প্রতীকী ছবি।
সাঁওতালি ভাষা এবং অলচিকি লিপির প্রসারে উদ্যোগী হচ্ছে রাজ্য। অথচ আদিবাসী পড়ুয়াদের একাংশ অলচিকি হরফ পড়তেই পারে না। শনিবার ঝাড়গ্রামের একলব্য স্কুলে ভগিনী নিবেদিতার জন্মসার্ধশতবর্ষের অনুষ্ঠানে এই তথ্য জানান ঝাড়গ্রাম রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের সম্পাদক স্বামী শুভকরানন্দ। মন্ত্রী ও জনপ্রতিনিধিদের উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আবেদনও জানান তিনি।
২০১৬ সালের গোড়ায় আদিবাসী পড়ুয়াদের এই সরকারি স্কুলের দায়িত্ব রামকৃষ্ণ মিশনকে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে শুভকরানন্দের তত্ত্বাবধানে দু’বছরের মধ্যে স্কুলটির খোলনলচে বদলেছে। পড়াশোনা, খেলাধুলো-সহ নানা ক্ষেত্রে নজির গড়েছে ‘রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির’ (মিশনের দেওয়া নয়া নাম)।
এ দিন স্কুলের ‘বিবেকানন্দ সভাঙ্গন’-এর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতো, ঝাড়গ্রামের বিধায়ক সুকুমার হাঁসদা, স্কুলশিক্ষা দফতরের প্রধান সচিব দুষ্মন্ত নারিয়ালা, আদিবাসী উন্নয়ন দফতরের প্রধান সচিব সঞ্জয়কুমার থাড়ে, ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক
আর অর্জুন প্রমুখ।
তাঁদের সামনেই শুভকরানন্দ বলেন, “স্কুলের দায়িত্ব নিয়ে দেখছি, ৬০ শতাংশ আদিবাসী ছাত্রছাত্রী অলচিকি হরফ পড়তে পারছে না। সাঁওতালি তাদের মাতৃভাষা। ভাষার পাশাপাশি তাদের হরফ চিনতে শেখার ব্যবস্থাও করা দরকার।” এ দিকে, বেশিরভাগ পড়ুয়াই প্রথম ভাষা হিসেবে ইংরেজি বা বাংলা নিচ্ছে। সাঁওতালি নেওয়ার সংখ্যা কম। শুভকরানন্দ বলেন, ‘‘সরকার অনেক চেষ্টা করছে। কিন্তু পড়ুয়ারা তাদের নিজের ভাষার হরফই যদি চিনতে না পারে, তাহলে তো সেই হরফ তাদের কাছে ছবির মতোই হয়ে গেল।’’
সচিব সঞ্জয়বাবু জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দু’মাসের মধ্যে দশম ও একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যবইগুলি বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সাঁওতালিতে অনুবাদ করানো হবে। বেলপাহাড়ির সরকারি আদিবাসী আবাসিক বালিকা বিদ্যালয়টির দায়িত্ব নেওয়ার জন্য মিশন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান তিনি। স্কুলের উন্নতি প্রসঙ্গে দুষ্মন্তবাবু বলেন, “দশ বছর আগে যখন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক ছিলাম, তখন এই স্কুল এমন ছিল না। আজ এখানে এসে পুরো অন্য চেহারা দেখলাম।” সঞ্জয়বাবু মনে করিয়ে দেন, এটি এখন মডেল স্কুল। স্কুলের উদয় মুর্মু এ বছর উচ্চ মাধ্যমিকে সাঁওতালিতে রাজ্য প্রথম হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy