Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

এগোচ্ছে সমুদ্র, বরাদ্দের অপেক্ষায় প্রশাসন

যদিও এ যুক্তি মানতে নারাজ বিজ্ঞানীরা। ভৌগোলিক কারণেই বঙ্গোপসাগরের ঢেউ ক্রমশ পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে সরছে বলে দাবি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমুদ্রবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ও বিশিষ্ট সমুদ্র বিজ্ঞানী আনন্দদেব মুখোপাধ্যায়ের।

ভাঙন: মন্দারমনির কাছে। নিজস্ব চিত্র।

ভাঙন: মন্দারমনির কাছে। নিজস্ব চিত্র।

শান্তনু বেরা
কাঁথি শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৭ ০৮:৩০
Share: Save:

ফুঁসছে সমুদ্র, আতঙ্কে কাঁপছেন নিউ জলধা, জনকল্যাণ মৎস্যখটির প্রায় পাঁচ হাজার মৎস্যজীবী। প্রবল জলোচ্ছ্বাসে এক থেকে দেড় কিলোমিটার বাঁধ সমুদ্রগর্ভে মিলিয়ে যাবে যে কোনও দিন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসনিক গাফিলতিতেই এই পরিস্থিতি।

মন্দারমণির পশ্চিম পাশে বাঁধ লাগোয়া এলাকায় নিউ জলধা ও জনকল্যাণ মৎস্যখটির প্রায় ৩০০ মৎস্যজীবী পরিবার ছাড়াও রয়েছে ১২টি হোটেল। আইনের ভয়ে কোনও কথা বলতে না চাইলেও আতঙ্কে রয়েছেন হোটেল মালিকরা। কাঁথি মহকুমা খটি মৎস্যজীবী উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক লক্ষ্মীনারায়ণ জানা বলেন, “বাঁধ প্রতিদিন ১৫-২০ মিটার করে ক্ষয়ে যাচ্ছে। এ ভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পুরোটাই সমুদ্রের গ্রাসে চলে যাবে।’’ তাঁদের অভিযোগ, ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ড্রেজিং হয়নি। তাই একদিকে চড়া পড়ে উল্টোদিক সমুদ্রগর্ভে চলে যাচ্ছে।

যদিও এ যুক্তি মানতে নারাজ বিজ্ঞানীরা। ভৌগোলিক কারণেই বঙ্গোপসাগরের ঢেউ ক্রমশ পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে সরছে বলে দাবি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমুদ্রবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক ও বিশিষ্ট সমুদ্র বিজ্ঞানী আনন্দদেব মুখোপাধ্যায়ের। তবে কারণ যাই হোক, আতঙ্ক গ্রাস করছে বাসিন্দাদের। বালির বাঁধ ভাঙতে ভাঙতে জনবসতি থেকে ১২-১৫ ফুট দূরত্বে এসে ঠেকেছে সমুদ্র। স্থানীয় শেখ আখতার ও জাহিরউদ্দিন খানের দাবি, শুধু পরিদর্শন ছাড়া আর কিছুই করেনি প্রশাসন। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ ও রামনগর-২ বিডিওকে অবস্থার কথা জানিয়েছেন বাসিন্দারা। দু’তরফের প্রতিনিধিরাই এলাকা পরিদর্শন করে গিয়েছেন। কিন্তু কোনও আশ্বাস মেলেনি।

রামনগর-২ এর বিডিও প্রীতম সাহা স্বীকার করেছেন, “বিপদের শঙ্কা রয়েছেই। দ্রুত ব্যবস্থার জন্য জেলা প্রশাসন ও সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে।’’ কাঁথি মহকুমা সেচ দফতরের মুখ্য বাস্তুকার স্বপন পণ্ডিত বলেন, “ব্রিটিশ আমলের সমুদ্র বাঁধ। প্রবল জলোচ্ছাস আটকানোর শক্তি নেই।’’ তবে তাঁর উপলব্ধি, ‘‘বোল্ডার ও পাথর দিয়ে বাঁধ মেরামত প্রয়োজন। সেই পরিকল্পনা আছে। বরাদ্দ মিললেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’

তবে সেটা কবে? আতঙ্কিত মুখগুলো সেই প্রশ্নের উত্তরই খুঁজছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE