Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ফেসবুকে পুলিশের বিরুদ্ধে তোপ দেগে পিছু হটলেন তৃণমূল নেতা

দিন কয়েক আগে গোয়ালতোড়ের আমলাশুলিতে একটি পথ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের পথ অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়।

সেই বিতর্কিত পোস্ট। নিজস্ব চিত্র

সেই বিতর্কিত পোস্ট। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোয়ালতোড় শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৯ ০১:১১
Share: Save:

পুলিশের কার্যকলাপের সমালোচনা করে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূল নেতা। পরে অবশ্য সেই পোস্ট তুলে নেন তিনি।

দিন কয়েক আগে গোয়ালতোড়ের আমলাশুলিতে একটি পথ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের পথ অবরোধ তুলতে গেলে পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের কয়েকটি গাড়ি। গোলমালে মদত দেওয়ার অভিযোগে ৭ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে বুধবার সকালে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট করেন গোয়ালতোড় এলাকার তৃণমূল নেতা চন্দন সাহা। তিনি জেলা পরিষদ সদস্যও বটে। সেই পোস্টে তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘গোয়ালতোড়ে চরম পুলিশি অত্যাচার। অবিলম্বে পুলিশের এই ধরণের জনবিরোধী কাজকর্ম বন্ধে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করা একান্ত প্রয়োজন, না হলে আগামী দিন গণ বিদ্রোহের আশঙ্কা গোয়ালতোড়ে।’’ সেখানে তিনি আরও লেখেন, ‘‘এমন মানুষকেও ঐ ঘটনার সাথে জড়িয়ে গ্রেফতার করে কোর্টে চালান করা হয়েছে যিনি ঘটনার দিন আমলাশুলিতে উপস্থিত ছিলেন না যেমন গৌতম দত্ত।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌতম দত্তকে ওই ঘটনা ধরেছিল পুলিশ। তিনি

শাসক দলের নেতার পুলিশের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ঘিরে জেলা তৃণমূলে শোরগোল পড়ে যায়। ওই পোস্ট দেওয়ার ঘণ্টাতিনেক পরে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে সেটি তুলে নেন ওই তৃণমূল নেতা। ফোনে তাঁর দাবি, ‘‘আমি এখন বাংলার বাইরে রয়েছি। যা জেনেছি তাই লিখেছিলাম। পরে অনেকে ফোন করার পরে তা তুলেও নিয়েছি।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, চন্দন পেশায় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। তিনি আগে দলের শিক্ষক সংগঠনের পদও সামলেছেন। এর আগে কখনও বিতর্কে জড়াননি তিনি। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘উনি না জেনে-বুঝেই এই পোস্ট করেছেন। সে দিন কোনও পুলিশি অত্যাচার হয়নি। দুর্ঘটনায় যুবকের মৃত্যুর পরে গোয়ালতোড় থানায় যে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে সেখানে পুলিশের গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষে ওই মৃত্যু হয়েছে বলে কোথাও লেখা নেই।’’ গোয়ালতোড় ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ভাস্কর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘উনি কেন এই পোস্ট করলেন বুঝতে পারছি না। উনার কাছ থেকে জানব।’’

ওই পোস্টে জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি ও চেয়ারম্যান দীনেন রায়কে ‘ট্যাগ’ করেছিলেন তিনি। অজিত মাইতির দাবি, ‘‘চন্দনের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, মিটেও গিয়েছে। উনি ওই পোস্ট মুছেও দিয়েছেন।’’ দীনেন বলেন, ‘‘আমি ফেসবুক করি না। চন্দনের লেখার বিষয়েও আমার কিছু জানা নেই।’’

বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। বিজেপির গোয়ালতোড় উত্তর মণ্ডলের সভাপতি উজ্জ্বল হাটুই বলেন, ‘‘শাসকদলের জনপ্রতিনিধিরাই পুলিশের কাজের সমালোচনা করছেন। ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়ে পড়ছে!’’

গোয়ালতোড় ব্লক কংগ্রেস সভাপতি সুজিত খানের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল এখান দিশাহারা। এই পোস্ট তারই প্রতিফলন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Leader Police Facebook
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE