Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
ঝাড়গ্রাম উড়ালপুলের নীচে জমেছে অন্ধকার

সেতু-জটে ব্যবসা লাটে

উড়ালপুলের উদ্বোধন হয়েছে আড়াই বছর। কিন্তু উ়ড়ালপুলের নীচের রাস্তা তৈরি হয়নি আজও। খানাখন্দে ভরা ওই অংশ নরক হয়ে রয়েছে বলে ক্ষোভ ঝাড়গ্রাম শহরের বাসিন্দাদের।

আজব: উড়ালপুলের নীচে সরু পথ দিয়েই চলে নিত্য যাতায়াত। আন্ডারপাস এভাবে অবরুদ্ধ থাকে মোটরবাইকে। নিজস্ব চিত্র

আজব: উড়ালপুলের নীচে সরু পথ দিয়েই চলে নিত্য যাতায়াত। আন্ডারপাস এভাবে অবরুদ্ধ থাকে মোটরবাইকে। নিজস্ব চিত্র

দেবরাজ ঘোষ
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৭ ০১:০১
Share: Save:

উড়ালপুলের উদ্বোধন হয়েছে আড়াই বছর। কিন্তু উ়ড়ালপুলের নীচের রাস্তা তৈরি হয়নি আজও। খানাখন্দে ভরা ওই অংশ নরক হয়ে রয়েছে বলে ক্ষোভ ঝাড়গ্রাম শহরের বাসিন্দাদের। স্থানীয় বামদা, নতুনডিহি এলাকার বাসিন্দাদের যাতায়াতে যেমন অসুবিধা হচ্ছে। তেমনই বিক্রিবাটা লাটে ওঠার জোগার জুবিলি বাজারের।

বছর সাতেক আগে ৫ নম্বর রাজ্য সড়কের উপর শুরু হয়েছিল ঝাড়গ্রাম উড়ালুপল তৈরির কাজ। তখন থেকেই বেহাল শিবমন্দির থেকে সাবিত্রী মোড় পর্যন্ত এলাকা। বন্ধ জুবিলি বাজারের কেনাবেচাও। আর দিন সাতেকের মধ্যেই রাজ্যের মানচিত্র নতুন জেলা হিসাবে পাওয়া যাবে ঝাড়গ্রামকে। কিন্তু সদর শহরের প্রাণকেন্দ্রের অব্যবস্থা চূড়ান্ত। ঝাড়গ্রাম জুবিলি বাজারে প্রায় শ’দুয়েক দোকান রয়েছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, উড়ালপুল চালু হওয়ার পর থেকে ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে চলেছে।

এলাকার হোটেল লজগুলির অবস্থাও খুব একটা ভালো নয়। বাধ্য হয়ে যাদের আসতে হয় তারাই আসে। বাজার সংলগ্ন নতুনডিহি ও বামদার বাসিন্দাদের অবস্থা আরও খারাপ। গাড়ি যাতায়াতের একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ। কয়েক কিলোমিটার ঘুরে বড় রাস্তায় উঠতে হয়। সবচেয়ে সমস্যা হয় অ্যাম্বুল্যান্স বা দমকলের। বাসিন্দারা আতঙ্কে। যদি তেমন কোনও প্রয়োজন হয়, তবে দমকল তো ঢুকতেই পারবে না এলাকায়।

বছর সাতেক আগে শুরু হয়েছিল ঝাড়গ্রাম শহরের মূল রাস্তা ৫ নম্বর রাজ্য সড়কের উপর ৫১০ মিটার লম্বা উড়ালপুল। দক্ষিণে শিবমন্দির মোড় থেকে উত্তরে সাবিত্রী মোড় পর্যন্ত। কাজ শুরুর সময় নক্শাতে উল্লেখ ছিল উড়ালপুলের তলায় দু’দিকে ২২ ফুট জায়গা নিয়ে তৈরি হবে রাস্তা। ১০ ফুট পাকা রাস্তা ও বাকিটা ফুটপাথ। কিন্তু তা হয়নি। রাস্তার দুপাশে নিকেশিও বেহাল। একটু বৃষ্টিতে হাঁটুজল জমে যায়। রাত ৯টার পর বাজার বন্ধ হয়ে গেলে আর মানুষ চলার উপযুক্ত থাকে না এলাকা।

ওখানে যে দোকানগুলি রয়েছে তারমধ্যে কিছু দোকান পূর্ব প্রান্তে সরকারি জমির উপর। আর কিছু পশ্চিম প্রান্তে রায়তি জমিতে। দু’এক বছর আগে পূর্ত দফতরের সড়ক বিভাগ মাপজোক করে জমির মালিকদের বলে কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট দফতরে জমা করতে। কারণ রাস্তা তৈরি জন্য দোকান ভাঙা পড়লে সরকার ক্ষতিপূরণ দেবে।

কিন্তু সে কাজ আর এগোয়নি। প্রাথমিক ভাবে সরকারি জমির উপরে থাকা দোকানের মালিকরা জমি ছাড়তে অরাজি থাকলেও এখন সকলেই চাইছেন রাস্তা হোক। তাতে দোকানের জায়গা কিছুটা কমলেও আখেরে উপকার হবে তাঁদেরই। ঝাড়গ্রাম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সৌমেন মণ্ডল বলেন, ‘‘ঝাড়গ্রাম বাজার শহরের প্রাণ কেন্দ্র। কিন্তু ক্রেতারা আসবেন কী করে? রাস্তার যা অবস্থা, তাতে হেঁটে এলেও আছাড় খাওয়ার ভয় রয়েছে। রিকশা, সাইকেল বা মোটর বাইকের তো প্রশ্নই নেই।’’ তাঁদের দাবি, ক্ষতিপূরণের যে টুকু টাকা পাওয়া যাবে সে টুকুতেই তাঁরা সন্তুষ্ট। ফেব্রুয়ারিতে এই মর্মে তাঁরা আবেদনও করেছেন পূর্ত দফতরে।

ঝাড়গ্রামের পুরপ্রধান দুর্গেশ মল্লদেব বলেন, ‘‘পূর্ত দফতর ইচ্ছুক জমিদাতাদের নাম নিয়ে জমির দাম নির্ধারণ করেছে। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি পরিকল্পনা মাফিক কাজ শুরু হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Road Flyover Sufferings
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE