Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

কাজ না করে টাকা ‘আত্মসাৎ’, নালিশ বিডিও’কে

স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, নন্দীগ্রামের ১৪৯ নম্বর বুথে দক্ষিণ বিরুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা সরোজাক্ষ ত্রিপাঠীর পুকুর সংস্কার এবং আর এক বাসিন্দা রতন মান্নার ভূমি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ না করেই আর্থিক দুর্নীতি করা হয়েছে। অভিযোগ, ভূমি উন্নয়ন প্রকল্পে কোনও রকম কাজ না করে ভুয়ো মাস্টাররোল দেখিয়ে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:১০
Share: Save:

কাজ না করেই একশো দিনের কাজ প্রকল্পের টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের ১৪৯ নম্বরে বুথের বাসিন্দারা লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছেন বিডিওকে।

স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, নন্দীগ্রামের ১৪৯ নম্বর বুথে দক্ষিণ বিরুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা সরোজাক্ষ ত্রিপাঠীর পুকুর সংস্কার এবং আর এক বাসিন্দা রতন মান্নার ভূমি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ না করেই আর্থিক দুর্নীতি করা হয়েছে। অভিযোগ, ভূমি উন্নয়ন প্রকল্পে কোনও রকম কাজ না করে ভুয়ো মাস্টাররোল দেখিয়ে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। অভিযোগের তির, ওই প্রকল্পের সুপার ভাইজার চন্দনকুমার মান্না, পঞ্চায়েত সদস্য বিশ্বনাথ কামিল্যা এবং তৃণমূলের দলীয় সভাপতি স্বপনকুমার গুছাইতের বিরুদ্ধে। ওই তিন জন এক সঙ্গে পরিকল্পনা করেই সরোজাক্ষের কাজের ক্ষেত্রে ১৭ হাজার ৬২৫ টাকা এবং রতনের কাজের ক্ষেত্রে ৩৫ হাজার ৬৩০ টাকা তুলেছেন বলে অভিযোগ।

ঘটনায় কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বিজেপির জেলা সম্পাদক (তমলুক) প্রলয় পাল বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের অন্ধকারে রেখে ভাঁওতাবাজি করে সমস্ত টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। তৃণমূল পরিচালিত এই পঞ্চায়েত বিভিন্নভাবে দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ একযোগে এর বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছেন এবং বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।’’

অভিযুক্ত চন্দন শনিবার বলেন, ‘‘ওই দুটি কাজই করে দেওয়া হবে বলে ঠিক করা হয়েছে। এখন বৃষ্টি হছে পুজোর পরই কাজ করা হবে।’’ কিন্তু কাজ করে টাকা তোলা হল কেন? এ ব্যাপারে কোনও সদুত্তর মেলেনি। আর এক অভিযুক্ত তথা ২৪৯ নম্বর বুথের তৃণমূল সভাপতি স্বপন বলেন, ‘‘ওঁরা দুজন যদি কাজ না করাতে চান, তাহলে ওই টাকা আমরা ট্রেজারিতে ফেরত দেব। যদি কাজ করতে চান তাহলে আমরা কাজ করে দেব।’’ স্বপনের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘সরকারি নিয়ম অনুযায়ী টাকা আমাদের কাছে আসে না, টাকা তাঁরাই পান যাঁদের ১০০ দিনের কাজের জব কার্ড রয়েছে।’’ এ ক্ষেত্রে টাকা কি কার্ড হোল্ডারদের কাছে গিয়েছে? স্বপনের জবাব, ‘‘কার্ড হোল্ডারেরা টাকা পেয়েছেন। তাঁদের কাছ থেকে তা নিয়ে ফেরত দেওয়া হবে। আর তাঁরা ফেরত দিতে না চাইলে আমাদেরকেই দিতে হবে।’’

ঘটনায় গ্রাম প্রধানের ভূমিকাতেও প্রশ্ন উঠেছে। কাজ না হওয়া প্রকল্পের মাস্টাররোলে তিনি কী করে সই করলে। এ ব্যাপারে বিরুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুকেশকুমার মান্না বলেন, ‘‘আমি এখন বাইরে রয়েছি। তবে ওই দুটো কাজ হয়নি বলে আমার জানা নেই। অফিসের লোক মাস্টাররোলে সই করে দিতে বলেছেন বলেই আমি না দেখে মাস্টাররোলে সই করে দিয়েছি। সোমবার ফিরে এ ব্যাপারে বিডিও’র সঙ্গে কথা বলব।’’

গোটা ব্যাপারে নন্দীগ্রাম-২ এর বিডিও সুরজিৎ রায় বলেন, ‘‘ওই বুথের বাসিন্দাদের অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

100 days Work TMC Corruption Nandigram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE