Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কম্পিউটার কেন্দ্রের প্যাডে পুলিশের সিজার লিস্ট! জালে ২ যুবক

টাকা দিয়ে কম্পিউটার প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ভর্তি হয়েছিলেন। কথা ছিল, প্রশিক্ষণ শেষে মিলবে স্কুলে চাকরি। চাকরি মেলেনি। উল্টে প্রতারণার অভিযোগে ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে কম্পিউটার প্রশিক্ষণকেন্দ্রের।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলদা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

পুলিশ সিজার লিস্ট দিচ্ছে একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের লেটারপ্যাডে! সন্দেহ হতেই ফাঁস হল প্রতারিত এক যুবকের প্রতারণার পরিকল্পনা।

টাকা দিয়ে কম্পিউটার প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ভর্তি হয়েছিলেন। কথা ছিল, প্রশিক্ষণ শেষে মিলবে স্কুলে চাকরি। চাকরি মেলেনি। উল্টে প্রতারণার অভিযোগে ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে কম্পিউটার প্রশিক্ষণকেন্দ্রের। টাকা আদায় করতে পুলিশ সেজে একটি স্কুলে হাজির হলেন এক প্রতারিত। স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানালেন, কম্পিউটারগুলি বাজেয়াপ্ত করতে এসেছেন তিনি। সন্দেহ হওয়ায় স্কুল খবর দেয় পুলিশকে। তারপরই ফাঁস হয় গোটা ঘটনা।

পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতের নাম শুভজিৎ মাঝি। বেলদা থানা এলাকার কালিয়াপাড়ার বাসিন্দা শুভজিৎ সোমবার সকালে পুলিশ সেজে হাজির হয়েছিলেন ময়নাপাড়া জুনিয়র হাইস্কুলে। গাড়িতেও ছিল পুলিশের স্টিকার লাগানো। কিন্তু শুভজিৎ তো প্রতারিত হয়েছিলেন কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে দ্বারা। তা হলে তিনি স্কুলে হাজির হলেন কেন? পুলিশ সূত্রের খবর, ওই কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র শুভজিতদের জানিয়েছিল, তারা স্কুলগুলিতে কম্পিউটার ল্যাবরেটরি খুলছে। প্রশিক্ষণের পর সেখানেই চাকরি মিলবে। শুভজিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে, অন্যদের মতো তিনিও টাকা দিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে বেলদারই একটি স্কুলে কম্পিউটার শিক্ষক হিসাবে কাজ শুরু করেছিলেন। তার মধ্যে প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ্য আসে। বন্ধ হয়ে যায় সংস্থাটি। বন্ধ হয়ে যায় বেতনও। ধৃত শুভজিতের বক্তব্য, ‘‘এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা দিয়ে ভর্তি হয়ে ছিলাম। একটি স্কুলে প্রশিক্ষণের জন্য যুক্ত হই। কয়েকমাস কাজ করার পর বন্ধ হয়ে যায়। সংস্থার কাছে টাকা চেয়েও পাইনি। তাই এই পথ বেছে নিতে বাধ্য হই।’’

সংস্থায় প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুবাদে শুভজিৎ জানতেন ওই সংস্থা কোন কোন স্কুলে কম্পিউটার ল্যাবরেটরি তৈরি করেছে। স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ার সুবাদে তাঁর এটাও জানা ছিল যে, ময়নাপাড়া জুনিয়র হাইস্কুলে ওই সংস্থার তিনটি কম্পিউটার রয়েছে। তাই পুলিশ সেজে কম্পিউটারগুলি বাজেয়াপ্ত করার পরিকল্পনা করেন শুভজিৎ। সঙ্গে গাড়িচালক মানিক সিংহকে। পরিকল্পনা প্রথমে বুঝতে পারেননি স্কুল কর্তৃপক্ষ। এক এক করে তিনটি কম্পিউটার গাড়িতে তোলার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ সিজার লিস্ট চাইলে শুভজিৎ ওই কম্পিউটার সংস্থার লেটারহেডে লেখা কাগজ দেন। এতেই সন্দেহ হয় স্কুল কর্তৃপক্ষের। শুভজিৎ ও মানিককে আটকে রাখেন তাঁরা। খবর দেন পুলিশে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক শুভাশিস সামন্ত বলেন, ‘‘প্রথমে বিশ্বাস করে কম্পিউটারগুলি তুলে দিই। পরে সন্দেহ হলে পুলিশে জানাই।’’ স্কুল ওই দু’জনের নামে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছে। অভিযুক্ত গাড়ির চালক মানিক বলেন, ‘‘আমার কাছ থেকে গাড়ি ভাড়া নেয় শুভজিৎ।’’ পুলিশ দু’জনকে আটক করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE