Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সামলে চলুন, খুনের পরে বলছে তৃণমূল

তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা কোর কমিটির চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা বলেন, “নেতা-কর্মীদের সাবধানে সতর্কভাবে চলাফেরা করতে বলা হয়েছে। বিরোধীরা নানা ভাবে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছে। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে উন্নয়ন দিয়ে অশান্তির মোকাবিলা করব।”

নজরদারি: জামবনির দুবড়া বটতলা চকে। নিজস্ব চিত্র

নজরদারি: জামবনির দুবড়া বটতলা চকে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৩০
Share: Save:

সাবধানের মার নেই। তাই চোখ-কান খোলা রেখে চলাফেরা করতে হবে। চন্দন ষড়ঙ্গী খুনের পর নেতা-কর্মীদের এমনই পরামর্শ দিচ্ছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।

তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম জেলা কোর কমিটির চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা বলেন, “নেতা-কর্মীদের সাবধানে সতর্কভাবে চলাফেরা করতে বলা হয়েছে। বিরোধীরা নানা ভাবে অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছে। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে উন্নয়ন দিয়ে অশান্তির মোকাবিলা করব।”

শাসক দল সূত্রের খবর, জামবনি ব্লক কমিটির সদস্য চন্দন তো বুঝতে পেরেছিলেন, তিনি ক্রমশ টার্গেট হয়ে উঠছেন। তাই দলের অন্দরে ‘ডেলি প্যাসেঞ্জার’ নেতা (প্রতিদিন ঝাড়গ্রাম শহর থেকে যেতেন দুবড়ার দলীয় কার্যালয়ে) হিসাবে পরিচিত চন্দন সেই মতো সতর্কতাও নিচ্ছিলেন। নিহত নেতার ঘনিষ্ঠেরা জানিয়েছেন, ইদানীং নির্জন রাস্তা ব্যবহার করতেন না চন্দন। সত্যারডিহি হয়ে কন্যাডোবা যাওয়ার মোরাম রাস্তাটি সবচেয়ে নির্জন। অথচ মঙ্গলবার সকালে সত্যারডিহি এলাকার মোরাম রাস্তার ধারে ধান জমিতে পড়েছিল দেহ।

চন্দনের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে পুলিশের অনুমান, সোমবার রাতে দুবড়া থেকে ঝাড়গ্রামে ফেরার সময় মাঝপথে চন্দনকে অপহরণ করা হয়েছিল। অন্য কোনও গাড়িতে তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

দুবড়া এলাকায় পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচন নিয়ে গোলমাল ছিল। তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের ফলে এই খুন বলে অভিযোগ বিরোধীদেরও। যদিও তদন্তের জাল গোটাতে গিয়ে বেশ কয়েকটি বিষয় তদন্তকারীদের ভাবাচ্ছে। চন্দনের রাজনীতির সূচনা হয়েছিল আদিবাসী-মূলবাসী রাজনীতি কেন্দ্রিক ঝাড়খণ্ড পার্টির নেতা প্রয়াত বাবু বসুর হাত ধরে। ফলে জনজাতি শ্রেণির সঙ্গে চন্দনের সুসম্পর্ক ছিলই।

রাজ্যে পালাবদলের কয়েক মাস পর চন্দনের রাজনৈতিক গুরু বাবু বসুর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই ঝাড়গ্রামের দহিজুড়ি বাজার এলাকায় ভরসন্ধ্যায় তাঁকে খুন করেছিল দুষ্কৃতীরা। চন্দন অবশ্য তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন ‘পরিবর্তনের’ আগেই। রাজনীতির গোড়ার পাঠের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে চন্দন দুবড়ায় রাজনৈতিক ক্ষমতার শিকড় গেড়েছিলেন, যে তার ধারে পাশে শাসক কিংবা বিরোধী দলের কোনও নেতাই ছিলেন না। হয়তো নেহাতই ঘটনাচক্র। কিন্তু সোমবার জামবনি ব্লকের চিল্কিগড় ও চিচিড়ার মতো গ্রাম পঞ্চায়েত গুলিতে প্রধান নির্বাচনে তৃণমূলের একাংশ ও বিরোধীদের গোপন সমঝোতার অভিযোগ উঠেছিল শাসকদলের অন্দরেই। ঠিক ওই রাতেই নিখোঁজ হন চন্দন। সূত্রের খবর, রাজ্যের প্রশাসনিক মহল থেকে পুলিশের কাছে বার্তা এসেছে, তাড়াহুড়ো করে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে। সাবধানের মার নেই—এই নীতিতে এগোচ্ছে পুলিশও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Leader Surveillance TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE