপদ কররা জানান, ভাঙনে চাষের জমি, ঘরবাড়ি, বাগান তলিয়ে গিয়েছে। ভাঙন না ঠেকালে বর্ষায় জনপদের অনেকটাই নদীতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিডিও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

River Erosion Bolder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE