Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বাঘ খুনের মডেল হিট, পুজো শেষেও ভিড় হুমগড়ে

জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে একটি বাঘ। তীর ধনুক, বল্লম নিয়ে বাঘকে মারতে উদ্যত কয়েকজন। তাদের বাধা দিচ্ছেন এক গ্রামবাসী। সামনে ব্যানারে লেখা—‘এই অরণ্য তো আমার জন্মভূমি, আমাকে বাঁচতে দাও’।

পুজো মণ্ডপের এই ‘বাঘ’ই মন কেড়েছে দর্শনার্থীদের। নিজস্ব চিত্র

পুজো মণ্ডপের এই ‘বাঘ’ই মন কেড়েছে দর্শনার্থীদের। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোয়ালতোড় শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:৩৭
Share: Save:

পুজোতেও বাঘ খুনের ছায়া।

জঙ্গলের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে একটি বাঘ। তীর ধনুক, বল্লম নিয়ে বাঘকে মারতে উদ্যত কয়েকজন। তাদের বাধা দিচ্ছেন এক গ্রামবাসী। সামনে ব্যানারে লেখা—‘এই অরণ্য তো আমার জন্মভূমি, আমাকে বাঁচতে দাও’। গোয়ালতোড়ের হুমগড় সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি এ বার মডেলের মাধ্যমে এ ভাবেই দর্শকদের সামনে তুলে ধরেছিল কয়েকদিন আগের বাঘ-কাণ্ড। মণ্ডপের সামনেই দাঁড়িয়ে বাঘের মডেল। আর তাকে দেখতেই প্রথম দিন থেকে মণ্ডপে ভিড় উপচে পড়ে। পুজো শেষ হয়েছে। কিন্তু শনি ও রবিবার মডেল দেখতে ভিড় কমেনি হুমগড়ে।

পুজো কমিটির সম্পাদক রাজশেখর পণ্ডা বলেন, ‘‘বাঘ বাঁচাতে মানুষকে সচেতন করতে আমরা একটা মডেল করেছিলাম। সেটার টানে যে এত দর্শক আসবে ভাবিনি। পুজোর সময় তো বটেই, তারপর শনিবার ও রবিবারও বাঘ দেখতেই বহু মানুষ এসেছে।’’ গড়বেতা ২-এর বিডিও স্বপনকুমার দেব মণ্ডপে এসে বাঘ-কাণ্ডের মডেল দেখে প্রশংসা করে বলেন, ‘‘সম্প্রতি বাঘ নিয়ে গোয়ালতোড়ে প্রচুর হইচই হয়েছে। তাই বাঘের প্রতি মানুষের আকর্ষণ আছেই। তা ছাড়া উদ্যোক্তারা বন্যপ্রাণী নিয়ে সচেতনতার বার্তাও দিয়েছেন, এটা ভাল দিক।’’

গোয়ালতোড়ের জঙ্গলেও কিছুদিন ঘাঁটি গেড়েছিল ডোরাকাটা। বাঘের আক্রমণে না হলেও ডিউটিতে গিয়ে প্রাণ দিতে হয় দুই বনকর্মীকে। বাঘের মুখে পড়ে জখম হন কয়েকজন। বাঘ ধরতে চেষ্টার খামতি রাখেনি প্রশাসন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। বেঘোরে প্রাণ গিয়েছে বাঘের। সেই স্মৃতিই ফের উস্কে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন উদ্যোক্তারা। বাঘ-কাণ্ডের এই মডেল দেখে অভিভূত দর্শনার্থী থেকে বনদফতরের কর্মী সকলেই। জেলার সহ কৃষি অধিকর্তা (ভূমি সংরক্ষণ) দিব্যেন্দু সামন্ত মণ্ডপে এসে বাঘের মডেল দেখে উদ্যোক্তাদের ভাবনার তারিফ করে যান। স্থানীয়রা তো ছিলেনই, আশেপাশের ব্লক থেকেও বহু মানুষ এই বাঘের মডেল দেখতে ছুটে আসেন হুমগড়ের মণ্ডপে। বন দফতরের হুমগড় রেঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার বাবলু মাণ্ডি বলেন, ‘‘পুজো মণ্ডপে বন্যপ্রাণীর উপর মডেল করে মানুষকে সচেতন করার এই প্রয়াস অভিনন্দনযোগ্য। কিছুদিন আগেই বাঘের আতঙ্কে দিশাহারা হয়ে পড়েছিলেন গোয়ালতোড়ের মানুষ। পুজো মণ্ডপে তাই ভিড় উপচে পড়ে বাঘের ছবি দেখতে।’’ উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে তাদের প্রয়াসের তারিফ করেছে বন দফতর।

শনিবার রাতে শালবনি থেকে কয়েকজন যুবক গাড়িতে করে হুমগড়ের এই মণ্ডপে এসেছিলেন স্রেফ বাঘকাণ্ডের মডেল দেখতে। তাদের মধ্যে উজ্জ্বল মাহাতো, বিকাশ সিংহ বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখলাম হুমগড়ের মণ্ডপে বাঘের মডেল করেছে। তাই পুজো শেষ হলেও বাঘ-কাণ্ড দেখতে হুমগড়ে এসেছিলাম। ভালই লাগল।’’

হুমগড় সর্বজনীন পুজোর প্রতিমা রবিবার দুপুরে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। তবে রেখে দেওয়া হয়েছে মডেলের সেই বাঘকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Theme Durga Puja Tiger Killing
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE