Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

স্কুলে তো নিভৃতবাস! মিড-ডে মিলের চাল, আলু বিলি নিয়ে ধন্দ

মার্চ মাসে প্রথম দফায় পড়ুয়া পিছু ২ কিলোগ্রাম চাল ও ২ কিলোগ্রাম আলু দেওয়া হয়েছিল।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০২০ ০৪:২৯
Share: Save:

করোনা সতর্কতায় রাজ্যের সব প্রাথমিক ও হাইস্কুলে আগামী ১০ জুন পর্যন্ত ছুটি। লকডাউন পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের মিড-ডে মিলের খাবার যাতে বন্ধ না হয়, সে জন্য স্কুল থেকে পড়ুয়াদের চাল-আলু বিলির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মার্চ মাসে প্রথম দফায় পড়ুয়া পিছু ২ কিলোগ্রাম চাল ও ২ কিলোগ্রাম আলু দেওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় দফায় এপ্রিল মাসে পড়ুয়া পিছু ৩ কিলোগ্রাম চাল ও ৩ কিলোগ্রাম আলু দেওয়া হয়। তৃতীয় দফায় আগামী ১ জুন থেকে ফের পড়ুয়াদের ২ কিলোগ্রাম চাল ও ২ কিলোগ্রাম আলু দেওয়ার সরকারি নির্দেশিকা এসেছে। সামাজিক দূরত্ব মেনে তা বিলির জন্য পড়ুয়াদের অভিভাবকদের ডেকে বিভিন্ন দিনে বণ্টন করতে বলা হয়েছে। এর জন্য স্কুলগুলিতে চাল পাঠানোও শুরু হয়েছে। কিন্তু এ বার তা বিলির ক্ষেত্রে অন্য রকম সমস্যা দেখা দিয়েছে।

ইতিমধ্যেই জেলার বিভিন্ন এলাকায় ভিন্ রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফিরেছেন। স্থানীয় প্রাথমিক স্কুল, হাইস্কুলে নিভৃতবাসে রয়েছেন। এই সব স্কুলে কোয়রান্টিন সেন্টার থাকায় কী ভাবে সেখানে চাল-আলু বিলির কাজ হবে তা নিয়ে সেখানকার শিক্ষক-শিক্ষিকারা ধন্দে পড়েছেন। ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের কমপক্ষে ১৪ দিন নিভৃতবাসে থাকতে হবে। সেই সময়ের মধ্যে ওই সব স্কুলে বাইরের লোকজনের যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। রয়েছে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কাও। এমন পরিস্থিতিতে অভিভাবকদের ডেকে চাল-আলু বিলি করায় ঝুঁকি থাকবে বলে অভিযোগ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। তাই যে সব প্রাথমিক, হাইস্কুলে পরিযায়ী শ্রমিকেরা নিভৃতবাসে রয়েছেন, সেখানে চাল-আলু বণ্টন পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

এহেন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার নন্দকুমার ব্লকের আলাশুলি গোরাচাঁদ প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়াদের বরাদ্দ চাল পাঠানো হলে তা ফিরিয়ে দেন প্রধানশিক্ষক। ওই প্রধান শিক্ষক তথা পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক অরূপ ভৌমিক বলেন, ‘‘১ জুন থেকে ৬ জুনের মধ্যে স্কুলে চাল ও আলু বিলির নির্দেশ দেওয়া হলেও গত রবিবার ভিন্ রাজ্য ফেরত গ্রামের ৬ জন পরিযায়ী শ্রমিক স্কুলভবনে নিভৃতবাসে রয়েছেন। আগামী ১৪ দিন তাঁরা ওই ভাবে থাকবেন। এই সময় স্কুলচত্বরে বাইরের লোকজনের জমায়েত নিষেধ। ফলে ওই সময়েই স্কুলে অভিভাবকদের ডেকে চাল ও আলু বিলি করা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সরকারি বরাদ্দ চাল স্কুলে পাঠানো হলেও ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। ব্লক ও জেলা প্রশাসনকেও বিষয়টি জানিয়েছি।’’ সমিতির তরফে এদিন জেলাপ্রশাসনের কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। সেখানে দাবি করা হয়েছে, সরকারি নির্দেশ পরিবর্তন ১ জুন থেকে বণ্টনের বদলে ১৫ জুনের পরে বণ্টন করা হোক।

নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক অশোক দাস বলেন, ‘‘যে সমস্ত স্কুলভবনে পরিযায়ী শ্রমিকরা রয়েছেন, সেখানে চাল ও আলু বণ্টনের সময় পিছিয়ে দেওয়া হোক।’’ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক সংঘমিত্র মাকুড় বলেন, ‘‘করোনার সতর্কতা ছাড়াও সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে স্কুলে চাল-আলু বণ্টনের সময় এবং কী ভাবে তা দেওয়া হবে সে বিষয়ে প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা চলছে। দু-একদিনের মধ্যে স্কুলগুলিকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE