কোথাও রান্নাঘর নেই। কোথাও নেই পাখা। কোথাও আবার টিউশনের জন্য আলাদা ঘর নেই। পশ্চিম মেদিনীপুরের লোধা আশ্রমগুলির এই সব সমস্যা মেটাতে সম্প্রতি জেলার নতুন অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ আধিকারিক সন্দীপ টুডু আশ্রমের সুপারদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। নিজে চোখে সমস্যা যাচাই করতে কয়েকটি লোধা আশ্রম পরিদর্শনেও যান তিনি। তারপর সন্দীপবাবুর আশ্বাস, “পরিকাঠামো রয়েছে। তবে ছোটখাটো কিছু সমস্যাও রয়েছে। সেগুলি যাতে দ্রুত সমাধান করা যায় সে জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
পিছিয়ে পড়া আদিম জনজাতি লোধাদের মূল স্রোতে ফেরাতে নানা পদক্ষেপ করেছে সরকার। তার মধ্যে অন্যতম শিক্ষার বিস্তার ঘটানো। সেই লক্ষ্যেই জেলার নানা প্রান্তে তৈরি করা হয়েছিল লোধা আশ্রম। এখানে লোধা সম্প্রদায়ের কচিকাঁচাদের নিখরচায় থাকা, খাওয়া ও পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। জেলায় প্রায় ৪৬টি লোধা আশ্রম রয়েছে। কোথাও ২০ জন, কোথাও ৩০ জন পড়ুয়া থাকে। কিন্তু বেশিরভাগ লোধা আশ্রমই এখন বেহাল।
সাঁতরাপুর লোধা আশ্রমের সুপার হরেকৃষ্ণ দোলুইয়ের যেমন অভিযোগ, “আশ্রমে পাখা নেই। ছোট ছোট পড়ুয়াদের গরমে ভীষণ কষ্ট হয়।” সাতশোল লোধা আশ্রমের সুপার অসিত পণ্ডার আবার নালিশ, “পাঁচিল নেই। বাচ্চাদের আশ্রম চত্বরে রাখাই কঠিন।’’ কুলটিকরি বালিকা লোধা আশ্রমের সুপার ঝর্না দাস জানালেন, সেখানে রান্নাঘর নেই। লো-ভোল্টেজের কারণে সব সময় নলকূপ থেকে প্রয়োজনীয় পানীয় জলও তোলা যায় না। কুলটিকরি লোধা আশ্রম আবার কিছুদিন আগে ভবন সংস্কারের অর্থ পেয়েছিল। কাজ দেখভালের দায়িত্বে থাকা রঞ্জিত দাস জানালেন, টাকা খরচ করে কাজ হয়ে গেল। কিন্তু তারপরেও দেখা যাচ্ছে বৃষ্টি হলে ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ে। লোধা শবর কল্যাণ সমিতির সম্পাদক বলাই নায়েকও বলছেন, ‘‘সরকার আমাদের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার মানোন্নয়নে আশ্রম তৈরি করেছেন, এটা ঠিক। কিন্তু কিছু উদাসীনতার কারনে অনেক বিষয়ে পড়ুয়ারা বঞ্চিত হচ্ছে।’’
অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর অবশ্য জানিয়েছে, সমস্যা বিশদে জানতে লোধা আশ্রমের সকলকে নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। সমস্যা মেটাতে বেশ কিছু পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy