Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মৃত্যু’—বলার জন্য চাপ দেন তৃণমূল নেতা, দাবি মৃতের স্ত্রীর

পুলিশের কাছে নিরাপত্তার আবেদন জানিয়ে চিঠি লিখেছেন সুপ্রিয়া।

সন্তান কোলে সুদীপ্তের স্ত্রী সুপ্রিয়া।

সন্তান কোলে সুদীপ্তের স্ত্রী সুপ্রিয়া।

বিশ্বসিন্ধু দে
নারায়ণগড় শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৯ ০৩:০৫
Share: Save:

তৃণমূলের মকরামপুর কার্যালয়ে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল মোট তিনজনের। কী ভাবে হয়েছিল সেই বিস্ফোরণ, তা স্পষ্ট করেনি পুলিশ। ওই ঘটনায় মৃত সুদীপ্ত ঘোষের স্ত্রী সুপ্রিয়া এ বার অভিযোগ করলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর সিলিন্ডার বিস্ফোরণের তত্ত্ব সামনে আনার জন্য তাঁর উপর রাজনৈতিক ‘চাপ’ তৈরি করা হয়েছিল।

পুলিশের কাছে নিরাপত্তার আবেদন জানিয়ে চিঠি লিখেছেন সুপ্রিয়া। সেই চিঠিতেই তিনি লিখেছেন, ২৩ অগস্ট বিস্ফোরণের কিছুক্ষণ পরেই তৃণমূলের তৎকালীন অঞ্চল সভাপতি লক্ষ্মী শীট ও যুব সভাপতি অমিত মণ্ডল বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে যান। মৃত্যুর জন্য ক্ষতিপূরণের কথা বলার পাশাপাশি বোমা নয়, সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকেই যে এই ঘটনা হয়েছে এ কথা বলার জন্য চাপও দেওয়া হয়েছিল বলে চিঠিতে অভিযোগ করেছেন সুপ্রিয়া। স্পিড পোস্টে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন সু্প্রিয়া। তাঁর দাবি, অভিযোগপত্রটি সংশ্লিষ্ট জায়গায় পৌঁছেছে। এবং সে সংক্রান্ত নথিও তাঁর কাছে রয়েছে। যদিও খড়্গপুরের এসডিও রাহুল দে বলেন, ‘‘এখনও এ ধরনের অভিযোগ পাইনি। দেখব।’’

সুপ্রিয়ার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে লক্ষ্মী শিটের দু’টি মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ‘ডেলিভার্ড’ হয়নি এসএমএসেরও। যদিও অমিত, ‘‘ঘটনার বিষয়ে কিছু জানা নেই। আমি বা আমরা কেউ তাদের বাড়িতে গিয়ে এ ধরনের কথা বলিনি।’’ সু্প্রিয়ার আরও অভিযোগ, ঘটনার পাঁচদিন পরে বাড়িতে এসে একই কথা বলে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা সূর্যকান্ত অট্ট-সহ কয়েকজন। প্রসঙ্গত, ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল সূর্যকান্তের। তৃণমূলের যে কার্যালয়ে বিস্ফোরণ হয়েছিল, সেটি সূর্যকান্ত এবং তাঁর অনুগামীরাই নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে অভিযোগ। নতুন করে সুপ্রিয়া যে অভিযোগ করেছেন সে সম্পর্কে সূর্যকান্ত বলেন, ‘‘কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে এসব করতে পারে। তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আমার এ বিষয় সম্পর্কে এখনও কিছু জানা নেই।"

সুপ্রিয়ার অভিযোগপত্র।

২৩ অগস্ট বিস্ফোরণে প্রথম মৃত্যু হয়েছিল সুদীপ্তের। পরে হাসপাতালে আরও দু’জন মারা যান। ঘটনার পরপরই হুমকি এবং পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করেছিলেন সুপ্রিয়া। দোষীদের গ্রেফতারের আর্জি জানিয়ে আদালতেরও দ্বারস্থ হয়েছে সুদীপ্তের পরিবার। কেন দোষীদের ধরা যায়নি, ৪ এপ্রিলের মধ্যে তা রাজ্যকে হাইকোর্টে জানাতে হবে। এরই মধ্যে ফের নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হলেন সুপ্রিয়া। বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল বিমল চৌধুরী নামে আরও একজনের। সুরাহা না পেয়ে বিমলের দাদু দুর্গাচরণ পাত্র মামলা করেছিলেন আদালতে। নিঁখোজ থাকার পর মৃতদেহ উদ্ধার হয় দুর্গাচরণের। সব দেখেশুনে আতঙ্ক ভর করেছে সুপ্রিয়াকে। তিনি শুধু বলছেন, ‘‘দোষীরা প্রভাবশালী। তাই জানি না কী হবে।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Makrampur Blast TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE