Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বিএডে ‘প্রশ্ন ফাঁস’, নিরুত্তর কর্তৃপক্ষ

দুপুর বারোটা থেকে দু’টো পর্যন্ত বিএডের  চতুর্থ সেমেস্টারের ‘ক্রিয়েটিং অ্যান্ড ইনক্লুসিভ স্কুল’ পেপারের পরীক্ষা হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার হয় চতুর্থ সেমেস্টারেরই ‘যোগা এডুকেশন’ নামে অন্য আর একটি পেপারের পরীক্ষা হয়েছে গত বৃহস্পতিবার।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৮ ০৭:৫০
Share: Save:

পরপর দু’দিন বাতিল বিএডের পরীক্ষা! কারণ না কি ‘প্রশ্ন ফাঁস’, গুঞ্জন অন্তত তেমনই। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য বলছেন, অনিবার্যকারণবশত পরীক্ষা বাতিল হয়েছে। কী সেই অনিবার্য কারণ সে বিষয়ে অবশ্য সদুত্তর মেলেনি! ক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা অবশ্য এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যর্থতাকেই দুষছেন।

গত বুধবার দুপুর বারোটা থেকে দু’টো পর্যন্ত বিএডের চতুর্থ সেমেস্টারের ‘ক্রিয়েটিং অ্যান্ড ইনক্লুসিভ স্কুল’ পেপারের পরীক্ষা হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার হয় চতুর্থ সেমেস্টারেরই ‘যোগা এডুকেশন’ নামে অন্য আর একটি পেপারের পরীক্ষা হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। বিকেল তিনটে থেকে পাঁচটা পর্যন্ত হয় ওই পরীক্ষা। দু’ক্ষেত্রেই পরীক্ষার পরদিন ‘ক্রিয়েটিং অ্যান্ড ইনক্লুসিভ স্কুল’ ও ‘যোগা এডুকেশন’-এর পরীক্ষা বাতিল করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ ব্যাপারে মুখে কুলুপ দিয়েছেন। পরীক্ষা বাতিলের পিছনে যে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে, তাও সরাসরি মানতে চাননি তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক সুব্রতকুমার দে-র দাবি, “অনিবার্য কারণবশত এই পরীক্ষা বাতিল।” একই দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরীক্ষা নিয়ামক সুভাষ মাইতির। প্রশ্ন ফাঁসের জেরে পরীক্ষা বাতিল নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক জয়ন্তকিশোর নন্দীও। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য এক আধিকারিকের সাফাই, “প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে, এটা মেনে নিলেই সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা বাতিল করে আবার পরীক্ষা নিতে হয়। পরীক্ষা বাতিল করে আবার নতুন করে পরীক্ষা নেওয়াটা অনেক বড় একটা ব্যাপার! যে দু’টি পরীক্ষা বাতিল হয়েছে, সেই দু’টি পরীক্ষা কবে হবে শীঘ্রই তা জানানো হবে।”

এই টালবাহানার মধ্যে পড়ে ক্ষুব্ধ বিএডের চতুর্থ সেমেস্টারের পড়ুয়ারা। এক ছাত্রীর অভিযোগ, “এমনিতেই অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা আগে হয়েছে। এখানেই এত দেরিতে হচ্ছে। পরীক্ষা বাতিলের ফলে তা আরও দেরিতে হবে। এরফলে তো পরীক্ষার্থীদেরই সমস্যায় পড়তে হবে।” ‘প্রশ্ন ফাঁসের’ অভিযোগে সরব বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলোও। ডিএসও-র জেলা সভাপতি দীপক পাত্রের কথায়, “বিশ্ববিদ্যালয়ের যে পরিকাঠামো থাকা উচিত এখানে তা নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামোগত সমস্যার জন্য ছাত্রছাত্রীরা সমস্যায় পড়ছেন।” তাঁর অভিযোগ, “বিএড এখন বেসরকারিকরণ হয়ে গিয়েছে। তাই এখন লক্ষ্যটা পড়াশোনার মান নয়, ডিগ্রি বিক্রি করে মুনাফা অর্জন।” এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ মুদির অভিযোগ, “এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের লজ্জা।” বিরোধীদের অভিযোগ, ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশ কর্মী জড়িত রয়েছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা প্রসেনজিৎ বেরা বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় মনে করছে পরীক্ষা বাতিল প্রয়োজন তাই বাতিল করেছে।” প্রশ্ন ফাঁসের দায় কি বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়? প্রসেনজিতের দাবি, “প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে কেউ নিশ্চয় জড়িত। না হলে পরীক্ষার আগে প্রশ্ন ফাঁস হওয়া সম্ভব নয়। হতে পারে তারা কো-অর্ডিনেশন কমিটির লোকজন! ভোটে পেরে ওঠে না। তাই এ ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে। তৃণমূল সরকারের বদনাম করার চেষ্টা করছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Vidyasagar University Question Leak Corruption
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE