Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
কালীপুজোর শব্দ দানব

কোথাও জব্দ, কোথাও চেনা মহিমায়

তমলুক, হলদিয়ার এই ছবিতে বাসিন্দারা আঙুল তুলেছেন পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার দিকে। আবার উল্টো ছবিও রয়েছে। ঘাটালের সাধারণ মানুষ বলছেন, প্রশাসনের সক্রিয়তায় অন্য বছরের তুলনায় কমই রয়েছে এ বারের শব্দ-দাপট।

রোশনাই: দাসপুরের গৌরাতে

রোশনাই: দাসপুরের গৌরাতে

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৩২
Share: Save:

কোথাও বৃষ্টির দাপট হার মেনে গেল শব্দ বাজির দৌরাত্ম্যে। আবার কোথাও বৃষ্টির থামতেই শুরু হল পটকা, বোমের দাপাদাপি। সঙ্গী মাইক, ডিজে বক্সের কান ফাটানো আওয়াজ। তমলুক, হলদিয়ার এই ছবিতে বাসিন্দারা আঙুল তুলেছেন পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার দিকে। আবার উল্টো ছবিও রয়েছে। ঘাটালের সাধারণ মানুষ বলছেন, প্রশাসনের সক্রিয়তায় অন্য বছরের তুলনায় কমই রয়েছে এ বারের শব্দ-দাপট।

কালীপুজোর সকাল থেকেই বৃষ্টি। সন্ধ্যার পর বৃষ্টি সামান্য ধরতেই পথে নেমেছিলেন হলদিয়ার মানুষ। সে সময়ই শুরু হয় শব্দবাজির দাপট। খোদ হলদিয়া থানা এলাকাতেই সবচেয়ে বেশি বাজি ফেটেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বাসিন্দারা। মাখনবাবুর বাজার, বন্দর আবাসন, পদ্মপুকুর, তেরোর মোড়-সহ একাধিক এলাকায় শব্দ বাজি ফেটেছে সন্ধে থেকে মাঝরাত পর্যন্ত। সবচেয়ে বেশি বাজি ফেটেছে হলদি নদীর তীরে। টাউনশিপের এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘রাত ১টা পর্যন্ত জানলা বন্ধ করে ঘরে বসে থাকতে হয়েছে শব্দবাজির দাপটে।’’

ব্যতিক্রম নয় ব্রজলাল চক, সুতাহাটা, চৈতন্যপুর, দুর্গাচকের মঞ্জুশ্রীও। শব্দ তাণ্ডবে কেঁপে উঠেছে এলাকা। শুধু রাতে নয়, বৃহস্পতি ও শুক্রবার সকালেও বাজি ফেটেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশের ঢিলেমিতেই এত বাজি ফেটেছে। তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, এই সব জোরাল আওয়াজের বাজি শহরে ঢুকল কী করে?

যদিও হলদিয়ার এসডিপিও তন্ময় মুখোপাধ্যায় দাবি করেছেন, ‘‘উন্নত মানের আতসবাজি অনেক উঁচুতে গিয়ে ফেটেছে। তারই আওয়াজ শোনা গিয়েছে।’’ তবে তাঁর আশ্বাস, নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।

তমলুকে আবার বাজির তাণ্ডব শুরু হয়েছে শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে। কালীপুজোর দিন রাতে তেমন শব্দ তাণ্ডব ছিল না বলেই জানিয়েছেন বাসিন্দারা। কিন্তু শুক্রবার বিকেলে বৃষ্টি থামতেই শুরু হয়েছে বাজি, পটকা ফাটানোর ধুম। সঙ্গে জোরাল মাইকের আওয়াজে অতিষ্ঠ তাঁরা। তমলুক শহর ও শহর সংলগ্ন এলাকায় একের পর এক শব্দ বাজি ফেটেছে সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে। সারা শহর জুড়ে শোনা গিয়েছে ডিজে বক্সের গমগমে শব্দ।

বার বার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি জেলা পুলিশ সুপারের সঙ্গে।

তবে ঠিক উল্টো ছবি দেখা গিয়েছে পাঁশকুড়া, মেচেদা, নন্দকুমার এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমায়। কালীপুজো বা পরের দিন শব্দবাজি বা ডিজে বক্সের তেমন তাণ্ডব শোনা যায়নি।

ঘাটােল শব্দ দূষণ রোধে প্রথম থেকেই কড়া অবস্থান ছিল পুলিশের। গত কয়েক দিনে মহকুমার তিনটি থানায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ৮০০ কিলোগ্রাম নিষিদ্ধ শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। সঙ্গে ছিল সতর্কতা— ডিজে বক্স বাজানো চলবে না। শর্ত না মানলে দেওয়া হয়নি পুজোর অনুমোদন।

কালীপুজোর রাতে শব্দের চেয়ে আতসবাজির রঙিন আলোই বেশি নজরে প়ড়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ২টোর পর থেকে ঘাটালে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। ফলে শুক্রবার পুজো উদ্যোক্তারা বিপাকে পড়েন। বহু ক্লাবেই নির্দিষ্ট অনুষ্ঠান বাতিল করতে হয়েছে।

বৃষ্টি আর ঝড়ো হাওয়ায় বাজি ফাটানোর তেমন হিড়িক চোখে পড়েনি কাঁথি মহকুমার বিভিন্ন এলাকাতেও।

(তথ্য: আনন্দ মণ্ডল, আরিফ ইকবাল খান, শান্তনু বেরা)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE