খড়্গপুরের নিমপুরা শিল্পতালুকে বহু ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ছাড়াই কাজ হয়। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য সরকারি প্রকল্প রয়েছে। তবে প্রকল্পের সুবিধে নেন না অনেকে। কারণ, প্রকল্প সম্পর্কে তাঁরা জানেনই না।
তবে কি প্রচারের অভাব? ডেপুটি লেবার কমিশনার (খড়্গপুর) বিতান দে বলেন, ‘‘প্রকল্প নিয়ে প্রচারের জন্য নানা কর্মসূচি হয়। শিবির হয়। এখন বাড়ি বাড়ি প্রচারও শুরু হয়েছে।’’ শ্রম দফতর জানাচ্ছে, শ্রমিক মেলাতেও এইসব প্রকল্প নিয়ে প্রচার চলে। মহকুমাস্তরে মেলা হয়। কিন্তু অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকরা ঠিক কতটা সুরক্ষিত? জেলা প্রশাসনের এক সূত্র মানছে, পশ্চিম মেদিনীপুরে অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৮ লক্ষ। এখনও পর্যন্ত সামাজিক সুরক্ষা যোজনার আওতায় এসেছেন প্রায় ৪ লক্ষ ৭৭ হাজার শ্রমিক।
অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা যোজনার আওতায় আসতে হলে বয়স ১৮ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হয়। নির্মাণ এবং পরিবহণ ক্ষেত্রের শ্রমিকেরা ছাড়া অন্য অসংগঠিত শ্রমিকের পারিবারিক মাসিক আয় সাড়ে ৬ হাজার টাকার মধ্যে থাকতে হয়। নির্মাণ ও পরিবহণ ক্ষেত্রের শ্রমিকদের জন্য অবশ্য মাসিক পারিবারিক আয়ের ঊর্ধ্বসীমা নেই। শ্রম দফতর সূত্রে খবর, আগে অসংগঠিত ক্ষেত্রে নথিভুক্ত কোনও শ্রমিকের মৃত্যু হলে রাজ্য সরকার তাঁর পরিবারকে ৩০ হাজার টাকা সহায়তা দিত। তা বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা হয়েছে। দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ক্ষেত্রে সহায়তার পরিমাণ এক লক্ষ থেকে দু’দফায় বেড়ে দু’লক্ষ টাকা হয়েছে। একই ভাবে বাড়ানো হয়েছে অবসরভাতা এবং চিকিৎসা, শিক্ষা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্যের পরিমাণও। এমনকি, দুর্ঘটনায় একটি চোখের দৃষ্টি হারালে, একটি হাত অথবা পায়ের কর্মক্ষমতা হারালে এক লক্ষ টাকা সহায়তা মেলে।
ডেপুটি লেবার কমিশনার (খড়্গপুর) জানাচ্ছেন, সামাজিক সুরক্ষা যোজনার সুবিধাগুলো অসংগঠিত শ্রমিকদের কাছে পৌঁছে দিতে একটি সুরক্ষিত ও তথ্যসমৃদ্ধ পোর্টাল রয়েছে। সেখানে অনলাইনে নাম নথিভুক্তির জন্য আবেদন করা যায়। যাচাইয়ের পরে আবেদনকারী অসংগঠিত শ্রমিক হিসেবে এই যোজনায় নথিভুক্ত হন। নথিভুক্তির বার্তা তাঁর মোবাইলে পাঠানো হয়। ব্লক এবং পুরসভাস্তরে নাম নথিভুক্তিকরণের জন্য রয়েছে শ্রমিক কল্যাণ সহায়তা কেন্দ্র। তা ছাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ওয়ার্ডে স্বনিযুক্ত শ্রম সহায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
প্রকল্প নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর অব্যাহত। বামপন্থী শ্রমিক সংগঠন এআইটিইউসির (আইটাক) জেলা সম্পাদক বিপ্লব ভট্টের মন্তব্য, ‘‘শ্রমিক মেলা করে কী হবে? যদি শ্রমিকেরা সুযোগ- সুবিধেই না পান। এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্তিকরণের গতিও খুব শ্লথ।’’ তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক দীনেন রায়ের অবশ্য দাবি, ‘‘অসংগঠিত শ্রমিকেরা নানা ধরনের সুযোগ- সুবিধে পান। এই সময়ের মধ্যে অসংগঠিত শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তাও বেড়েছে।’’
শ্রম দফতরের দাবি, চলতি আর্থিক বছরেই প্রায় ৬০ হাজার শ্রমিকের নাম নথিভুক্ত হয়েছে। এরমধ্যে বিভিন্ন সুযোগ- সুবিধে পেয়েছেন প্রায় ৩ হাজার জন শ্রমিক। আর নথিভুক্ত ৪ লক্ষ ৭৭ হাজার শ্রমিকদের মধ্যে বিভিন্ন সুযোগ- সুবিধে পেয়েছেন প্রায় ১ লক্ষ ৪১ হাজার জন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy