Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

স্মৃতির সভায় ‘অমিত আশা’

বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী তো বলেই ফেললেন, ‘‘এটা তো ট্রেলার ছিল। সিনেমা এখন বাকি।’’ তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলার আহ্বায়ক উজ্জ্বল দত্তের পাল্টা প্রতিক্রিয়া, ‘‘অন্য জেলা ও পাশের ঝাড়খণ্ড রাজ্য থেকে লোক নিয়ে মাঠ ভরিয়েছে। এলাকার লোক কোথায়?’’

সমর্থন: বুধবার গড় শালবনির মাঠে। ফাইল চিত্র

সমর্থন: বুধবার গড় শালবনির মাঠে। ফাইল চিত্র

কিংশুক গুপ্ত
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৪৪
Share: Save:

মাঠ ভরেছে। চওড়া হয়েছে হাসি।

বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী তো বলেই ফেললেন, ‘‘এটা তো ট্রেলার ছিল। সিনেমা এখন বাকি।’’ তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলার আহ্বায়ক উজ্জ্বল দত্তের পাল্টা প্রতিক্রিয়া, ‘‘অন্য জেলা ও পাশের ঝাড়খণ্ড রাজ্য থেকে লোক নিয়ে মাঠ ভরিয়েছে। এলাকার লোক কোথায়?’’

শাসক-বিরোধীর এই দাবি, পাল্টা দাবি বুধবারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির সভাকে কেন্দ্র করে। গড় শালবনির ওই সভায় আসার কথা ছিল বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের। কিন্তু অসুস্থ হওয়ায় আসতে পারেননি তিনি। তাঁর পরিবর্তে হাজির ছিলেন স্মৃতি। তাঁর এই সভা ঘিরে শাসক দলের অন্দরে শুরু হয়েছিল আলোচনা। কেউ কেউ বলছিলেন, ‘‘এ তো যেন প্রক্সিসভা।’’ কিন্তু স্মৃতির সভার ২৪ ঘণ্টা পর বদলে গিয়েছে ছবিটা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সভায় ভিড় আশা জাগিয়েছে গেরুয়া শিবিরে। প্রকাশ্যে গুরুত্ব না দিলেও শাসক শিবিরেও ভিড় নিয়ে চলছে আলোচনা।

ঠিক কত লোক হয়েছিল স্মৃতির সভায়? পুলিশের এক আধিকারিক বুধবার সভা শেষে জানিয়েছিলেন, ২০-৩০ হাজার মতো লোক হয়েছিল। তবে বেশ কিছু বাস বাইরে থেকে এসেছিল। বুধবার মন্ত্রীর সভায় ভিড় হয়েছিল চোখে পড়ার মত। ভিড় থেকেই বারেবারে উঠেছে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি। বিজেপি নেতারা বলছেন, পঞ্চায়েত ভোটের সাফল্যের পরে দলের কর্মীদের মনোবল বাড়ানোর প্রয়োজন ছিল। বুধবারের সভা কর্মীদের সেই অক্সিজেন দিয়েছে।

এ বার পঞ্চায়েত ভোটে ঝাড়গ্রাম জেলার ৮টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে দু’টি সমিতির ক্ষমতা দখল করেছে বিজেপি। ৭৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ২৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করেছিল গেরুয়া শিবির। পরে বোর্ড গঠনের পরে আরও তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপি-র প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়। বিজেপি-র দখলে থাকা লালগড়ের কাঁটাপাহাড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় পুরো বোর্ড শাসকদলের দখলে এসেছে। বেলিয়াবেড়া ব্লকের তপসিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। বিজেপি-র একাধিক মণ্ডল সভাপতি সহ পুরনো আমলের কিছু নেতা আগেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ ছিল, দল ভাঙিয়েই বোর্ড গড়ছে তৃণমূল। তবে বুধবারের সভার পর স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব বলছেন, আগে গায়ের জোরে, ভয় দেখিয়ে দলবদল করানো হয়েছে। কিন্তু এখন জঙ্গলমহলের মানুষের মন বদলে গিয়েছে।

সুখময় বলেন, ‘‘আমরা পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলে দেখিয়ে দিয়েছি। লোকসভার ফলে প্রমাণ হবে যাবে মানুষ কার সঙ্গে আছেন।’’ তাঁর দাবি, মাঠে ৩০ হাজার মতো লোক ধরেছিল। তার চেয়ে অনেক বেশি লোক ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলেন, মাঠে তাঁরা ঢুকতে পারেননি। যদিও উজ্জ্বলের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সভায় কেবলমাত্র ঝাড়গ্রাম জেলার ৮টি ব্লক থেকে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়। জঙ্গলমহলের মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আছেন। বিজেপি অন্য জায়গা থেকে লোক এনেছে।’’ ভিড়ের সঙ্গে ভোটের সম্পর্ক জটিল। তবে আপাতত জঙ্গলমহলের রাজনীতি ব্যস্ত স্মৃতির-সফরে ভিড়ের অঙ্ক কষতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Smriti Irani Garh Salboni
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE