গত কয়েক বছর ধরে ময়না তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বলেই পরিচিত। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের এই এলাকাই বিভিন্ন কারণে তেতে উঠছে। কখনও পঞ্চায়েতের দখল ঘিরে বাধছে সংঘর্ষ, কখনও আবার যুবকের খুনে অভিযুক্তকে আড়াল করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে। ময়নার এই পরিস্থিতি শাসক শিবিরে উদ্বেগ বাড়িয়েছে বলে অভিমত রাজনৈতিক মহলের।
এই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আগামী ১৪ জানুয়ারি ময়নায় সভা করবেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। ওই সভায় অন্তত ২৫ হাজার মানুষের উপস্থিতির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব। সভাটি আগামী ১৯ জানুয়ারি বিগ্রেডে তৃণমূলের সভার সমর্থনে ডাকা হলেও রাজনৈতিক মহলের মতে, ময়নায় নিজেদের জমি শক্ত করতেও সভায় জোর দেবেন পরিবহণ মন্ত্রী। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই ময়নাই সভা করেন বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ময়নায় রাজনৈতিক পালাবদলের শুরু হয়েছিল ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে। ২০১১ সালের বিধানসভা থেকে প্রতিটি নির্বাচনেই ময়নায় তৃণমূলের আধিপত্য বজায় থাকে। কয়েক মাস আগে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্লকের ১৫৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের মধ্যে ১৪৮টিতে জেতে তৃণমূল। তবে এর পরেও বাকচা পঞ্চায়েতে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল দেখা যায়। প্রধান পদ নিয়ে তৃণমূলের দুই নেতার লড়াই সামনে আসে। ওই বিষয়টি হাতিয়ার করে বিরোধী দল বিজেপি ফায়দা তুলেছে বলে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের অভিমত। তাদের দাবি, সেই ব্যাপারটি আটকাতে এবং দিলীপ ঘোষের জনসভার জবাব দিতে আগামী ১৪ জানুয়ারি সভা করার জন্য ময়নাকে বেছেছে তৃণমূল।
যদিও বাকচা এবং গড় ময়না-কাণ্ডের জেরে দলের সাংগঠনিকশক্তি দূর্বল হয়েছে, এ কথা মানতে চাননি ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সুব্রত মালাকার। তিনি বলেন, ‘‘বাকচায় বিজেপি বহিরাগত দুষ্কৃতীদের সাহায্যে আক্রমণ চালাচ্ছে। আর গড় ময়নার ঘটনা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক। স্থানীয়দের দাবি মেনে পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে। ময়নায় স্থানীয় মানুষের সমর্থন আমাদের প্রতি রয়েছে। পরিবহণমন্ত্রীর জনসভায় ব্লকের প্রতি এলাকা থেকে আসা বিপুল সংখ্যক মানুষ তা-ই প্রমাণ করবেন।’’
অন্য দিকে বিজেপির তমলুক জেলা সভাপতি প্রদীপ দাসের বক্তব্য, ‘‘ময়না থেকেই জেলায় বিজেপির উত্থান শুরু হয়েছে। তাই প্রশাসন অনুমতি না দিলেও দিলীপবাবুর সভায় বিপুলসংখ্যক মানুষের ভিড় হয়েছে। তৃণমূল পুলিশ-প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে দমনের চেষ্টা করলেও বিজেপি’র প্রতি মানুষের সমর্থন বাড়ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy