সুরজকুমার মাইতি। নিজস্ব চিত্র
মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা চলাকালীন চোখে হঠাৎ আঁধার নেমেছিল। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা দিতেই পারেনি সুরজকুমার মাইতি। কিন্তু হার মানেনি পূর্ব চিল্কা লালচাঁদ হাইস্কুলের ছাত্রটি। আঁধার ঘুচিয়ে সে-ই এবার স্কুলের সবচেয়ে উজ্জ্বল ছাত্র। এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৬৬২ নম্বর পেয়ে সে স্কুলের মধ্যে প্রথম হয়েছে। পরীক্ষায় সহায়ক হিসেবে কোনও ‘রাইটার’ নেয়নি।
পাঁশকুড়ার রাধাবল্লভচক এলাকার পূর্ব চিল্কা গ্রামে বাড়ি সুরজের। বাবা ধর্মদাস হাওড়ার রামরাজাতলায় মাছের আড়তে কাজ করতেন। লকডাউনের বন্ধ আড়ত। দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই ছিলই। এরই মধ্যে বিপর্যয় ২০১৮ সালে। সুরজ তখন দশম শ্রেণিতে। চোখের দৃষ্টি ক্রমশ ঝাপসা হয়ে আসতে থাকে তার। দৃষ্টি কমে আসায় ওই বছর টেস্ট পরীক্ষার প্রথম দিনে শুধুমাত্র নিজের নাম লিখে খাতা জমা দেয় সে। ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয় তাকে। চিকিৎসক জানিয়ে দেন, সুরজ গ্লুকোমা আক্রান্ত। তার একটি চোখের দৃষ্টিশক্তি কার্যত নষ্ট। অস্ত্রোপচারের পরে বাম চোখে দেখতে পেলেও দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিকের থেকে কম। প্রায় তিন মাস পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পায় সুরজ। ততদিনে ২০১৯ সালের মধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়ে গিয়েছে।
এক চোখের ভরসাতেই শুরু হয় পড়াশোনা। এবারে ফলের পরে সে বলছে, ‘‘চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, চার বছর পরে দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে। তাই সময় নেই। চার বছরের মধ্যে নিজেকে তৈরি করে বাবা-মায়ের পাশে দাঁড়াতে হবে।’’
উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে |
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy