Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

আইআইটি চত্বরে বন্ধ দোকান, ক্লাস ছন্দেই

দোকানবাজার, ব্যাঙ্ক বন্ধ। ঝাঁপ বন্ধ মেলারও। তবে শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা বন্‌ধে আইআইটি-তে ক্লাস হল রুটিন মেনেই।

দোকানপাট ছিল বন্ধ। —নিজস্ব চিত্র।

দোকানপাট ছিল বন্ধ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৩৫
Share: Save:

দোকানবাজার, ব্যাঙ্ক বন্ধ। ঝাঁপ বন্ধ মেলারও। তবে শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা বন্‌ধে আইআইটি-তে ক্লাস হল রুটিন মেনেই।

নির্মাণকাজ চলাকালীন এক শ্রমিকের মৃত্যুর পরে আইআইটি চত্বরে শ্রমিক সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তারপরই শ্রমিকদের যৌথ কমিটি বন্‌ধ ডেকেছিল মঙ্গলবার। আইআইটি চত্ত্বরে সব দোকানপাট, ব্যাঙ্ক বন্ধ ছিল। বন্ধ ছিল স্টাফ ক্লাবে চলা বুটিকের প্রদর্শনী ও মেলা। কাজে যোগ দেননি কয়েক হাজার ঠিকাশ্রমিক। ফলে হস্টেল, সাফাই, বাগান পরিষ্কার, নির্মান-সহ বিভিন্ন বিভাগের কাজে প্রভাব পড়ে। তবে আইআইটি-র বিভিন্ন বিভাগে স্বাভাবিক ভাবেই ক্লাস হয়েছে। এসেছিলেন অধ্যাপক ও স্থায়ী কর্মীরা। আইআইটি চত্বরের স্কুলগুলিতেও স্বাভাবিক পড়াশোনা হয়েছে।

কয়েকবছর ধরেই আইআইটি-র বিভিন্ন হলে (হস্টেল) ঠিকাকর্মীদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিরোধ চলছে শ্রমিক সংগঠনগুলির। গত বছরের শেষে গড়ে উঠেছে যৌথ কমিটি। নির্মাণ শ্রমিকদের সুরক্ষা নিয়েও চাপ বাড়াচ্ছে কমিটি। বস্তুত গত তিন বছরে ৫ জন নির্মান শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে ক্যাম্পাসে। ২০১৭ সালে লিফটে কাজ করার সময়ে পড়ে মৃত্যু হয় তিন শ্রমিকের। তারপর গত রবিবার অতিথি নিবাসের সম্প্রসারিত ভবনে কাজ করার সময় মৃত্যু হয় এক ওয়েল্ডারের। জখম হন আরও দুই শ্রমিক।

এর প্রতিবাদেই এ দিন ১২ ঘন্টার আইআইটি বন্‌ধ ডাকা হয়। প্রাথমিকভাবে শিক্ষাক্ষেত্রেও বন্‌ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরে অবশ্য প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে শিক্ষাক্ষেত্রকে বন্‌ধের আওতা থেকে বাদ দেওয়া হয়। তাই আইআইটিতেও হয়েছে ক্লাস। বন্‌ধ ঘিরে অশান্তিও হয়নি। পুলিশ ছিল যথেষ্ট। কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের গবেষক পড়ুয়া বিশ্বরূপ মণ্ডল বলেন, “দোকানপাট বন্ধ থাকলেও আমাদের পঠপাঠনে তেমন সমস্যা হয়নি। প্রাতরাশ নিয়ে সামান্য সমস্যা হয়েছিল। পরে অবশ্য নিয়মমাফিক খাবার পেয়েছি।” এ ক্ষেত্রে আইআইটি-র স্থায়ী কর্মীদের দিয়ে পরিস্থিতি সামালানো হয়।

তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের আইআইটি শাখার সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী বলেন, “শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আমরা বন্‌ধ ডেকেছিলাম। শিক্ষাক্ষেত্রকে বন্‌ধের আওতার বাইরে রেখেছিলাম। তবে বিভিন্ন ক্ষেত্রের ঠিকাকর্মীরা কাজে যোগ দেয়নি।” বন্‌ধের সমর্থনে হয়েছে মিছিলও। সেই মিছিল থেকে শ্রমিকদের সমস্যা মানা না হলে জোরালো আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। যৌথ কমিটির আহ্বায়ক জহরলাল পাল বলেন, “ঠিকা শ্রমিক ও হলকর্মীদের দাবি পূরণের পাশাপাশি সুরক্ষার বন্দোবস্ত না হলে বড়সড় আন্দোলনে যাব।”

বন্‌ধ নিয়ে আইআইটির রেজিষ্ট্রার ভৃগুনাথ সিংহের প্রতিক্রিয়া, “মৃত্যু নিয়ে আমাদের সমবেদনা রয়েছে। কিন্তু বন্‌ধের নামে হলে ঢুকে জোর করে কর্মীদের কাজ বন্ধ করতে বলা হয়েছে। এটা ঠিক নয়। তবে বন্‌ধের কোনও প্রভাব আমাদের প্রতিষ্ঠানে পড়েনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE