গ্রামের পাশেই রয়েছে জেলা প্রাণিসম্পদ দফতরের অফিস, দমকল কেন্দ্র। দু’কিলোমিটার দূরে থানা ও জেলা বন দফতর। তবুও কুকুরে কামড়ানোর ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে ভরসা পাচ্ছেন না পায়রাচালির বাসিন্দারা। কুকুরের অত্যাচার সামলাতে প্রশাসনের কাছে বাসিন্দারা দাবি জানালেও সেই দায়িত্ব কার তা নিয়ে সরকারি বিভিন্ন দফতরের মধ্যে দায় ঠেলাঠেলির পর্ব চলছে বলে অভিযোগ।
তমলুক শহর সংলগ্ন তমলুক– শ্রীরামপুর রাজ্য সড়কের পাশেই পায়রাচালি এবং শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রাম। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত এই এলাকায় কুকুরের তাণ্ডবে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন বাসিন্দারা। অভিযোগ, ২০ জনেরও বেশি বাসিন্দা কুকুরের কামড়ে জখম হয়েছেন। জখমদের মধ্যে যুবক, শিশু, বৃদ্ধও রয়েছেন। সবাইকে তমলুক জেলা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে প্রতিষেধকও দেওয়া হয়েছে। যদিও শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ওই কুকুরটি ধরতে না পারায় বাসিন্দারা আতঙ্কের পাশাপাশি ক্ষুব্ধও। তাঁদের অভিযোগ, কুকুরটি আচমকাই ছুটে এসে মানুষকে আক্রমণ করছে। কুকুরটিকে ধরতে বৃহস্পতিবার থেকে পুলিশ, জেলা বন দফতর এবং প্রাণী সম্পদ দফতরকে জানানো হলেও কেউ ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টে কুকুর সামলানোর দায় কাদের তা নিয়ে চাপানউতোর শুরু হয়েছে সরকারি দফতরগুলির মধ্যে।
কুকুরের কামড়ে জখম হয়েছেন পায়রাচালি গ্রামের যুবক হিমাদ্রি পন্ডা, বৃদ্ধ ধনঞ্জয় পাত্র ও গৃহবধূ মঞ্জুরী মণ্ডল। বছর তিরিশের হিমাদ্রি বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ির সামনে মোটরসাইকেলে বসেছিলাম। আচমকা কুকুর এসে ডান পায়ে কামড়ে দিয়ে চলে যায়।’’ হিমাদ্রির কাকা কালীপদ পন্ডা বলেন, ‘‘দুপুরের থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্রামের ১২ জনকে এবং পাশের গ্রাম শ্রীকৃষ্ণপুরের বেশ কয়েকজনকে কুকুরে কামড়ানোর কথা জানতে পেরে তমলুক থানার পুলিশকে ঘটনা জানিয়ে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করি। জেলার বন দফতরেও জানানো হয়। কিন্তু কেউই কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় রীতিমত আতঙ্কে রয়েছে সকলে।’’ তিনি জানান, দমকল কর্মীরা রাতে কয়েক জন বাসিন্দাকে নিয়ে ওই কুকুরের সন্ধানে বের হলেও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। শুক্রবার সকালে ওই দুই গ্রামের অনেকে কুকুরের ভয়ে বাড়ি থেকে বের হননি।
পায়রাচালি গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য সতীশ মাইতির অভিযোগ, ‘‘কুকুরে কামড়ানোর বিষয়টি পুলিশ, বন দফতরকে জানিয়েও লাভ না হওয়ায় পঞ্চায়েতে প্রাণী সম্পদ দফতরে জানিয়েছি। যদিও শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।’’ জেলা বনাধিকারিক স্বাগতা দাস এ দিন বলেন, ‘‘গতকাল গ্রামের বাসিন্দারা আমাকে জানালে ওঁদের বিষয়টি প্রাণী সম্পদ দফতরে জানাতে বলেছিলাম। কারণ আমরা বন্যপ্রাণ নিয়ে কাজ করি। তাই কুকুরের বিষয়টি আমার দফতরের মধ্যে পড়ে না।’’
জেলা প্রাণী সম্পদ দফতরের উপ-অধিকর্তা অজিত সিংহ বলেন, ‘‘কুকুর জলাতঙ্কগ্রস্ত হলে এভাবে কামড়ানোর প্রবণতা থাকে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ যদিও দফতরের এক আধিকারিক জানান, কুকুর ধরার পরিকাঠামো (ডগ ক্যাচার) কলকাতায় থাকলেও জেলায় সেই ধরনের পরিকাঠামো নেই। ফলে কুকুর ধরার কোনও উপায় নেই। ’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy