মমতার সঙ্গে তন্ময়। ফাইল চিত্র
পছন্দসই পদ না পাওয়ায় তৃণমূল নেতাদের ইস্তফার ধারা অব্যাহত জঙ্গলমহলে। ব্লকের যুব সভাপতির পদ হারাতে হচ্ছে জেনে আগেই নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছিলেন। সেই সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়তেই জেলা কমিটির সদস্য পদ থেকেও ইস্তফা দিলেন লালগড় ব্লক যুব তৃণমূলের সদ্য প্রাক্তন সভাপতি তন্ময় রায়।
লালগড় ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে তন্ময়কে ৯৮ জন সদস্যের অন্যতম হিসেবে রাখা হয়েছে। এই ‘অসম্মান’ মানতে না পেরেই তন্ময় জেলা কমিটির সদস্যপদে ইস্তফা দিয়েছেন। শুক্রবার জেলা সভাপতি দুলাল মুর্মু, জেলা চেয়ারম্যান বিরবাহা সরেন, জেলার দুই কো-অর্ডিনেটর অজিত মাহাতো ও উজ্জ্বল দত্তের কাছে একযোগে ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন তিনি।
নিজের দলীয় প্যাডে ছাপানো ‘সভাপতি’ কথাটি কেটে তন্ময় লিখেছেন, ‘শহিদের রক্তে রাঙা নেতাইয়ের পবিত্র ভূমিতে শপথ নিয়েছিলাম, সিপিএমের অস্তিত্ব মুছে দেব। সেই কাজে আমরা সফল। ২০১১ সালে মা-মাটি-মানুষের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে বিনপুর-১ (লালগড়) ব্লকে যুব সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কর্তব্যে অবিচল থেকে ৯ বছর ধরে সেই দায়িত্ব পালন করেছি। এখন দেখলাম আমাকে অব্যাহতি দিয়ে জেলা কমিটির সদস্য করা হয়েছে। এতে আমি চরম অসম্মানিত বোধ করছি।’ পাশাপাশি তিনি এ-ও লিখেছেন, ‘‘আমরা জঙ্গলমহলবাসী জানি, অশুভশক্তির বিনাশ ঘটিয়ে ‘জঙ্গলমহলের মুক্তিসূর্য’ চির উজ্জ্বল থাকবে।’
‘জঙ্গলমহলের মুক্তিসূর্য’ শব্দবন্ধটি নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে চর্চা শুরু হয়েছে। এ ক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারীর প্রসঙ্গ টানছেন দলেরই অনেকে। গত ৩০ জুন হুল দিবসে রামগড়ে আদিবাসী ক্লাবের অনুষ্ঠানে শুভেন্দু যখন এসেছিলেন, তখনও মঞ্চে শুভেন্দুর পিছনে তন্ময়কে দেখা গিয়েছিল। তন্ময় যদিও এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি নন। তিনি বলছেন, ‘‘দলের কাজ করে প্রতিদানে অসম্মান পেলাম। কোনও পদ আর দরকার নেই। দলের কর্মী হয়েই থাকব।’’ তবে তন্ময়ের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি দুলাল।
বছর আটত্রিশের তন্ময় নেতাইয়ের বাসিন্দা। বাম আমলে লালগড় ব্লক তৃণমূল সভাপতি বনবিহারী রায়ের হাত ধরে তৃণমূলে যুক্ত হন। ২০০৯-এ শুভেন্দু লালগড় থেকে যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন, তার অন্যতম সৈনিক ছিলেন তন্ময়। নেতাই-আন্দোলন পর্বে তিনি তৃণমূল নেত্রীর নজরে পড়েন। রাজ্যে পালাবদলের পরই তন্ময়কে লালগড় ব্লক যুব তৃণমূলের দায়িত্ব দেন মমতা। গত ৩ সেপ্টেম্বর জেলার পদাধিকারীদের প্রাথমিক তলিকা ফাঁস হয়ে গেলে জানা যায়, লালগড় ব্লক যুব সভাপতি হচ্ছেন প্রশান্ত রাউত নাম ছিল। এরপরই নিষ্ক্রিয় হয়ে যান তন্ময়। তবে বুধবার চূড়ান্ত তালিকায় দেখা যায় ব্লক যুব সভাপতি হয়েছেন ছত্রধর মাহাতোর প্রাক্তন সঙ্গী রাজু হাঁসদা। বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও রাজু অবশ্য এ দিন ফোন ধরেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy