Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ঋতুকালীন সচেতনতার পাঠ

ঋতুকালীন স্রাব চলাকালীন কী করা উচিত, কী করা উচিত নয়, কিশোরীদের সে বিষয়ে সচেতন করতে উদ্যোগী হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনও। ঠিক হয়েছে, জেলার ৬১০টি হাইস্কুলে ঋতুকালীন পরিচ্ছন্নতা নিয়ে এই সচেতনতার পাঠ দেওয়া হবে।

খড়্গপুরের স্কুলে ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন। ফাইল চিত্র

খড়্গপুরের স্কুলে ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৭ ০৭:১০
Share: Save:

দিন কয়েক আগের ঘটনা। শালবনির একটি স্কুলে টিফিনের সময় প্রধান শিক্ষকের ঘরের সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল এক ছাত্রী। চোখে-মুখে জড়তা। নবম শ্রেণির মেয়েটি বাড়ি যেতে চেয়েছিল। প্রধান শিক্ষকের বুঝতে সমস্যা হয়নি মেয়েটি ঋতুস্রাব নিয়ে ভয় পেয়ে গিয়েছে। তিনি ওই ছাত্রীকে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। পরে শালবনির ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলছিলেন, “ঋতুকালীন স্রাব নিয়ে প্রায় সব মেয়েই চুপ থাকে। কিন্তু এই জড়তা, ভয় ভাঙতে হবে। বুঝতে শারীরবৃত্তিয় এই প্রক্রিয়া স্বাভাবিক, এর সঙ্গে মেয়েদের স্বাস্থ্যের দিকটি জড়িত।’’

ঋতুকালীন স্রাব চলাকালীন কী করা উচিত, কী করা উচিত নয়, কিশোরীদের সে বিষয়ে সচেতন করতে উদ্যোগী হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনও। ঠিক হয়েছে, জেলার ৬১০টি হাইস্কুলে ঋতুকালীন পরিচ্ছন্নতা নিয়ে এই সচেতনতার পাঠ দেওয়া হবে। আপাতত নবম শ্রেণির ছাত্রীদের এর আওতায় আনা হয়েছে। টানা ৪৫ দিন একটি করে ক্লাস হবে। স্কুলেরই শিক্ষিকা এই পাঠ দেবেন। এ জন্য সংশ্লিষ্ট স্কুলের একজন করে শিক্ষিকাকে নিয়ে জেলাস্তরে কর্মশালাও হয়েছে। জেলার শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র বলছিলেন, “ঋতুকালীন সচেতনতা বাড়াতেই এই উদ্যোগ।’’ঋতুকালীন স্রাবের সময় পরিচ্ছন্নতা অত্যন্ত জরুরি। এই সময় অপরিচ্ছন্নতা থেকে সংক্রমণ হতে পারে। যা পরবর্তীকালে সন্তান জন্মানোর সময় মা ও শিশু দু’জনের ক্ষেত্রেই ক্ষতিকর হতে পারে। গ্রামাঞ্চলে ঋতুস্রাবের সময় স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের তেমন চল নেই। কাপড় বারবার ধুয়ে ব্যবহার করা হয়। তাতে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে। কেশপুরের এক স্কুলের শিক্ষিকা আবার জানালেন, ঋতুস্রারের সময় বহু ছাত্রী স্কুলে আসে না। অনেকে নানা অসুখ-বিসুখে পড়ে।

অবস্থা দেখে জেলার বহু স্কুল-কলেজে ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি সচেতনতাতেও জোর দিতে চাইছে প্রশাসন।

শিক্ষকদের পর্যবেক্ষণ, শুধু গ্রামাঞ্চলে নয়, শহরের বহু কিশোরীরও ঋতুকালীন স্বাস্থ্য সচেতনতার বোধ নেই। ফলে, তারা রোগে ভোগে। শালবনির ভাদুতলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিতেশ চৌধুরী বলছিলেন, “ঋতুকালীন স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়লে একদিকে যেমন রোগের খরচ কমবে, তেমন মেয়েরাও সুস্থ থাকবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE