দিঘায় এই বেলুনই এখন মাথাব্যথার কারণ। নিজস্ব চিত্র
সমুদ্রের জলে ভাসছে হলুদ রঙের বড় বড় বেশ কয়েকটি বেলুন। তার মধ্যে একটিতে চড়ে বসেছেন কয়েকজন পর্যটক। আর জলে দাঁড়িয়েই অন্য একটি বেলুন ধরে টানাটানি করছেন আরও কয়েকজন পর্যটক।
পর্যটকেরা যাতে গভীর সমুদ্রে চলে না যান, সে জন্য সমুদ্রে হলুদ রঙের বেলুন ভাসিয়ে কয়েকদিন আগেই সীমানা নির্ধারিত করেছিল জেল প্রশাসন। অভিযোগ, ওই ভাসমান বেলুনগুলিই এখন কিছু পর্যটকেদের ‘খেলা’র বস্তুতে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ‘ডু নট ক্রস দ্য লাইন’ লেখা ২০ ফুট লম্বা বেলুনগুলি সমুদ্রের ঢেউয়ে একেবারে সৈকতের কাছে চলে আসছে। ফলে সমুদ্রে স্নান করতে নামা পর্যটকেরা সেগুলিকে হাতের কাছে পেয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ ওই বেলুনেই উঠে পড়ছেন। আবার কেউ সেগুলিকে আঁকড়ে ধরে জলে ভেসে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এতেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে পুলিশ এবং প্রশাসন। তাদের বক্তব্য, অনেক পর্যটকেই সাঁতার জানেন না। তাই বেলুন থেকে জলে পড়ে পর্যটকদের তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে।
প্রশাসনের ওই আশঙ্কা অবশ্য অমূলক নয়। কারণ, কয়েক বছর আগেও দিঘার সৈকতে অনেকেই টিউব ব্যবসা করতেন। বড় মাপের ওই টিউবগুলি পর্যটকরা ভাড়া নিয়ে সমুদ্রে গিয়ে তাতে ভেসে থাকার চেষ্টা করতেন। এমনটা করতে গিয়ে একবার টিউব থেকে পড়ে এক পর্যটক সমুদ্রে তলিয়ে গিয়েছিলেন। তারপর থেকে জেলা প্রশাসন দিঘার সৈকতে টিউবের ব্যবসা বা ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু পর্যটকেরা তাঁদের নিরাপত্তার জন্য রাখা বেলুনকে টিউবের মতো ব্যবহার করায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা ফিরে আসছে।
মুর্শিদাবাদের বহরমপুর থেকে দিঘায় বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে এসেছেন সফিউল বিশ্বাস। নিউ দিঘার ঘাটে স্নান করতে নেমে তাঁর বন্ধুরা ওই হলুদ বেলুনের উপর চেপে বসেছিলেন। সফিউলের যুক্তি, ‘‘পর্যটন দফতরের উচিত বেলুনগুলি স্থায়ীভাবে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে লাগানো হোক। তা না হলে একেবারে তুলে নিক।’’
এ ব্যাপারে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পর্যটন দফতরের দাবি, ওই বেলুনগুলি পরীক্ষামূলকভাবে সমুদ্রে নামানো হয়েছে। পরে স্থায়ীভাবে লাগানো হবে। তখন এই সমস্যা থাকবে না। তবে পর্যটকদের বেলুন নিয়ে খেলায় নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ এবং প্রশাসন।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে আমরা জেনেছি। এ নিয়ে ইতিমধ্যে নুলিয়াদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বিষয়টি জেলা পর্যটন দফতরকেও জানানো হচ্ছে।’’
বিষয়টি নিয়ে ‘দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদে’র চেয়ারম্যান শিশির অধিকারী বলেন, “পর্যটকদের নিরাপত্তা এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। তা ছাড়া টেকনিক্যাল দিকও রয়েছে। সমুদ্র বিজ্ঞানী ও অন্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিষয়টি দেখার জন্য আমরা জেলা পর্যটন দফতরকে জানাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy