Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

খোলা স্কুল-অফিস, বাস না পেয়ে দুর্ভোগ

সকাল থেকে সরকারি বাস চললেও বেসরকারি বাসের দেখা মিলেছে অনেক কম। বাজার-দোকান, সরকারি অফিস, স্কুল-কলেজ খোলা ছিল অন্যান্য কাজের দিনের মতোই। তমলুকে জেলা আদালত খোলা থাকলেও আইনজীবীরা শুনানিতে অংশ না নেওয়ায় আদালতে এসে হয়রান হয়েছেন অনেকেই।

তমলুক শহরে খোলা রয়েছে দোকানপাট। নিজস্ব চিত্র।

তমলুক শহরে খোলা রয়েছে দোকানপাট। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:১৩
Share: Save:

স্কুল-কলেজ, দোকানপাট অফিস খোলা ছিল। অথচ সেখানে পৌঁছনোর জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাস না পেয়ে ভুগলেন বহু মানুষ। পেট্রোপণ্যের লাগাতার মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কংগ্রেস ও বামেদের ডাকা ভারত বন্‌ধে সোমবার এমনই মিশ্র প্রভাব দেখা গেল পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক, কাঁথি, এগরা মহকুমা-সহ জেলার বিভিন্ন অংশে।

সকাল থেকে সরকারি বাস চললেও বেসরকারি বাসের দেখা মিলেছে অনেক কম। বাজার-দোকান, সরকারি অফিস, স্কুল-কলেজ খোলা ছিল অন্যান্য কাজের দিনের মতোই। তমলুকে জেলা আদালত খোলা থাকলেও আইনজীবীরা শুনানিতে অংশ না নেওয়ায় আদালতে এসে হয়রান হয়েছেন অনেকেই। তমলুকের প্রধান ডাকঘরে বন্‌ধের সমর্থনে এসইউসি কর্মী-সমর্থকেরা এ দিন বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভকারীরা ডাককর্মীদের ঢুকতে বাধা দিলে পুলিশের হস্তক্ষেপে কর্মীরা অফিসের ভিতরে ঢোকেন। কিন্তু ডাকঘরের প্রধান দরজা বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হন। বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক খোলা থাকলেও গ্রাহকদের উপস্থিতি ছিল কম। কোলাঘাট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে অবশ্য স্বাভাবিক কাজ হয়েছে। হাওড়া-খড়্গপুর, পাঁশকুড়া-হলদিয়া এবং তমলুক-দিঘা রেলপথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল। হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য ও জাতীয় সড়ক, তমলুক-পাঁশকুড়া, নন্দীগ্রাম-মেচেদা, শ্রীরামপুর- মেচেদা রুটে বেসরকারি বাস অন্যদিনের চেয়ে ছিল অনেক কম।

তবে সোমবার বন্‌ধ থাকার কারণে শনিবার থেকে টানা তিনদিনের ছুটিতে দিঘায় পর্যটকদের ঢল নেমেছিল। অধিকাংশ হোটেল ভর্তি ছিল। খোলা ছিল দোকানপাট। বন্‌ধের তেমন প্রভাব দেখা যায়নি। কাঁথিতে এদিন সুপার মার্কেটের চিত্র ছিল অন্যদিনের মতোই। সরকারি শহরে বাস-সহ অন্য যানবাহনও চলেছে যথারীতি। তবে কিছু দোকানপাট বন্ধ ছিল। মহকুমার প্রত্যন্ত গ্রামগুলির অনেক রুটে এদিন ট্রেকার চলাচল বন্ধ ছিল। দিঘা নন্দকুমার ১১৬ বি জাতীয় সড়কে এদিন দইসাইয়ের কাছে সিপিএমের কর্মীরা এদিন বন্‌ধের সমর্থনে অবরোধ করেন। মারিশদা থানার পুলিশ এসে অবরোধ তোলে।

এগরা মহকুমায় এদিন কাজ বেরিয়ে বাস পেয়ে ভুগেছেন অনেকেই। সকাল থেকে মেদিনীপুর-কাঁথি রুটে এগরা থেকে কাঁথি কিংবা রামনগর, মেদিনীপুর, আসানসোল, গোয়ালতোড়, ঝাড়গ্রাম, টাটাগামী রাস্তায় দু’য়েকটি বেসরকারি বাস চললে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বন্ধ হয়ে যায়। এগরা মহকুমায় প্রায় ২৫০ ট্রেকার এবং ৩০০ বেসরকারি বাস চলেনি। বালিচকের বাসিন্দা শান্তনু সাউ বলেন, ‘‘এগরা আসার জন্য রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ বাসের জন্য অপেক্ষা করেও বাস না পেয়ে বাধ্য হয়ে বেশি ভাড়া দিয়ে টোটোয় এগরা পৌঁছই।

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে , বনধের সমর্থনে কয়েকটি জায়গায় সড়ক অবরোধ ও অফিসের সামনে পিকেটিং হলেও বড় কোন অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। জেলা বাস ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মহম্মদ সামসের আরেফিন বলেন, ‘‘বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধের চেষ্টা হলেও জেলায় প্রায় ৬০ শতাংশ বাস চলেছে।’’

জেলা কংগ্রেস সভাপতি আনোয়ার আলির দাবি, বন্‌ধে মানুষ স্বতস্ফূর্তভাবে সাড়া দিয়েছেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহির দাবি, ‘‘জেলায় ৯০ শতাংশ বেসরকারি বাস চলেনি। সরকারি বাস চললেও যাত্রী ছিল না। এদিন অফিস, স্কুল-কলেজ খোলা রেখে রাজ্য সরকার বিরোধিতা করলেও মানুষ বন্‌ধ সমর্থন করেছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Strike Suffering Bus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE