সাড়ম্বরে: বইমেলার সূচনায় শোভাযাত্রা। গোয়ালতোড়ে। নিজস্ব চিত্র
‘মিশন ২০২৫: একশো বছরে অলচিকি, একশো শতাংশ অলচিকি’— এই স্লোগানকে সামনে রেখে গোয়ালতোড়ে শুরু হল সাঁওতালি বইমেলা। সোমবার দুপুরে ধামসা-মাদলের বোলে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় বইমেলার সূচনা হয়। সন্ধ্যায় গোয়ালতোড় হাইস্কুল মাঠে বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বাঁকুড়া জেলার রাষ্ট্রীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সাঁওতালি শিক্ষক গোরাচাঁদ মুর্মু। ছিলেন অন্য অতিথিরাও।
গোয়ালতোড় সিদো-কানহো হুল গাঁওতার পরিচালনায় এই সাঁওতালি বইমেলা এ বার তৃতীয় বর্ষে পড়ল। বইমেলা কমিটির সভাপতি চুনকা মুর্মু বলেন, ‘‘মেলা চলবে পাঁচদিন ধরে। সাঁওতালি সাহিত্য প্রকাশনা ও পত্রপত্রিকার ৪৮টি স্টল থাকছে মেলায়। আদিবাসী সংস্কৃতির নানান সরঞ্জামেরও স্টল রয়েছে। মূল মঞ্চে প্রতিদিন সাঁওতালি সাহিত্যভাবনা নিয়ে আলোচনা, বই-পত্রপত্রিকা প্রকাশ অনুষ্ঠান রয়েছে।’’ এ দিন দুপুরে ‘মিশন ২০২৫: একশো বছরে অলচিকি, একশো শতাংশ অলচিকি’ স্লোগান লেখা ব্যানার নিয়ে শোভাযাত্রা বেরোয়। ধামসা, মাদল বাজিয়ে তাতে পা মেলান গোয়ালতোড়ের আদিবাসী পুরুষ-মহিলা, স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। গোয়ালতোড় হাইস্কুল মাঠে চলছে মেলা। এ দিন উদ্বোধনী মঞ্চে প্রকাশিত হয়েছে বইমেলা কমিটির একটি স্মরণিকা।
এ বারের বইমেলার থিম অলচিকি হরফের একশো বছরে একশো শতাংশ অলচিকি হরফ প্রয়োগ। উদ্যোক্তারা জানালেন, একশো বছর আগে পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু অলচিকি হরফের প্রবর্তন করেছিলেন। কিন্তু এখনও সাঁওতাল সম্প্রদায়ের বহু মানুষ অলচিকি হরফ জানেন না। অনেকে পড়তেও পারেন না। তাই ২০২৫ সালের মধ্যে সাঁওতাল সম্প্রদায়ের একশো শতাংশ মানুষ যাতে অলচিকি লিপি জেনে লেখাপড়া করতে পারে তার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। সাঁওতালি বইমেলাতেও সেই বার্তাই দেওয়া হচ্ছে। সাঁওতালি ভাষার সাহিত্যিক খেরওয়াল সরেন, যদুমণি বেসরা গোয়ালতোড়ে সাঁওতালি বইমেলায় এসে বলেন, ‘‘সাঁওতালি সাহিত্য এখন অনেক সমৃদ্ধ। সাঁওতালিতে এখন অনেক বই, পত্রপত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যেও সাহিত্যচর্চা বাড়ছে।’’
বইমেলায় পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ড রাজ্যের সাঁওতালি সাহিত্য প্রকাশনা সংস্থার স্টল রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বর্ধমান, উত্তর ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুরের একাধিক স্টল। পুরুলিয়ার সুটু বুক স্টল, বাঁকুড়ার এসটি পাবলিকেশন সাঁওতালি বই, পুস্তিকার সম্ভার নিয়ে এসেছেন গোয়ালতোড়ে। যদু হেমব্রম, মঙ্গল হাঁসদা-সহ কয়েকজন স্টল মালিক বলেন, ‘‘গতবারও এসেছিলাম। বই বিক্রি ভালই হয়েছিল। এ বার মনে হচ্ছে বিক্রি বাড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy