Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

নাম-ঠিকানাহীন রোগীকে নিয়ে আতান্তরে হাসপাতাল

কখনও চিকিৎসকের দিকে তেড়ে যাচ্ছেন, তো কখনও রোগীর মুখে চাপা দিয়ে দিচ্ছেন গামছা। এক রোগীর এমনই নানা কাণ্ডে সমস্যায় পড়েছেন ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স থেকে শুরু করে রোগী এবং তাঁদের পরিজনেরা।

অজ্ঞাতপরিচয়: ঘাটাল হাসপাতালের শয্যায় সেই যুবক। নিজস্ব চিত্র

অজ্ঞাতপরিচয়: ঘাটাল হাসপাতালের শয্যায় সেই যুবক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৮ ০০:২৬
Share: Save:

কখনও চিকিৎসকের দিকে তেড়ে যাচ্ছেন, তো কখনও রোগীর মুখে চাপা দিয়ে দিচ্ছেন গামছা। এক রোগীর এমনই নানা কাণ্ডে সমস্যায় পড়েছেন ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স থেকে শুরু করে রোগী এবং তাঁদের পরিজনেরা।

দিন পনেরো আগে ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে ভর্তি এক হিন্দিভাষী রোগীকে নিয়ে বিপদে পড়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। নাম-ঠিকানা ভুলে যাওয়ায় ওই রোগীর বাড়ির সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারছেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অবস্থা বেগতিক দেখে সবটা তাঁরা পুলিশকে জানিয়েছেন। ঘাটাল হাসপাতালের সুপার কুণাল মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “আমরা যতই নাস্তানাবুদ হই, কর্তব্য তো আর ভুলতে পারি না। যত দ্রুত সম্ভব ওঁকে সুস্থ করে বাড়ির ঠিকানা জেনে সেখানে ফেরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।” ঘাটালের মহকুমা পুলিশ অফিসার কল্যাণ সরকার জানান, ওই যুবকের নাম-ঠিকানা জানার চেষ্টা চলছে। পুলিশের তরফে মাঝেমধ্যে হাসপাতালে গিয়ে ওই যুবকের সঙ্গে কথাও বলা হচ্ছে।

গত ২১ জুলাই ক্ষীরপাই গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে ‘রেফার’ হয়ে ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল বছর চব্বিশের এই যুবক। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই দিন সকালে চন্দ্রকোনা থানার মদনচকে অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন যুবক তাকে বেধড়ক মারধর করে। গুরুতর আহত ওই যুবককে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। দিন সাতেক টানা চিকিৎসার পরে তিনি এখন শারীরিক ভাবে পুরোপুরি সুস্থ। কিন্তু মানসিক ভাবে অসুস্থ। ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সার্জিক্যাল ওয়ার্ডের একটি শয্যাই আপাতত তাঁর ঠিকানা পরনে পোশাক বলতে গামছা। এই হাসপাতালে মনোরোগের চিকিৎসার আলাদা বন্দোবস্ত নেই। তবু চিকিৎসক, নার্সরা ওই যুবকের সমস্যা বোঝার চেষ্টা করছেন।

হাসপাতালের এক চিকিৎসক জয়ন্ত শাসমল বললেন, “আমি ওয়ার্ডে গেলে নিয়ম করে ওঁর সঙ্গে কথা বলি। কিন্তু নাম-ঠিকানা বলতে পারেননি। তবে মেজাজ ভাল থাকলে সিনেমা দেখতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বায়না করেন।” এক নার্সের কাছে আবার মোবাইলও চেয়েছিলেন যুবকটি। ওই নার্সের কথায়, “আমি মোবাইল দিতেই কানে নিয়ে এক মহিলার নাম করে হ্যালো হ্যালো বলে চেঁচিয়ে ওঠেন। তারপর একমুখ হেসে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।”

তবে সে সব সূত্র ধরেও যুবকের নাম, ঠিকানা জানা যায়নি। ফলে, সমস্যাও এখনও মেটেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Patient Ghatal Super Speciality Hospital Treatment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE