Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

লম্বকর্ণ পালা চলছে, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ফের অবরোধ

ছাগল চুরির অভিযোগ। তা নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থামার চিহ্ন নেই। 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তপসিয়া শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৮ ০১:১০
Share: Save:

ছাগল চুরির অভিযোগ। তা নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থামার চিহ্ন নেই।

কয়েকদিন আগে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছিলেন অঞ্চল সভাপতির গোষ্ঠীর লোকজন। এ বার অঞ্চল সভাপতির অনুগামীদের গ্রেফতারের দাবিতে শুক্রবার সকালে রাজ্য সড়ক অবরোধ করলেন তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যের অনুগামীরা। বেলিয়াবেড়া থানার তপসিয়া হাসপাতাল মোড় এলাকায় ফেঁকো-গোপীবল্লভপুর ৫ নম্বর রাজ্য সড়কে ওই অবরোধে ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েন নিত্যযাত্রীরা। আধঘণ্টা অবরোধ তুলে দিলে দুই গোষ্ঠীর কাজিয়া সামলাতে পুলিশের দিশাহারা অবস্থা।

ঘটনার সূত্রপাত কয়েকদিন আগে। আঁধারিয়া গ্রামে তৃণমূল কর্মী বিকাশ নায়েকের একটি ছাগল চুরি যায়। বিকাশ তপসিয়ায় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি নিরঞ্জন দাসের ছায়াসঙ্গী। তপসিয়া পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য ভবেশ পাণির ঘনিষ্ঠ তৃণমূল কর্মী সুরজিৎ জানা ওই ছাগল চুরি করে নিজের বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছেন, এমন অভিযোগে গত সোমবার (২২ অক্টোবর) দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল গোলমাল ও হাতাহাতি হয়। বিকাশের মাথা ফাটে। জখম হন সুরজিতের স্ত্রী দেবযানী জানা সহ উভয় পক্ষের মোট পাঁচজন। বিকাশকে মারধরের ঘটনার প্রতিবাদে গত সোমবার নিরঞ্জনের অনুগামীরা আঁধারিয়া গ্রাম থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে ফেঁকো এলাকায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক মুম্বই রোডে ঘণ্টা দেড়েক অবরোধ করেছিলেন।

দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। সোমবারই ভবেশের ঘনিষ্ঠ মানস বিশালকে গ্রেফতার করা হয়। মানস এখন জেল হেফাজতে রয়েছেন। ভবেশ বলেন, “পুলিশ পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। বিকাশই প্রথম সুরজিতের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাঁর স্ত্রী দেবযানীকে মারধর করে জখম করেছিল। কিন্তু আমাদের অভিযোগ পেয়েও পুলিশ বিকাশ সহ অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রফতার করেনি।” ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের অভিযোগ অনুযায়ী অভিযুক্তদের গ্রফতার করা না হলে ফের অবরোধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভবেশ।

তাঁর অভিযোগ, নিরঞ্জন তৃণমূলের বেলিয়াবেড়া ব্লক সভাপতি কালীপদ সুরের অনুগামী। সেই কারণে নিরঞ্জন গোষ্ঠীর অভিযোগকে গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশ। যদিও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাননি তৃণমূলের বেলিয়াবেড়া ব্লক সভাপতি কালীপদ। তিনি বলেন, “ছাগলকে কেন্দ্র করে ওটা গ্রাম্য বিবাদ। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।”

নিরঞ্জন অবশ্য তোপ দাগছেন ভবেশের দিকে। এ বার পঞ্চায়েত ভোটে আঁধারি বুথে তৃণমূলের প্রার্থী হন নিরঞ্জন। একই আসনে নির্দল হয়ে দাঁড়ান তৃণমূলের কর্মী ভবেশ পাণি। ভোটের আগে গুলিবিদ্ধ হন নিরঞ্জনের ছায়াসঙ্গী বিকাশ। ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে চিকিত্সাধীন থেকে সুস্থ হন বিকাশ। পঞ্চায়েত ভোটে হেরে যান নিরঞ্জন। ওই আসনে ভবেশ জয়ী হয়ে পরে তৃণমূলে যোগ দেন। তপসিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতটিও তৃণমূল দখল করলেও দুই গোষ্ঠীর কাজিয়া সামাল দিতে হিমসিম খাচ্ছেন নেতৃত্ব।

পুলিশ জানিয়েছে, উভয়পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হয়েছে। পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ সঠিক নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC তৃণমূল
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE