প্রতীকী ছবি।
রবিবার ছুটির দিন সাত সকালে কলকাতায় স্কুলের কাজে যাচ্ছিলেন সহকারী প্রধান শিক্ষক-সহ স্কুল পরিচালন সমিতির সদস্যরা। দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে তাঁদের গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে মৃত্যু হয় গাড়িচালকের। পুলিশ দুর্ঘটনার তদন্তে নামলে উঠে এল স্কুলের জন্য সংসদ তহবিলের বরাদ্দ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ। যে স্কুলের বরাদ্দ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে সেটি পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা মহকুমার রাসন নেহরু হাইস্কুল।
পুলিশ ও স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাইস্কুলের নতুন শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের জন্য সাংসদের এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ করার পরেও তা ফিরিয়ে নেওয়া হয়। প্রায় ৬ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার ওই বরাদ্দ ফিরিয়ে নেওয়ার ঘটনায় সহকারী প্রধান শিক্ষক মেদিনীপুরের তৃণমূল সাংসদ সন্ধ্যা রায়ের আপ্তসহায়ক অনির্বাণ ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। রবিবার মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে সেই অভিযোগই জানাতে আসছিলেন তাঁরা। অনির্বাণবাবু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।
স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন শ্রেণিকক্ষ তৈরির জন্য স্থানীয় (মেদিনীপুর) সাংসদ সন্ধ্যা রায়ের সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে ২০১৭-’১৮ আর্থিক বছরে ১১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়। প্রথম পর্যায়ে ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে ৬ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা স্কুলকে দেওয়া হয়। ওই টাকা বরাদ্দের পর স্কুল কর্তৃপক্ষ শ্রেণিকক্ষ তৈরির জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করতে গত জুন মাসে ই-টেণ্ডার ডাকেন। অভিযোগ তারপরেই তাঁরা অনির্বাণবাবুর বাধার মুখে পড়েন। প্রধান শিক্ষক বিবেকানন্দ পয়ড়ার অভিযোগ, ‘‘শ্রেণিকক্ষ তৈরির টাকা পাওয়া গিয়েছিল গত এপ্রিল মাসে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আচরণ বিধি থাকায় তখন কাজ করা যায়নি। জুন মাসে ই-টেণ্ডার করতে গেলে আপত্তি করেন অনির্বাণবাবু। তিনি নিজে কাজ করাতে চাইছিলেন। ই-টেন্ডার করতে গেলে বরাদ্দ টাকা ফিরিয়ে নেওয়ার হুমকি দেন। কিন্তু ই-টেন্ডার করার পরেও ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়নি। তার আগেই বরাদ্দ অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য চিঠি আসে। এবিষয়ে ব্লক ও জেলা প্রশাসনের কাছে জানিয়েও সুরাহা না হওয়ায় বরাদ্দ অর্থ পেতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে গিয়ে দরবার করার সিদ্ধান্ত হয়। ’’
অভিযোগ অস্বীকার করে অনির্বাণবাবুর দাবি, ‘‘রাসন নেহরু হাইস্কুলে শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের জন্য এক বছর আগে (২০১৭-’১৮ আর্থিক বছরে) সাংসদ এলাকা উন্নয়ন তহবিলের অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ ওই টাকা সময়ে খরচ করতে পারেননি। ফলে বরাদ্দ টাকার খরচ নিয়ে আমাদের অসুবিধায় পড়তে হচ্ছিল। এনিয়ে প্রধান শিক্ষককে বার বার জানানো সত্ত্বেও কাজ হয়নি। কয়েক মাস পরে স্কুলের তরফে ই-টেন্ডার করা হলেও তাতে অস্বচ্ছতা থাকায় সাংসদের নির্দেশ মেনে বরাদ্দ অর্থ ফেরাতে চিঠি দেওয়া হয়।’’ তাঁর কথায়, ‘‘প্রশাসনের কাছে সব জানানো হয়েছে। প্রধানশিক্ষকের তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’
এবিষয়ে এগরা ১-এর বিডিও বংশীধর ওঝা বলেন, ‘‘আমি আসার আগে বিষয়টি ঘটেছিল। তাই সঠিক জানি না। তবে এখন খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy