Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
এখনও অধরা মূল অভিযুক্ত

পাঁশকুড়ায় ঠিকাকর্মী খুনে গ্রেফতার দুই অভিযুক্ত

পাঁশকুড়ায় ঠিকা কর্মীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগের ঘটনায় দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে শেখ নজরুল ও শেখ রেজ্জাক নামে ওই দুই অভিযুক্তকে ধরা হয়। ধৃতদের বুধবার তমলুক আদলতে তোলা হলে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়।

নিহত সেরাফতের পরিজনদের সঙ্গে জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। পার্থপ্রতিম দাসের তোলা ছবি।

নিহত সেরাফতের পরিজনদের সঙ্গে জয় বন্দ্যোপাধ্যায়। পার্থপ্রতিম দাসের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৫ ০০:৪৬
Share: Save:

পাঁশকুড়ায় ঠিকা কর্মীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগের ঘটনায় দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে শেখ নজরুল ও শেখ রেজ্জাক নামে ওই দুই অভিযুক্তকে ধরা হয়। ধৃতদের বুধবার তমলুক আদলতে তোলা হলে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁশকুড়ার রানীহাটির বাসিন্দা আসরফ আলি হায়দরাবাদে পাথরের কাজের ঠিকাদারি করতেন। আসরফের অধীনে কাজ করতেন পাঁশকুড়ার বাসিন্দা যুবক শেখ সেরাফত। সেরাফত বাড়ির জন্য অগ্রিম পাঁচ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই টাকা আর ফেরত দেননি বলে অভিযোগ। টাকা দিতে না পারায় পাঁশকুড়ার বাড়িতে আসা সেরাফত গত শুক্রবার সকালে আত্মীয় বাড়ি যাওয়ার পথে আসরফ ও তাঁর সঙ্গীরা তাঁকে রানীহাটিতে একটি ক্লাবের ঘরে আটকে রেখে মারধর করে বলে অভিযোগ। সেখান থেকে কিছু দুরে পাঁশকুড়ার সুরনানকার এলাকায় সেরাফতকে দগ্ধ অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা।

সেরাফতকে পুড়িয়ে খুনের অভিযোগে ঠিকাদার আসরফ আলি, স্থানীয় ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সৈয়দ আমজেদ আলির সৈয়দ পিন্টু সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে পাঁশকুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সেরাফতের স্ত্রী। সেরফাতকে পুড়িয়ে ঘটনায় মূল অভিযুক্তরা অধরা থাকায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শেখ নজরুল ও শেখ রেজ্জাককে গ্রেফতার করে। যদিও ঘটনায় মূল অভিযুক্ত আসরফ আলি এখনও গ্রেফতার হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, ওই অভিযুক্তকে ধরতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

এদিকে অভিনেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিজেপির এক প্রতিনিধি দল বুধবার বিকেলে পাঁশকুড়ার রূপদয়পুরে শেখ সেরাফতের বাড়িতে যান। সেরাফতের স্ত্রী আলেমারা বিবি, মা সায়রা বিবি, বাবা সেখ বদরুজ্জা ও দাদা মহম্মদ শরিফের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। জয় বন্দ্যোপাধ্যায় সেরাফতের পরিবারের সদস্যদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘‘আমি এখানে রাজনৈতিক নেতা হিসেবে আসিনি। আপনারা নিরপেক্ষ মানুষ। তাই আমাদের দলের নেতার সঙ্গে দেখা করার জন্য বলব না। আপনারা যদি মনে করেন রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে এই অন্যায়ের ন্যায্য বিচার চাইবেন তাহলে রাজ্যপালের সঙ্গে আপনাদের দেখা করার ব্যবস্থা করব।’’ এ দিন বিজেপি’র প্রতিনিধি দলে জয় বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও দলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তপন কর, জেলা সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দাস, জেলা কমিটির সদস্য উজ্জ্বল ভট্টাচার্য ও তমলুক পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর বিশ্বজিৎ দত্ত প্রমুখ ছিলেন।

জয়ের নেতৃত্বে বিজেপি প্রতিনিধি দল সেরাফতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর পাঁশকুড়া থানায় যান। পাঁশকুড়া থানায় তমলুকের সার্কেল ইনস্পেক্টর দেবাশিস ঘোষ ও বিদায়ী ওসি বিশ্বজিৎ হালদারের সঙ্গে দেখা করে সেরাফতের খুনের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য চার দিনের সময়সীমা দেন বিজেপি নেতৃত্ব। সেরাফতের নৃশংস খুনের বিরুদ্ধে ও ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে এলাকার বাসিন্দারা গড়ে তুলেছেন নাগরিক প্রতিবাদী মঞ্চ। এসইউসি পাঁশকুড়া লোকাল কমিটির তরফেও সেরাফতের খুনের ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানিয়ে পাঁশকুড়া থানায় স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE