Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ঘাগড়ায় পর্যটক আছেন, ব্যবস্থা নেই

এই নির্জন এলাকায় পর্যটকদের জন্য বসার জায়গা, শৌচালয়, পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। এ নিয়ে ঝাড়গ্রামের পর্যটন সংস্থাগুলি বহু বার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ঝাড়গ্রামের এক বেসরকারি পর্যটন সংস্থার কর্তা সুমিত দত্ত জানান, এই সব বন্দোবস্ত না থাকায় পর্যটকেরা, বিশেষত মহিলারা খুব সমস্যায় পড়েন।

অপরূপ: ঘাগড়ার জলপ্রপাতের এই সৌন্দর্য দেখতেই ভিড় জমান পর্যটকেরা। নিজস্ব চিত্র

অপরূপ: ঘাগড়ার জলপ্রপাতের এই সৌন্দর্য দেখতেই ভিড় জমান পর্যটকেরা। নিজস্ব চিত্র

কিংশুক গুপ্ত
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:২৬
Share: Save:

পর্যটকদের জন্য দরকার পরিকাঠামোর। প্রয়োজন পার্কিং, শৌচালয়, পরিস্রুত পানীয় জলের। কিন্তু বনভূমিতে নির্মাণে আপত্তি রয়েছে বন দফতরের। ফলে বেলপাহাড়ির ঘাগড়ায় সব পরিকল্পনাই আপাতত বিশ বাঁও জলে।

জানা গিয়েছে, ঘাগরায় প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়তে চায় স্থানীয় প্রশাসন। সেখানে বাদ সেধেছে বন দফতরের আপত্তি। কারণ বনভূমিতে নির্মাণকাজ করতে দিতে আপত্তি রয়েছে তাদের। প্রয়োজনে সে কাজ বন দফতরই করবে। যদিও কবে সে কাজ হবে, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ফলে ঘাগরায় বেড়াতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন পর্যটকেরা।

বেলপাহাড়ি ব্লক সদর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে ঘাগরা জলপ্রপাত। ঝর্নার জল আছড়ে পড়ে পাথুরে এলাকার উপর। সেই ধাক্কায় পাথরের মধ্যে ছোট-বড় খাদ ও গহ্বর হয়ে গিয়েছে। সেই সৌন্দর্যই পর্যটকদের আকর্ষণ করে। তবে শীতকালে জল কার্যত থাকে না। তবুও প্রকৃতির টানে সারা বছরই ঘাগরায় যান পর্যটকেরা। এখানে বেশ কয়েকটি সিনেমার শ্যুটিং হয়েছে। ঘাগরাকে ঘিরে রয়েছে লোককথাও। শোনা যায়, বেলপাহাড়ির নীলকর সাহেব ফ্রেডরিক রাইজ ঘোড়ায় চড়ে জঙ্গলভ্রমণের সময় ঘাগরা এলাকাটি খুঁজে পেয়েছিলেন। এর পর থেকে ইংরেজরা এখানে চড়ুইভাতি করতেন।

তবে সমস্যা হল, এই নির্জন এলাকায় পর্যটকদের জন্য বসার জায়গা, শৌচালয়, পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। এ নিয়ে ঝাড়গ্রামের পর্যটন সংস্থাগুলি বহু বার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ঝাড়গ্রামের এক বেসরকারি পর্যটন সংস্থার কর্তা সুমিত দত্ত জানান, এই সব বন্দোবস্ত না থাকায় পর্যটকেরা, বিশেষত মহিলারা খুব সমস্যায় পড়েন। অনেকে পিকনিক করতে গেলেও ভরসা কেবল স্থানীয় টিউবওয়েলের জল। হ্যান্ড পাম্প করে জল তুলতে হয় সেখানে। তবে সেই জলে আয়রনের গন্ধ। বেলপাহাড়ির বিডিও সন্তু তরফদার বলেন, “পর্যটন সংস্থাগুলির আবেদনের ভিত্তিতে ঘাগরার টিলা সংলগ্ন ফাঁকা সমতল জায়গায় পর্যটকদের বসার জায়গা, শৌচালয়, পানীয় জল প্রকল্প, শিশুদের পার্ক, গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা তৈরির কথা ভাবা হয়েছিল। কিন্তু বন দফতরের অনুমতি মেলেনি।” বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী কংগ্রেসের সদস্য সুব্রত ভট্টাচার্যের দাবি, “ঘাগরার যে জায়গাটিতে পর্যটকদের জন্য পরিকাঠামো গড়ে তোলার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সেটি বনভূমি হলেও ওই জমিতে কোনও গাছ নেই। তাই জনস্বার্থে ওখানে ন্যূনতম পর্যটন পরিকাঠামো গড়ে তোলা দরকার।” এ বিষয়ে ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হলেইচ্চি জানান, শুধু ঘাগরা নয়, বেলপাহাড়ির বনভূমি এলাকার দর্শনীয় স্থানগুলিকে নিয়ে ট্যুরিজম সার্কিট গড়ে তোলার জন্য জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ শুরু হবে। তবে তাঁর সাফ কথা, “প্রকৃতিকে অক্ষুণ্ণ রেখেই উন্নয়নের কাজ হবে।” তবে যত দিন কাজ না হচ্ছে, তত দিন ভোগান্তি চলবে, আশঙ্কা পর্যটকদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ghagra Waterfalls Tourists
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE