Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

অন্য মামলায় শ্রীঘরে, লক্ষ্মী এখন বেনোজল

তৃণমূলের অঞ্চল কার্যালয়ে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই তৃণমূলের সেই অঞ্চল সভাপতিকেই গ্রেফতার করল পুলিশ। তবে বিস্ফোরণে নয়, পুরনো মামলায়।  

গ্রেফতার: মেদিনীপুর আদালতে লক্ষ্মী শীট। নিজস্ব চিত্র

গ্রেফতার: মেদিনীপুর আদালতে লক্ষ্মী শীট। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মকরামপুর শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৮ ০২:৩০
Share: Save:

তৃণমূলের অঞ্চল কার্যালয়ে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই তৃণমূলের সেই অঞ্চল সভাপতিকেই গ্রেফতার করল পুলিশ। তবে বিস্ফোরণে নয়, পুরনো মামলায়।

শুক্রবার নারায়ণগড়ের মকরামপুরের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি লক্ষ্মী শীটকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, মারধর, খুনের চেষ্টা ও অস্ত্র আইনের ধারায় রুজু হওয়া মামলাটি গত বছরের। মাথায় রিভলবার ঠেকিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার ওই অভিযোগ নাকি পুলিশ প্রথমে নিতে চায়নি। পরে মেদিনীপুর আদালতে অভিযোগ জমা পড়ে। আদালতের নির্দেশে পুলিশ মামলা রুজু করে তদন্তে নামে। এ দিন মেদিনীপুর আদালতে হাজির করা হলে লক্ষ্মীর ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে।

লক্ষ্মীর গ্রেফতারেও সামনে এসেছে তৃণমূলের বিরোধ। দলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলছেন, ‘‘ওর কাজকর্ম দলের পছন্দ হচ্ছিল না। কিছু বেনোজল দলে এসে গিয়েছিল। আমরা দেখে নিচ্ছি।’’ নারায়ণগড়ে তৃণমূল নেতা, বিদায়ী জেলা কর্মাধ্যক্ষ সূর্য অট্টের পাল্টা প্রতিক্রিয়া, “লক্ষ্মী শিটের মতো অঞ্চল সভাপতি দলের সম্পদ। আমাদের দলেরই কিছু লোক গোপনে বিজেপির সঙ্গে আঁতাত করে ওঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা চালাচ্ছে।” গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল মকরামপুরে তাদের ওই দলীয় কার্যালয় দখল করেছে দাবি করে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও এ দিন বলেন, ‘‘নিজেদের খুনোখুনিতে ‘যদুবং‌শ‌ ধ্বংস’ ডেকে আনবে, এটাই হল এ রাজ‍্যে তৃণমূল।’’

২০১১ সালের পরে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি হয়েছিলেন লক্ষ্মী। ধানঘড়ির দরিদ্র পরিবারের যুবক লক্ষ্মী এখন রীতিমতো স্বচ্ছল, দাপুটেও। স্থানীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি মকরামপুরের বাইরে গ্রামরাজ, কুনারপুরের মতো একাধিক অঞ্চলে প্রভাব বাড়াতে চাইছিলেন লক্ষ্মী। তখনই ব্লক সভাপতি মিহির চন্দের সঙ্গে সংঘাত বাধে। লক্ষ্মী ঝোঁকেন মিহির বিরোধী সূর্য অট্টের দিকে। ক’দিন আগে স্থানীয় প্লাস্টিক কারখানায় আন্দোলনের সময় লক্ষ্মী-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মজুরি থেকে টাকা কেটে নেওয়ার অভিযোগও তুলেছিলেন শ্রমিকেরা। লক্ষ্মীরা পাল্টা আন্দোলনের চেষ্টা করছিলেন বলেই খবর। সেই মতো বৃহস্পতিবার অঞ্চল কার্যালয়ে জমায়েত হয়েছিল। তখনই বিস্ফোরণ ঘটে।

২৪ ঘণ্টা পরেও পুলিশ অবশ্য নিশ্চিত ভাবে বলতে পারেনি তৃণমূল কার্যালয়ে ঠিক কী বিস্ফোরণ হয়েছিল। এ দিনও জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “বিস্ফোরণের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” তবে বিস্ফোরণস্থল ঘুরে সিআইডি মনে করছে বোমা ফেটেই বিস্ফোরণ হয়েছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সিআইডির এক কর্তা মানছেন, “ঘটনাস্থলে গিয়ে সব দিক খতিয়ে দেখা হয়েছে। বিস্ফোরণের তীব্রতা বেশিই ছিল। ওখানে বারুদের গন্ধও পেয়েছি।” বোমা ফেটেই কি তবে বিস্ফোরণ হয়েছে? সিআইডির ওই কর্তার জবাব, “মনে তো হচ্ছে তাই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arrest Police CID
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE