লালগড় আন্দোলনের দশ বছরে ঢেলে সাজা হচ্ছে মহিলা তৃণমূলের ব্লক কমিটি।
পিছনে ফিরে গিয়েই সামনে এগোনোর কৌশল তৈরি করছে তৃণমূল। আর ক্ষেত্রে হাতিয়ার নারীশক্তি।
পঞ্চায়েত ভোটের ফল ইঙ্গিত দিয়েছে, শাসক দলের আদিবাসী ভোটব্যাঙ্কে ভাঙন ধরেছে। ঘটনাচক্রে এ বারই লালগড় আন্দোলনের দশ বছর। একেই কাজে লাগাতে চাইছে তৃণমূল। শাসক দল সূত্রের খবর, এবার ঢেলে সাজা হচ্ছে মহিলা তৃণমূলের ব্লক কমিটি। লালগড় ব্লকে মহিলা তৃণমূলের কোনও কমিটি এতদিন ছিল না।
১১ নভেম্বর মহিলা তৃণমূলের নয়া কমিটি গড়ার জন্য সভা ডেকেছেন ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শ্যামল মাহাতো। তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই কমিটির মাথায় রাখা হতে পারে একসময় ‘পুলিশি সন্ত্রাস বিরোধী জনসাধারণ কমিটি’র এক শীর্ষ নেতার স্ত্রীকে। ২০০৮ সালে ছোটপেলিয়া গ্রামে আদিবাসী মহিলাদের উপর পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগে উত্তাল হয়ে ওঠে জঙ্গলমহল।
পুলিশের বন্দুকের আঘাতে বাম চোখের দৃষ্টি হারান ছিতামণি মুর্মু। পরে মাওবাদীরা আদিবাসীদের আন্দোলনে হাইজ্যাক করে নিলেও শুরুতে কিন্তু লালগড়ের মহিলারা বাম সরকারের পুলিশের পীড়নের প্রতিবাদে আন্দোলনের প্রথম সারিতে ছিলেন বলেই দাবি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের। সেই নারীশক্তিকে সম্মান জানাতে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে শুরু হয়েছে সংগঠনের ক্ষত মেরামতের কাজ। এ ক্ষেত্রে প্রথমে বেছে নেওয়া হয়েছে লালগড়কেই। ইতিমধ্যে লালগড় ব্লকের প্রায় অর্ধেক বুথের নতুন কমিটি তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। ওই সব বুথ কমিটিতে উল্লেখ যোগ্য সংখ্যায় মহিলাদের রাখা হচ্ছে। লালগড় ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শ্যামল মাহাতো বলেন, ‘‘বাম বিরোধী আন্দোলনে লালগড়ের বহু মানুষ প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন মহিলাও ছিলেন। নানা কারণে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া ওই মহিলাদের সসম্মানে দলীয় সদস্য পদে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগী হয়েছি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘যা করছি, সবই শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে করা হচ্ছে।’’
একসময় যাঁরা লালগড়ে বাম বিরোধী আন্দোলনের সামনের সারিতে ছিলেন, তেমন কিছু মহিলাকে সংগঠনে নিয়ে আসা হচ্ছে বলে খবর। পুলিশি সন্ত্রাস বিরোধী জনসাধারণের কমিটির আন্দোলনের ঠিক আগে যাঁরা আদিবাসী মহিলা নিগ্রহের প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন, তেমন কয়েকজন আদিবাসী মহিলাকে দলীয় পদে নিয়ে আসার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। পাপুড়িয়া, বনপুকুরিয়া, গাডরা, ছোটপেলিয়া, দলিলপুর, বীরকাঁড় গ্রামের আটপৌরে মহিলাদের সংগঠনের সামনের সারিতে নিয়ে আসা প্রয়োজন বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতারা।
সূত্রের খবর, বিগত পঞ্চায়েতে শাসক দলের একাংশের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। তার জেরে কাঁটাপাহাড়ি, রামগড়, বেলাটিকরি, বিনপুর গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। মাথা তোলার চেষ্টা করছে বিজেপি। এমন আবহে ব্লক তৃণমূলের উদ্যোগ রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy