গোকুলপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। ইনসেটে, স্কুলচত্বরে পড়ে আছে প্লাস্টিকের গ্লাস। নিজস্ব চিত্র
সূর্য ডুবলে স্কুলচত্বরে বসে যায় মদের আসর। স্কুলের বারন্দা থেকে মাঠ যত্রতত্র ছড়িয়ে মদের খালি বোতল, গ্লাস। সকালে স্কুলের বারান্দা থেকে পড়ুয়ারা খালি মদের বোতল, গ্লাস পরিষ্কার করলে তবেই শুরু করা যায় স্কুল।
স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, দিনের পর দিন এমন অবস্থা চললেও স্থানীয় পঞ্চায়েত-প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয় না। ফলে অসামাজিক পরিবেশে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করতে হচ্ছে। পরিস্থিতি এমনই যে, এ বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ জানাতেও সাহস পাচ্ছেন না।
পটাশপুর থানার শেষ সীমানা এবং এগরা কসবা পঞ্চায়েত এলাকা শুরুর এলাকায় গোকুলপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। তবে ব্লকের আর পাঁচটা প্রাথমিক স্কুলের চেয়ে এই স্কুলের পরিবেশ ভিন্ন প্রকৃতির। সন্ধ্যা নামলেই গোটা স্কুল চত্বর সমাজবিরোধীদের দখলে চলে যায়। মদ্যপদের দাপটে স্কুলের চারপাশে বাঁশের বেড়া কবেই উধাও হয়েছে। এদিক ওদিক হেলানো অবস্থায় পড়ে রয়েছে কয়েকটা সিমেন্টের খুঁটি। এলাকার মানুষের অভিযোগ সন্ধ্যা নামলেই তাঁরা আতঙ্কে থাকেন। কারণ মদ্যপরা জড়ো হয় স্কুলচত্বরে। স্কুলে জলের সুব্যবস্থা এবং খোলামেলা পরিবেশের সুযোগ নিয়ে রাতে বসে মদ্যপানের আসর। যার ফল ভুগতে হয় পরদিন স্কুলে আসা পড়ুয়াদের। স্কুলে এসে ক্লাস শুরুর আগে স্কুলচত্বর থেকে মদের বোতল, গ্লাস, মাংসের হাড় তুলে ফেলে পরিষ্কারের ভার পড়ে কচি কচি হাতগুলোর উপর। মদ্যপদের দৌরাত্ম্য থেকে রেহাই পায়নি স্কুলের জলের ট্যাপ কলও। স্কুলের একাধিক ট্যাপকল ভাঙা। বাধ্য হয়ে জলের ট্যাঙ্ক সরিয়ে দিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ৪০ জন। শিক্ষক শিক্ষিকা আছেন তিনজন। গোকুলপুর, কৈঁথোড়, দক্ষিণ খাড় সহ পটাশপুর এবং এগরা ব্লকের একাধিক গ্রামের পড়ুয়ারা এই স্কুলে আসে।
স্কুল থেকে এবারই চতুর্থ শ্রেণিতে পাশ করেছে সৌরভ জানা (নাম পরিবর্তিত)। তার কথায়, ‘‘স্কুলে এলে রোজ মদের বোতল, গ্লাস স্কুলের বারান্দা থেকে পরিষ্কার করতে হত। তার পরে ক্লাস শুরু হত।’’
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা প্রণতী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘স্কুল চলাকালীন কোনও সমস্যা হয় না। কিন্তু রাতে স্কুলচত্বরে যে অসামাজিক কার্যকলাপ চলে প্রচিদিন সকালে স্কুলে এলে তা টের পাওয়া যায়। পড়ুয়াদের স্বার্থে স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে অনুরোধ করি।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দুই থানার প্রান্ত এলাকা হওয়ায় খবর দিলেও পুলিশ আসে না। ফলে নিশ্চিন্তে থাকে সমাজবিরোধীরা।
এ বিষয়ে এগরা-১ এর বিডিও বংশীধর ওঝা বলেন, ‘‘স্কুলে এই ধরনের সমস্যা আমাদের জানা ছিল না। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy