Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রৌঢ়কে খুনের পরে দেহ লোপাট, ধৃত ছেলে-বৌমা

পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া থানার আঁড়োর গ্রামে ওই দেহাংশ মিলেছিল গত ১৯ ফেব্রুয়ারি। তার তদন্তে নেমে আশপাশের বিভিন্ন থানায় যোগাযোগ করে পুলিশ।

হেফাজতে: গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শুভ ও বর্ষাকে। নিজস্ব চিত্র

হেফাজতে: গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শুভ ও বর্ষাকে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া ও পিংলা শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৮ ০৪:২৫
Share: Save:

দিন কয়েক আগে পাঁশকুড়ায় কাঁসাইয়ের পাড়ে মিলেছিল কাটা হাত-পা। সেই ঘটনার তদন্তেই সামনে এল ১৫ কিলোমিটার দূরে পিংলার একটি খুনের ঘটনা। প্রৌঢ়কে খুনের পরে টুকরো টুকরো করে কেটে দেহ লোপাটের অভিযোগে গ্রেফতার হল নিহতের ছেলে-বৌমা।

পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া থানার আঁড়োর গ্রামে ওই দেহাংশ মিলেছিল গত ১৯ ফেব্রুয়ারি। তার তদন্তে নেমে আশপাশের বিভিন্ন থানায় যোগাযোগ করে পুলিশ। জানা যায়, পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার গোবর্ধনপুরের রাত্রাপুরের বাসিন্দা নিখিল মাইতি (৫২) নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজ ডায়েরি করেছে তাঁর ছেলে শুভ মাইতি। খোঁজখবর করে পুলিশ জানতে পারে, নিখিলবাবুর নিখোঁজ হওয়া নিয়ে শুভ গ্রামবাসীদের অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছে। সন্দেহ হয় তদন্তকারীদের। শুভ ও তাঁর স্ত্রী বর্ষাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে আসে সত্যিটা।

পুলিশ সূত্রের খবর, জেরায় বর্ষা দাবি করেছে, শ্বশুরমশাই তার সঙ্গে অশালীন আচরণের চেষ্টা করত। তেমন এক মুহূর্তেই গত ১৪ জানুয়ারি নিখিলবাবুকে লক্ষ করে আনাজ কাটার ছুরি চালিয়ে দেয় সে। গলার নলি কেটে মারা যান নিখিলবাবু। শুভ বাড়িতে ফিরলে স্বামী-স্ত্রী মিলে দেহ লোপাটের ছক কষে।

শুভ ও বর্ষা পুলিশকে জানিয়েছে, ১৫ জানুয়ারি প্রথমে করাত জোগাড় করে তারা। তারপর নিখিলবাবুর হাত-পা কেটে বস্তায় ভরে বাইকে চাপিয়ে পাঁশকুড়ায় ফেলে দিয়ে আসে। শুভর শ্বশুরবাড়ি পাঁশকুড়াতেই। তবে মাথা-সমেত শরীরের বাকি অংশ আর কাছাকাছি ফেলার ঝুঁকি নেয়নি শুভ। ওই দেহাংশ বস্তাবন্দি করে ১৬ জানুয়ারি ডেবরায় জাতীয় সড়কে দাঁড়ানো ট্রাকে তুলে দিয়ে আসে সে। সেই দেহাংশের খোঁজ মেলেনি।

স্থানীয় সূত্রের খবর, স্ত্রী-বিচ্ছিন্ন ছিলেন নিখিলবাবু। স্ত্রী চলে যাওয়ার পরে ছেলে-বৌমার সঙ্গেই থাকতেন তিনি। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ছেলে-বৌমার সঙ্গে নিখিলবাবুর সম্পর্ক ভাল ছিল না। স্থানীয়দের দাবি, সম্পত্তির জন্যই বাবাকে খুন করেছে শুভ। পড়শি সমীরণ গুছাইত বলেন, ‘‘নিখিলবাবুর অনেক জমিজমা ছিল। তা নিয়ে ছেলের সঙ্গে অশান্তিও হত।’’

ধৃতক শুভ ও বর্ষাকে মঙ্গলবার তমলুক জেলা আদালতে হাজির করে ১০ দিনের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভি সলোমন নেসাকুমার বলেন, ‘‘মেয়েটি শ্বশুরের অশালীন আচরণের হাত থেকে বাঁচতে খুনের যে ব্যাখ্যা দিচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খুনের অন্য কারণ রয়েছে কিনা, তা-ও দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

guria murder case Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE