Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
স্কুল-কলেজে মাদক মুক্তিতে লক্ষ্মণরেখা

নেশায় নীল গণ্ডি

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, স্কুল-কলেজ সহ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস এবং ক্যাম্পাসের আশপাশে ২০০ গজের মধ্যে কোনওরকম নেশা জাতীয় সামগ্রী বিক্রি এবং তার দোকান রাখা যাবে না বলে সরকারি নির্দেশিকা রয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:১৩
Share: Save:

স্কুল-কলেজ সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চত্বরও তার সংলগ্ন এলাকা ধূমপান মুক্ত করতে সরকারি বিধি নিষেধ রয়েছে। এবিষয়ে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের তরফে স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের সচেতনতায় নিয়মিত শিবিরও হয়ে থাকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও শহর ও গ্রামীণ এলাকায় বেশিরভাগ স্কুল-কলেজ চত্বর ও আশপাশের নিয়মের তোয়াক্কা না করেই চলছে ধুমপান। পাশাপাশি নিয়ম ভেঙে সিগারেট-বিড়ি বা গুটখা জাতীয় সামগ্রী বিক্রির অভিযোগও রয়েছে। বাধ্য হয়ে এ বার কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে প্রশাসন। সেইমতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চত্বরে ও সংলগ্ন এলাকায় ধুমপান ও দোকানে নেশার সামগ্রী বিক্রি বন্ধে চালু হচ্ছে সীমারেখা ‘ব্লু-লাইন’।

নির্দেশিকা অমান্য করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম দাস বলেন, ‘‘সরকারি নিয়মানুযায়ী স্কুল-কলেজের ২০০ গজের মধ্যে যাতে কোনও নেশার সামগ্রীর দোকান না থাকে সে জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এর জন্য স্কুল-কলেজের ক্যাম্পাসের বাইরে ২০০ গজ দূরত্ব চিহ্নিত করে ‘ব্লু-লাইন’ টেনে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও শিক্ষা দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

পার্থপ্রতিম জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসের বাইরে ৫০০ মিটার দূরত্বে মদ বা মাদকজাতীয় সামগ্রী বিক্রির দোকান করা যাবে না বলে সরকারি নিয়ম রয়েছে। নিয়ম ভাঙলে আবগারি দফতর ও পুলিশের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে ২০০ গজের মধ্যে তামাক জাতীয় সামগ্রীর দোকান থাকা চলবে না বলে নির্দেশিকা রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির সংলগ্ন এলাকায় যাতে এধরনের কোনও সামগ্রী বিক্রি না হয় সেজন্য কিছু পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সেই লক্ষ্যে স্কুল-কলেজের আশপাশে দোকানে ধূমপান সামগ্রী বিক্রি বন্ধ করতে নির্দিষ্ট এলাকা চিহ্নিত করে ‘ব্লু-লাইন’ বা সীমারেখা দেওয়া হবে। যাতে ওই সীমারেখার মধ্যে কোনও দোকানে ধুমপান সামগ্রী বিক্রি না হয়। কিন্তু শুধুমাত্র ব্লু-লাইন দিয়ে কি স্কুল-কলেজের ক্যাম্পাস ধূমপান মুক্ত করা যাবে?

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘স্কুল-কলেজ ক্যাম্পাস ও সংলগ্ন ২০০ গজের মধ্যে ধূমপান সামগ্রীর দোকান থাকা চলবে না নিয়ম রয়েছে। ধুমপান ও মাদকদ্রবের কুফল নিয়ে পড়ুয়াদের সচেতন করতে স্কুল-কলেজে শিবিরও করা হয়। কেউ নিয়ম ভাঙলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’’

প্রসঙ্গত, বছর চারেক আগে ধুমপান মুক্ত ক্যাম্পাস গড়ে নজির দেখিয়েছিল ময়না কলেজ। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কালীপদ মাইতি বলেন, ‘‘ধুমপান মুক্ত ক্যাম্পাস গড়তে কলেজের এনএসএস (ন্যাশনাল সার্ভিস স্কিম) বিভাগের পড়ুয়ারা মিলে প্রথম প্রচার শুরু করে। এর পর কলেজে যে সব পড়ুয়া ও শিক্ষক ধুমপান করতেন তাঁদের বোঝানো হয়। কলেজের ক্যান্টিন থেকে শুরু করে সমস্ত জায়গাতেই ধুমপান নিষিদ্ধ করা হয়। কলেজ সংলগ্ন এলাকায় দোকানদারদের নেশার সামগ্রী বিক্রি বন্ধ করার আবেদন জানানো হয়। তার সুফল হিসাবে বর্তমানে কলেজ ক্যাম্পাস ধুমপানমুক্ত। তবে এ বার ক্যাম্পাসের বাইরে ‘ব্লু-লাইন’ দিয়ে নেশা-মাদক দ্রব্যের বিক্রি বন্ধের এই পদক্ষেপ খুবই সময়োপযোগী এবং কার্যকরী।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE