Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কী পড়াবেন, ধোঁয়াশায় কলেজ শিক্ষকেরা

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঠ্যক্রম বদল হলে কলেজ শিক্ষকদের জন্য কর্মশালার আয়োজন করেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন ধরেই এই নিয়মই চলে আসছে। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে সামগ্রিক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। তার পরে বিষয়ভিত্তিক কর্মশালার আয়োজন হয়। বিষয়ভিত্তিক ওই কর্মশালায় প্রতিটি কলেজের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে দু’জন শিক্ষক কর্মশালায় যোগ দেন।

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়।ফাইল চিত্র।

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়।ফাইল চিত্র।

দেবমাল্য বাগচী
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৮ ০৭:০০
Share: Save:

চালু হয়েছে নতুন পাঠ্যক্রম। শুরু হয়েছে ‘চয়েজ বেসড ক্রেডিট সিস্টেম’ও। ইতিমধ্যেই প্রতিটি কলেজে স্নাতকের নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাসও শুরু হয়ে গিয়েছে। যদিও নতুন পাঠ্যক্রমের স্পষ্ট রূপরেখা না থাকায় সমস্যায় পড়ছেন শিক্ষকদের।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঠ্যক্রম বদল হলে কলেজ শিক্ষকদের জন্য কর্মশালার আয়োজন করেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন ধরেই এই নিয়মই চলে আসছে। এ ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে সামগ্রিক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। তার পরে বিষয়ভিত্তিক কর্মশালার আয়োজন হয়। বিষয়ভিত্তিক ওই কর্মশালায় প্রতিটি কলেজের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে দু’জন শিক্ষক কর্মশালায় যোগ দেন।

২০১৪ সালে পাঠ্যক্রম বদলের পরেও এমন কর্মশালার আয়োজন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ক্লাস শুরুর অনেক আগেই এই কর্মশালার আয়োজন হয়। কিন্তু গত বছর বিজ্ঞানের পাঠ্যক্রম বদল হলেও কর্মশালা আয়োজিত হয়নি। এ বছর কলা বিভাগের পাঠ্যক্রম বদলের সঙ্গে নতুন ‘চয়েজ বেসড ক্রেডিট সিস্টেম’ চালু হয়েছে। এই নতুন ব্যবস্থায় পড়ুয়ারা নিজের ইচ্ছে মতো বিষয়ের কম্বিনেশন নিয়ে পড়তে পারে। কোনও বিষয়ের ইচ্ছা মতো পেপারও পছন্দ করতে পারে তাঁরা। এ ছাড়াও এই নতুন নিয়মের আরও কয়েকটি দিক রয়েছে। এ সব নিয়ে বিস্তারিত না জানায় শিক্ষকদের পাশাপাশি পড়ুয়াদেরও সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

খড়্গপুরের মতো কয়েকটি কলেজ নিজেদের মতো করে একটি কর্মশালা আয়োজন করলেও তাতে কোনও লাভ হয়নি বলে দাবি শিক্ষকদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডার গ্র্যাজুয়েট কাউন্সিলের উদ্যোগে বিষয়ভিত্তিক কর্মশালা আয়োজিত হলেই সমস্যা মিটবে বলে দাবি শিক্ষকদের। বেলদা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক তুহিনকান্তি দাস বলেন, “এ বার ক্লাস শুরু হয়ে গেলেও আমাদের কর্মশালা না হওয়ায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে। যেমন আমাদের বিষয়ে গণতন্ত্রের একাধিক দিক। পাঠ্যক্রমে গণতন্ত্র রয়েছে। কিন্তু কোন দিকগুলি নিয়ে আলোচনা করতে হবে তা তো কর্মশালা ছাড়া জানা কষ্টকর।”

আগামী ডিসেম্বর মাসেই স্নাতকের প্রথম সেমেস্টারের পরীক্ষা। তাই এখন থেকেই সঠিক রূপরেখা না মেনে পড়ালে পড়ুয়ারাও সমস্যায় পড়বে। কিন্তু পাঠ্যক্রমের রূপরেখা স্পষ্ট না হওয়ায় আপাতত প্রতিটি বিষয়ে বিস্তর পড়াতে হওয়ায় চাপ বাড়ছে পড়ুয়াদের। খড়্গপুর কলেজের ইংরাজি বিভাগের শিক্ষিকা সোমালি নন্দী বলেন, “সত্যি বলতে পাঠ্যক্রম সম্পর্কে সম্পূর্ণ না জেনে পড়ালে যা হয় এখন তাই হচ্ছে। একটি বিষয়ে বিস্তর পড়ালে তো সময়ে পাঠ্যক্রম শেষ করাও মুশকিল!” ওই কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার বোর্ড অফ স্টাডিজের সদস্য কৌশিক ঘোষের কথায়, “মাঝে মাঝে হোঁচট খেয়ে পাঠ্যক্রম জানছি। তবে ক্রেডিট ব্যবস্থা চালু হওয়ায় কর্মশালা হওয়া জরুরি।”

এ নিয়ে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, “আমি স্বীকার করছি কর্মশালার আয়োজনে অনেকটা দেরি হয়ে গেল। তবে কর্মশালার জন্য আমি ‘ইউজি কাউন্সিল’-এর সচিবকে বলেছি।’’ তিনি বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই পাঠ্যক্রমের সামগ্রিক ব্যাপারে কর্মশালার জন্য বিজ্ঞপ্তি ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। কলেজেও পাঠানো হচ্ছে। তবে বিষয়ভিত্তিক কর্মশালাও আয়োজিত হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE