প্রতীকী ছবি।
ডাইন অপবাদ দিয়ে এক দম্পতিকে ঘরছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে। বুধবার ওই দম্পতি মেদিনীপুরে এসে জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের (ডিএলএসএ) কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।
জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সম্পাদক তথা বিচারক সম্রাট রায় মানছেন, ‘‘অভিযোগটি গুরুতর। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েই দেখছি।’’ জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের তরফে দম্পতির অভিযোগের বিষয়টি পুলিশ- প্রশাসনকেও জানানো হচ্ছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের আশ্বাস, ‘‘প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’ আজ, বৃহস্পতিবার শালবনির ওই গ্রামে যাবে আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের একটি দল।
ওই দম্পতির দুই ছেলে। বড় ছেলে নবম ও ছোট ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। দম্পতির অভিযোগ, তাঁরা চার মাস ধরে ঘরছাড়া হয়ে রয়েছেন। তাঁদের দুই ছেলেও স্কুল যেতে পারছে না। একাধিকবার গ্রামে ফেরার চেষ্টা করলেও প্রতিবারই প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ভয়ে তাঁরা গ্রামে ফেরার ঝুঁকি নেননি। দম্পতির আরও অভিযোগ, বিষয়টি আগে পুলিশকে জানালেও সুরাহা হয়নি।
দম্পতি যে গ্রামের বাসিন্দা সেখানকার এক তরুণীর মাস পাঁচেক আগে বিয়ে হয়। শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে জ্বর হয় ওই তরুণীর। খবর পৌঁছয় তরুণীর বাপের বাড়ির গ্রামে। এরপরই তৎপর হয়ে ওঠেন গ্রামের মাতব্বরেরা। ওই দম্পতিকে ডাইন অপবাদ দেন তাঁরা। নিঃসন্দেহ হতে দম্পতিকে নিয়ে যাওয়া হয় ওঝার কাছে। ওঝা নিদান দেন, গ্রামের মধ্যে যা কিছু খারাপ ঘটনা ঘটছে তার জন্যও ওই দম্পতিই দায়ী। অভিযোগ, এরপর ওই দম্পতির উপর অত্যাচার শুরু হয়। তাঁরা ঘর ছাড়তে বাধ্য হন।
সরাসরি বিচারকের দ্বারস্থ হয়েছেন দম্পতি। কী পদক্ষেপ করবে প্রশাসন? শালবনির বিডিও সঞ্জয় মালাকার বলেন, ‘‘বিষয়টি দেখছি। ওই এলাকায় সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হবে। ডাইন- বিরোধী প্রচার কর্মসূচিও হবে।’’
ডাইন বিরোধী কর্মসূচি অবশ্য থেমে নেই। থেমে নেই ডাইন অপবাদে অভিযুক্ত করার প্রবণতাও। গত শুক্রবারই গড়বেতা ৩ অর্থাৎ চন্দ্রকোনা রোড ব্লকের শঙ্করকাটা পঞ্চায়েতের তাঁতিচুয়া গ্রামে এক আদিবাসী বৃদ্ধাকে ডাইন অপবাদ দিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর ভাইপোর বিরুদ্ধে। অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। মঙ্গলবারই সেই গ্রামে গিয়ে সচেতনতা তৈরির কাজ করেন বিজ্ঞান মঞ্চ ও ব্লক প্রশাসনের কর্মীরা। এ দিনও ওই গ্রামে গিয়েছিলেন একটি যুক্তিবাদী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy