Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

কাজে ঢিলে, দিঘার পথে নিত্য নাকাল

সমুদ্র সৈকত দিঘায় পর্যটকদের পৌঁছতে হয় এই সড়ক ধরেই। পুজোয় এবং পুজোর পর থেকে দিঘায় পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। ফলে বাড়ছে গাড়ির সংখ্যাও।

থমকে: জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ। নন্দকুমারের কাছে। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র।

থমকে: জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ। নন্দকুমারের কাছে। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৮ ০০:৪১
Share: Save:

সমুদ্র সৈকত দিঘায় পর্যটকদের পৌঁছতে হয় এই সড়ক ধরেই। পুজোয় এবং পুজোর পর থেকে দিঘায় পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে। ফলে বাড়ছে গাড়ির সংখ্যাও। পর্যটকদের সুবিধার দিকে লক্ষ্য রেখে কলকাতা থেকে নন্দকুমার হয়ে দিঘাগামী ব্যস্ত এই রাজ্য সড়ককে জাতীয় সড়কের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে কয়েক বছর আগেই।

হলদিয়া শিল্পাঞ্চল থেকে মেচেদাগামী ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে নন্দকুমার শ্রীধরপুর মোড় থেকে ওড়িশার জলেশ্বর পর্যন্ত ৯১ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তা এখন ১১৬ বি জাতীয় সড়ক। জাতীয় সড়কের স্বীকৃতি মেলার পর অপ্রশস্ত ওই রাজ্য সড়ক সম্প্রসারণে উদ্যোগী হয় প্রশাসন।

সড়ক সম্প্রসারণের জন্য নন্দকুমার থেকে নরঘাট বাজার ও চণ্ডীপুর বাজার-সহ একাধিক জায়গায় দোকানপাট সরানো হয়েছে ইতিমধ্যেই। রাস্তার দু’ধারে গাছ কেটে সাফ করা হয়েছে। প্রথম দফায় নন্দকুমার থেকে বাজকুল পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার এবং নাচিন্দা থেকে পিছাবনি পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার অংশের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু গত বছর সেপ্টেম্বর মাস থেকে নন্দকুমার থেকে বাজকুল পর্যন্ত সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চললেও তা খুব ঢিমেতালে চলছে বলে অভিযোগ। ফলে নন্দকুমার শ্রীধরপুর মোড় থেকে নরঘাট সেতু পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার পুরনো সড়ক ধরেই গাড়ি যাতায়াত করছে। এই রাস্তার দু’পাশ অপেক্ষাকৃত নিচু হওয়ায় গাড়ি চালানো বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে বলে যানচালকদের অভিযোগ। বস্তুত, ওই রাস্তার দু’পাশে কোনও জায়গা না থাকায় পথচারী, সাইকেল, মোটরসাইকেল চালকদের প্রাণ হাতে করে যাতায়াত করতে হচ্ছে। দুর্ঘটনা ঘটছে অহরহ। সম্প্রতি দুর্গাপুজোর সময় নরঘাটের কাছে বনভেড়া গ্রামের কাছে বাসের ধাক্কায় এক মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়।

শুক্রবার সকালে গিয়ে দেখা গেল, নন্দকুমার থেকে নরঘাট পর্যন্ত সড়কের তিন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে রাস্তার কাজ চলছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুর্গাপুজোর আগে থেকে কাজ বন্ধ ছিল। পুজোর পর সবে কাজ শুরু হয়েছে। বনভেড়া বাসিন্দা ভ্যানচালক শেখ রাকিবুলের অভিযোগ, ‘‘প্রথমদিকে জোরকদমে রাস্তার কাজ চললেও কয়েক মাস ধরে দেখেছি কাজের গতি একেবারেই কমে গিয়েছে। পুরনো রাস্তার একাংশ দিয়ে দু’দিকের গাড়ি চলাচল করছে বিপজ্জনক ভাবে। সন্ধ্যার পরে অন্ধকারে গাড়ি চালানোই খুব সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। টর্চের আলো জ্বেলে যাতায়াত করতে হচ্ছে।’’

নন্দকুমার থানার এক পুলিশ কর্তা জানান, পুরনো সড়কের পিচের অংশ ছাড়া দু’পাশে কোনও জায়গা নেই। ফলে দ্বিমুখী গাড়ি চলাচলে খুবই সমস্যা হচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে দিন-রাত যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। শীতের মরসুমে দিঘামুখী পর্যটকদের গাড়ির ভিড় আরও বাড়বে। কী ভাবে সামাল দেওয়া যাবে তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

রাজ্য পূর্ত দফতরের (জাতীয় সড়ক বিভাগ-২) নির্বাহী বাস্তুকার তরুণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সড়কের পাশে পানীয় জলের পাইপলাইন স্থানান্তরের জন্য কাজে কিছুটা দেরি হয়েছিল। তার পর পুজোর জন্য কিছুদিন কাজ বন্ধ থাকলেও ফের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী মার্চ মাসের মধ্যে ২৮ কিলোমিটার অংশের কাজ শেষ হয়ে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Digha Tourist দিঘা
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE