Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

সচিনকে চিঠি লেখা স্যর লিখলেন বদলির চিঠি

পিংলার ক্ষীরাই শহিদ-স্মৃতি হাইস্কুলে করণিক পদে কর্মজীবনের শুরু। এরপর ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে গোপীবল্লভপুরের এই স্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদে দায়িত্ব নেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, মাত্র আড়াই বছরে স্কুলের ভোল বদলে দিয়েছেন হেডস্যর।  

ছাত্রাবাসের সামনে দাঁড়িয়ে তরুণকুমার চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র

ছাত্রাবাসের সামনে দাঁড়িয়ে তরুণকুমার চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোপীবল্লভপুর শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৮ ০৭:০০
Share: Save:

তাঁর চিঠি পেয়েই আদিবাসী ছাত্রাবাস তৈরির জন্য টাকা পাঠিয়েছিলেন রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ সচিন তেন্ডুলকর। ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের সেই আশুই পল্লিমঙ্গল বিদ্যাপীঠ উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক তরুণকুমার চক্রবর্তী বদলি চেয়ে দরখাস্ত দিলেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায় বাড়ির কাছে স্কুল যেতে চান বলেও জানিয়েছেন তিনি।

পিংলার ক্ষীরাই শহিদ-স্মৃতি হাইস্কুলে করণিক পদে কর্মজীবনের শুরু। এরপর ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে গোপীবল্লভপুরের এই স্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদে দায়িত্ব নেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, মাত্র আড়াই বছরে স্কুলের ভোল বদলে দিয়েছেন হেডস্যর।

স্কুলের দায়িত্ব নিয়েই আদিবাসী ছাত্রাবাস তৈরির জন্য ঝাড়গ্রামের সাংসদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এরপর টাকা চেয়ে সরাসরি রাজ্যসভার তৎকালীন সাংসদ সচিন তেন্ডুলকরকে চিঠি লিখেছিলেন তিনি। স্কুলের ছাত্রাবাস তৈরির জন্য ২০ লক্ষ টাকা সাংসদ তহবিল থেকে বরাদ্দ করে দেন সচিন। সেই টাকায় ছাত্রাবাস তৈরি হয়েছে। এখানেই থেমে থাকেননি তরুণবাবু। এ বার ছাত্রীদের হস্টেল তৈরির জন্য ছোটাছুটি করছেন তরুণবাবু। যুবকল্যাণ দফতরের টাকায় স্কুলে মিনি ইন্ডোর স্টেডিয়াম তৈরির প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।

তরুণবাবুর বাড়ি পিংলার নয়া এলাকায়। তরুণবাবুর দাবি, বাড়িতে মা অসুস্থ। ছেলে ও মেয়ে কর্মসূত্রে কর্নাটকের বেঙ্গালুরু ও কলকাতায় থাকে। আশুই থেকে পিংলায় নয়া-র দূরত্ব প্রায় ১২০ কিলোমিটার। সেই কারণে বদলি চেয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে আবেদনের প্রস্তুতি শুরু করেছি। তাঁর কথায়, ‘‘কারও বিরুদ্ধে আমার কোনও ক্ষোভ নেই। পড়ুয়া ও এলাকাবাসীর ভালবাসায় আমি অভিভূত।”

হেডস্যরের বদলির আবেদনের সিদ্ধান্ত শুনে বিস্মিত ছাত্র সুশান্ত সেনাপতি সুব্রত সেনাপতি, ছাত্রী সোমা দত্তরা। তাদের কথায়, “আচমকা স্যার কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন বুঝতে পারছি না।” এলাকা কয়েকশো বাসিন্দা গণস্বাক্ষর করে স্যার যাতে বদলি না নেন সে জন্য স্কুল শিক্ষা দফতরে আবেদন করেছেন। স্কুলের সভাপতি কৃষ্ণগোপাল সেনাপতি বলেন, “ওনাকে আমরা ছাড়তে চাইছি না। কিন্তু উনি ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে বদলি চাইছেন।” কৃষ্ণগোপালবাবু জানান, বছর খানেক আগে প্রধান শিক্ষকের নামে মিথ্যা অভিযোগ রটানো হয়েছিল। কিন্তু ওনার মতো ভাল মানুষ হয় না। ঝাড়গ্রাম জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) লক্ষ্মীধর দাস বলেন, “প্রধান শিক্ষক দূরত্বের কারণে বদলি চাইলে আবেদন খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Teacher Sachin Tendulkar Letter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE