Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সবুজ রেখেই ঝাড়গ্রাম আদালত গড়ার আবেদন

জেলা আদালত তৈরির জন্যও কি কাটতে হবে শালগাছ! ঝাড়গ্রাম জেলা আদালত ভবন তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হতেই এমন জল্পনা শুরু হয়েছে। চিন্তিত পরিবেশ কর্মীরা। জেলা প্রশাসনের অবশ্য আশ্বাস, কাটা হলে তার পরিবর্তে অনেক গাছ লাগানো হবে। 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৮ ০১:০৫
Share: Save:

জেলা আদালত তৈরির জন্যও কি কাটতে হবে শালগাছ! ঝাড়গ্রাম জেলা আদালত ভবন তৈরির প্রক্রিয়া শুরু হতেই এমন জল্পনা শুরু হয়েছে। চিন্তিত পরিবেশ কর্মীরা। জেলা প্রশাসনের অবশ্য আশ্বাস, কাটা হলে তার পরিবর্তে অনেক গাছ লাগানো হবে।

মহকুমা আদালত চত্বরে ২৫ হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে আটতলা জেলা আদালত ভবন তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওই এলাকায় রয়েছে বেশ কিছু পুরনো শালগাছ। পূর্ত দফতরের আমলারা মানছেন, ভবনটি পরিকল্পনা মাফিক যথাযথ ভাবে তৈরি করতে গেলে অনেক গাছ কাটতে হবে। ঝাড়গ্রামের পরিবেশকর্মীরা অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা গাছ কাটার বিরোধিতা করবেন। সবুজ ধ্বংস তাঁরা মেনে নেবেন না। ‘ঝাড়গ্রাম নাগরিক উদ্যোগ’-এর আহ্বায়ক শ্রীমন্ত রাউত বলছেন, “ঝাড়গ্রাম জেলার পরিকাঠামোর উন্নয়ন-কাজকে আমরা সব সময়ই স্বাগত জানাই। বিচারপ্রার্থীদের কাছে আইন বিভাগের পরিষেবা আরও সুষ্ঠু ভাবে পৌঁছে দেওয়ার স্বার্থে জেলা আদালত চালুর সিদ্ধান্তকেও স্বাগত জানাচ্ছি। তবে ঝাড়গ্রামের অবশিষ্ট সবুজক রক্ষা করেই পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ হোক।” মাসখানেক আগে প্রশাসনিক মহলে স্মারকলিপি দিয়ে শহরের সবুজ রক্ষার আবেদন জানিয়েছিলেন শ্রীমন্তবাবুরা। গাছ বাঁচাতে নিয়মিত পোস্টার সাঁটিয়ে, নানা কর্মসূচি করে প্রশাসনের উপর চাপ বাড়াচ্ছেন তাঁরা। শ্রীমন্তবাবু জানান, আদালত চত্বরের পুরনো গাছগুলির ভবিষ্যৎ জানতে চেয়ে ফের প্রশাসনিক মহলে স্মারকলিপি

দেওয়া হবে।

এমনিতেই ঝাড়গ্রাম শহরে বিভিন্ন সরকারি পরিকাঠামো গড়তে গিয়ে কয়েক হাজার শালগাছ কেটে ফেলা হয়েছে। টাটা-খড়্গপুর শাখায় রেলের তৃতীয় লাইন বসানোর জন্য শাল ও অন্য আরও বেশ কয়েক হাজার গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। শহরের সুবজ বাঁচাতে নাগরিকদের উদ্যোগে গঠিত হয়েছে নাগরিক উদ্যোগ। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে স্মারকলিপি দিয়ে শহরের অবশিষ্ট গাছগুলিকে রক্ষার আবেদন করেছেন নাগরিকেরা। সাঁওতালি পিটিটিআই তৈরির জন্য দেড়শো শালগাছ কাটার প্রস্তাব দিয়েছিল পূর্তদফতর। নাগরিক উদ্যোগের আপত্তিতে আপাতত গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে পিছিয়ে গিয়েছে পূর্তদফতর।

প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, ১৯২২ সালে বন-জঙ্গল কেটেই তৈরি হয়েছিল সরকারি অফিস ও আদালত। মহকুমা আদালত চত্বরের মধ্যে জেলা আদালত তৈরি হলে বিচারপ্রার্থীদের সুবিধা হবে। সেই কারণেই মহকুমা আদালত চত্বরের পিছনে বিস্তীর্ণ জায়গায় জেলা আদালত ভবন, বিচারকদের আবাসন, গাড়ি যাতায়াতের রাস্তাঘাট তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। কয়েকদিন আগে কলকাতা হাইকোর্টের দুই বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও প্রতীক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রস্তাবিত জায়গাটি পরিদর্শন করেন। প্রস্তাবিত জায়গাটিতে বেশ কিছু পুরনো শালগাছ দেখে বিচারপতিরা জেলাশাসকের কাছে জানতে চান, কোনও সমস্যা হবে কি-না। জেলাশাসক ওই দিন দুই বিচারপতিকে জানান, বন দফতরের সম্মতি নিয়ে পদ্ধতি মাফিক জায়গাটি নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, “যতটা সম্ভব গাছের ক্ষতি না করে প্রকল্প রূপায়ণ করা হবে। গাছ কাটা হলে একটা গাছের পরিবর্তে আরও অনেক গাছ লাগানো হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tree Cutting Jhargram Jhargram Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE