কাঁথির মাছ-বাজার। নিজস্ব চিত্র।
মাছ ধরার মরসুম আসতেই বান ডেকেছে ইলিশের। গত কয়েক দিনে মৎস্যজীবীদের জালে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ ধরা পড়ায় মৎস্যজীবীদের মুখেও হাসি দেখা দিয়েছে। টানা ৫৯ দিন সমুদ্রে মাছ শিকার বন্ধ থাকার পর ১৪ জুন থেকে সমুদ্রে মাছ ধরার মরসুম শুরু হতেই বাঙালির রসনার সেরা উপাদান ইলিশের ছয়লাপ।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সবচেয়ে বড় মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র দিঘা মোহনায় শুক্রবার ৪০ টন ইলিশ ওঠে বলে দিঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার মিলিয়ে প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ টন ইলিশ দিঘা মোহনায় উঠছে। আবহাওয়া প্রতিকুল থাকায় আরও ইলিশ ধরা পড়বে বলেই আশা আমাদের।’’ গত দু’দিনে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় শুক্রবার ইলিশের দাম কিছুটা কমও ছিল। দিঘা মোহনায় শুক্রবার পাঁচশগ্রাম থেকে এক কিলো সাইজের ইলিশ পাইকারি বাজারে সাড়ে চারশো টাকা থেকে আটশো টাকা কিলো হিসেবে বিক্রি হয়েছে। মরসুমের শুরুতেই প্রচুর ইলিশ পেয়ে খুশি দিঘা মোহনার মৎস্যজীবী মুকুল জানা, শঙ্কর বর্মন, তাপস সেনাপতিরাও। তাঁদের কথায়, “মরসুমের শুরুতে এত ইলিশ ধরা পড়বে আশা করিনি।’’
শুধু দিঘা মোহনা নয়, শঙ্করপুর এবং পেটুয়া ঘাট মৎস্য বন্দরের মৎস্যজীবীরাও ভাল পরিমাণে ইলিশ পেয়েছেন বলে জানান দুই মৎস্য বন্দরের আধিকারিক প্রদ্যোত পাহাড়ি। এছাড়া শৌলা, বগুরান জলপাই, দহসোনামুই ও জুনপুটেও ইলিশ উঠেছে। দিঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম পরিচালক নবকুমার পয়ড়্যা বলেন, ‘‘এ বার ৪৫ দিনের বদলে ৬০ দিন ধরে সমুদ্রে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকায় ইলিশের বৃদ্ধি হয়েছে। লঞ্চ, ট্রলারের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সমুদ্রে দূষণ বাড়ে। আর ব্যাপক হারে সমুদ্র থেকে মাছ শিকারের ফলে সমুদ্রে ইলিশ-সহ অন্যান্য মাছের আকাল দেখা দিয়েছিল। সমুদ্রে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা বৃদ্ধির দিন বাড়ানোর সুফল এটা।’’ আগামী দিনে এই নিষেধাজ্ঞা যাতে ৯০দিনের জন্য করা হয় তার জন্য মৎস্যজীবীদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে দাবি জানানো হবে বলে জানান তিনি। সমুদ্রে মাছ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকার ফলে ইলিশের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছেন মৎস্য দফতরের সহ মৎস্য অধিকর্তা(সামুদ্রিক) রামকৃষ্ণ সর্দারও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘শুধু মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি নয়, নিষেধাজ্ঞার সময় যাতে কেউ ছোট ইলিশ না ধরে তার জন্যও মৎস্য দফতরের পক্ষ থেকে নানা রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। তাই ইলিশ ও অন্য আরও মাছের বৃদ্ধি ঘটেছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy