কোলাঘাটে রূপনারায়ণে তিন বিদেশি। বুধবার নিজস্ব চিত্র।
একজনের শরীরে ফুলস্লিভ শার্ট, বাকি দু’জনের গায়ে টি-শার্ট আর হাফ প্যান্ট। রূপনারায়ণের বুকে ‘অদ্ভূত দর্শন’ জলযানে চেপে চলেছেন তিন বিদেশি।
বুধবার পড়ন্ত বিকেলে ওই দৃশ্য দেখে চমকে উঠেছিলেন কোলাঘাটবাসী। ভিড় জমিয়েছিলেন নদীর তীরে। উৎসুক জনতাকে দেখে মাঝ নদী থেকে পাড়ের দিকে এগিয়ে যান ওই তিনজন। নেমে আসেন তাঁদের ‘অদ্ভৃত দর্শন’ জলযান থেকে। এলাকার দোকানে গিয়ে কেনেন ফল। অচেনা টানে ভাঙা ভাঙা ইংরাজিতে গল্পও জুড়েন এলাকাবাসীর সঙ্গে। তাতেই জানা যায় ওই তিন বিদেশির পরিচয় এবং অ্যাডভেঞ্চারের গল্প।
গ্যাব্রিয়েল, লুডো, গ্রেগ নাম ওই তিন যুবক আদতে ফ্রান্সের বাসিন্দা। ঘুরতে এসেছেন ভারতে। গত সপ্তাহেই তাঁরা কলকাতা পৌঁছন। আর পাঁচটা পর্যটকের মতোই সেখানে ঘুরছিলেন গ্রেগরা। হঠাৎ গঙ্গা নদীতে তাঁদের চোখে পড়ে যায় শুশুক। তাতেই তিনজনের পরবর্তী সমস্ত পরিকল্পনা এলোমেলো হয়ে যায়। তিন বন্ধু ঠিক করেন, শুশুক এবং গ্রাম বাংলার রূপ দেখতে বাংলার নদীপথে ‘স্ট্যান্ড আপ বোর্ড’ চলে ঘুরে বেড়াবেন।
সেই মতো পাঁচদিন আগে কলকাতা থেকে ‘স্ট্যান্ড আপ বোর্ডে’ চড়ে নদীপথে বেরিয়ে পড়েছেন তাঁরা। উল্লেখ্য, ‘স্ট্যান্ড আপ প্যাডেল বোর্ডিং’য়ের একজন বা দু’জন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বা বসে জলে ঘুরতে পারেন।
রূপনারায়ণের তীরে কোলাঘাটবাসীর কাছে নৌকা অপরিচত নয়। কিন্তু গ্রেগেরা যে ‘স্ট্যান্ড আপ বোর্ডে’ চড়ে ঘুরছেন, তা সচারচর দেখা যায় না। তাই তিনজনকে ‘স্ট্যান্ড আপ প্যাডেলিং’ করতে দেখে চমকে গিয়েছিলেন কোলাঘাটবাসী। আর তাঁদের গল্প শুনে আরও অবাক হয়েছেন। এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘এভাবে কলকাতা থেকে এসেছে। ভাবতেও পারছি না।’’
নিজেদের ওই অ্যাডভেঞ্চার প্রসঙ্গে লুডো বলেন, ‘‘গঙ্গায় যে ধরনের শুশুক রয়েছে, তা ফ্রান্সে দেখা যায় না। হুগলি নদীতে প্রথম চোখে পড়ে। তারপরেই নদীতে ঘোরার সিদ্ধান্ত।’’ লুডোর কথায়, ‘‘বাংলায় এখনও সাতদিন নদীপথে ঘোরার পরিকল্পনা রয়েছে।’’ গ্রেগ বলেন, ‘‘মূলত ঘুরতেই কলকাতায় এসেছিলাম। কিন্তু গাঙ্গেয় শুশুক মন ছুঁয়ে গিয়েছে।’’
এ দিন সন্ধ্যায় নদীপথেই পশ্চিম মেদিনীপুরের গোপীগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিন বন্ধু। সেখান থেকে দিঘা যাওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। আর কোলাঘাটবাসীর আশা, হয়তো ফেরার পথে আবার তিনজনের সঙ্গে দেখা হয়ে যাবে তাঁদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy