Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

মালগাড়ির ফাঁক দিয়ে গলে পারাপারের চেষ্টা, ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু ছাত্রের

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আইটিআই পাশ করার পর বাড়ির লোকজনের চাপে বীরভূমের বোলপুরে সম্প্রতি পলিটেকনিক কোর্সে ভর্তি হন। বাড়ি থেকে বাইরে থাকতে নারাজ অনির্বাণ পরিবারের চাপে বোলপুরে থেকেই পড়তে বাধ্য হয়েছিলেন।

অনির্বাণ কর।

অনির্বাণ কর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৮ ০০:০১
Share: Save:

শনিবার রাতে পাঁশকুড়া-তমলুক শাখার রঘুনাথবাড়ি স্টেশন থেকে এক ছাত্রের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়েছে। রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম অনির্বাণ কর (২১)। তাঁর বাড়ি স্থানীয় পূর্ব ইটারা গ্রামে।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আইটিআই পাশ করার পর বাড়ির লোকজনের চাপে বীরভূমের বোলপুরে সম্প্রতি পলিটেকনিক কোর্সে ভর্তি হন। বাড়ি থেকে বাইরে থাকতে নারাজ অনির্বাণ পরিবারের চাপে বোলপুরে থেকেই পড়তে বাধ্য হয়েছিলেন। পুজোর ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। গত শুক্রবার সকালে তমলুকের ডিমারিতে পিসির বাড়িতে যান তিনি। বিকেল ৩ টে নাগাদ বাড়ি ফিরে আসেন। রবিবার হাওড়া স্টেশন থেকে রাতের ট্রেনে তাঁর বোলপুর ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। শনিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে ব্যাগপত্র গুছিয়ে রেখে বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন বলে তিনি রঘুনাথবাড়ি স্টেশনে আসেন। যদিও তাঁর বন্ধুদের দাবি, শনিবার সন্ধ্যায় গ্রামে জলসা ছিল। তাঁরা সেখানে থাকার জন্য রঘুনাথবাড়ি স্টেশনে যাননি।

স্টেশনে এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, বন্ধুদের দেখতে না পেয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালগাড়ির নীচের ফাঁক দিয়ে গলে লাইন পার হচ্ছিলেন ওই যুবক। সেই সময় আচমকা মালগাড়িটি চলতে শুরু করলে কাটা পড়েন তিনি। ধড় থেকে আলাদা হয়ে যায় অনির্বাণের মাথা।

রাতে ছেলে বাড়ি না ফেরায় সকালে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর শুরু করেন বাড়ির লোকজন। রবিবার সকালে হলদিয়া জিআরপির ওসি সন্দীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মালগাড়ির তলা দিয়ে লাইন পার হতে গিয়েই কাটা পড়েন অনির্বাণ। তবে এটি দুর্ঘটনা না আত্মহত্যা তা বোঝা যাবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই।’’

এটা দুর্ঘটনা না আত্মহত্যা তা নিয়ে ধন্দে পরিবারও। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় নিজের ৩টি মোবাইলই স্মার্ট লক করে বাড়িতে রেখে যান অনির্বাণ। কেন তিনি একটাও মোবাইল সঙ্গে নেননি তা নিয়েই তৈরি হয়েছে ধন্দ। তা ছাড়া মোবাইল ফোনগুলি কেন তিনি লক করে রাখলেন তা নিয়েও প্রশ্ন জেগেছে। মৃতের বাবা অরুণকান্তি কর বলেন, ‘‘শুক্রবার পিসির বাড়ি থেকে ফিরেও বেশ হাসিখুশিই ছিল। কী ভাবে এমনটা ঘটে গেল বুঝতে পারছি না।’’

আইটিআই পাস করার পরও চাকরি না পেয়ে ফের বাড়ির চাপে পলিটেকনিক পড়া অনির্বাণের মধ্যে হতাশা তৈরি করেছিল বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে পুলিশ। তার জেরেই এই আত্মহত্যা বলে পুলিশের অনুমান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE